ঘরের মাঠে আর্জেন্টিনার কাছে হারল ব্রাজিল

0
104
ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা

বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে বুধবার মারাকানায় বাংলাদেশ সময় সকালে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। এ দিন চির প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের ঘরের মাঠে গিয়ে তাদেরকে হারাতে ৬৩ মিনিটে জিওভানি লো সেলসোর কর্নার থেকে আর্জেন্টিনার হয়ে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণী গোল করেন নিকোলাস ওটামেন্ডি। তাতেই নির্ধারিত হয় ব্রাজিলের টানা তৃতীয় হার। আর খেলা গড়ানোর আগে দুই পক্ষের মারামারি, এক লালকার্ড ব্রাজিলের ক্ষতটাই কেবল বাড়িয়েছে।

ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে এ দিন বল দখলের লড়াইয়ে দুই দলই ছিল সমানে সমান। গোলমুখে সমান ৮টা করে শটও মেরেছে দুদল। তাতে আর্জেন্টিনার ২ আর ব্রাজিলের ৪ শট ছিল লক্ষ্যে। যদিও কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়েছে আর্জেন্টিনাই। ম্যাচজুড়ে ফাউল হয়েছে ৪২টি। যার ২৬টি ব্রাজিল আর ১৬টি করে আর্জেন্টিনা।

দুই দলের সমর্থকদের দাঙ্গায় কিক অফের আগেই উত্তাপ ছড়ালে দল নিয়ে বেরিয়ে যান মেসি। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর মাঠে ফেরে আর্জেন্টিনা।  গ্যালারির এই উত্তেজনার পারদ নিয়ে নেমে মাঠেও তা যেন ছড়িয়ে পড়ে। শুরুর কয়েক মিনিটে দুই দলই জড়ায় একাধিক বিবাদে, অনেকগুলো ফাউলে খেলার গতি হয় মন্থর।

তবে বল পেলেই দুই দলকে দ্রুত আক্রমণে উঠে দেখা যাচ্ছিলো। তা ছড়িয়েছে রোমাঞ্চ। প্রতিপক্ষের বক্সে গিয়ে উভয় দলের খেই হারানো আক্রমণে চলছিল ম্যাচ।

প্রথমার্ধের সবচেয়ে সুর্বণ সুযোগগুলো পায় ব্রাজিল। ৩৯ মিনিটে রাফিনিয়ার শট অল্পের জন্য বাধাগ্রস্ত হয়ে ফিরে যায় কর্নারে।  ৪৪ মিনিটে কর্নার থেকে তৈরি হওয়া আক্রমণে বক্সের ভেতর বল পান গ্যবারিয়েল মার্তিনেল্লি। তার হাফ ভলি ঢুকে যাচ্ছিল বক্সের দিকে। গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজও নাগাল পাননি। তবে তার পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা আকুনা হাঁটু দিয়ে তা প্রতিহত করে দলকে রক্ষা করেন।

বিরতির পরও একই তালে চলছিল লড়াই। প্রথমার্ধেই ২২ ফাউল হয়ে যাওয়ায় মাঠের ফুটবল ছিলো কিছুটা মলিন। ব্রাজিল এগিয়ে যেতে চেষ্টা নেয় মরিয়া, তবে আক্রমণে প্রতিপক্ষের বক্সে গিয়ে খেই হারায় তারা। ৬৩ মিনিটে সুযোগ কাজে লাগায় আর্জেন্টিনা। লো সেলসোর মারা বল বক্সের পেয়ে জটলা থেকে লাফিয়ে উঠে হেড নেন ওটামেন্ডি। দারুণ হেড জড়িয়ে যায় ব্রাজিলের জালে।

এমন উত্তেজনার ম্যাচে পিছিয়ে গিয়ে খেলার ফেরা কঠিন। গোল খেয়ে ব্রাজিল একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে চেষ্টা করে ফেরার।  রাফিনহাকে উঠিয়ে এন্দ্রিক, গ্যাব্রিয়েল জেসুজকে সরিয়ে জোয়েল্টিনকে নামান দিনিজ। বদল আনে আর্জেন্টিনাও। ৭৮ মিনিটে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান পুরো ম্যাচে অনেকটা নিষ্প্রভ লিওনেল মেসি।

৭২ মিনিটে মাঠে নেমে ৮১ মিনিটেই সরাসরি লাল কার্ড দেখেন জোয়ালিন্টন।  বল নিয়ে ছুটে চলা জোয়েলিন্টনকে পেছন থেকে হাতে টেনে ধরেন রদ্রিগো দে পল। জোয়েল্টিন হাত ছাড়িয়ে নিতে পেছনে ঘুরে দেখান প্রতিক্রিয়া। চিলির রেফারি পিয়েরো মাজা তাতেই সরাসরি লাল কার্ড দেখান ব্রাজিল ফরোয়ার্ডকে।

এই সিদ্ধান্ত না মেনে তুমুল বিবাদে জড়ায় ব্রাজিল। লম্বা সময় মাঠে থেকে তর্ক করেন জোয়েলিন্টন। পরে তাকে অবশ্য বেরুতে হয়। নির্ধারিত সময়ের বাকি ৯ ও যোগ করা ৬ মিনিট মিলিয়ে মোট ১৫ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলে ব্রাজিল। সমতা ফেরাতে অবশ্য দশ জন নিয়েই তারা যায় অলআউট আক্রমণে। তবে ফল হয়নি। আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ব্রাজিলের বাকি সব চেষ্টা নিরাপদ হাতে রুখে দেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.