গণভবনের আঙিনা থেকে তোলা হলো ৪৬ মণ পেঁয়াজ, খেতে আরও ৫০ মণ

0
170
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবন, ছবি: বাসস

গণভবন সূত্র জানায়, গণভবনে মোট চাষের প্রায় অর্ধেক জমির পেঁয়াজ গতকাল রোববার তোলা হয়েছে। এতে ফলন পাওয়া গেছে ৪৬ মণ। বাকি জমিতে আরও ৫০ মণের বেশি পেঁয়াজ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

দেশি পেঁয়াজের বর্তমান বাজারদর ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি। এই হিসাবে গণভবনে ফলন হিসেবে পাওয়া ৪৬ মণ পেঁয়াজের দাম আসে ৬৫ থেকে ৭৩ হাজার টাকা।

পাঁচজনের মধ্যবিত্ত একটি পরিবারে মাসে পাঁচ কেজি পেঁয়াজের প্রয়োজন হয় বলে ধরা যায়। এ হিসাবে গণভবনে উৎপাদিত প্রায় ১০০ মণ পেঁয়াজ দিয়ে ৭০০ থেকে ৮০০ পরিবারের এক মাসের চাহিদা পূরণ হবে।

করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞায় টালমাটাল বিশ্ব। এতে খাদ্য ও নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দেয়। এর পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর প্রায় প্রতিটি বক্তব্যে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করছেন। সরকারি-বেসরকারিসহ দলীয় সব অনুষ্ঠানে তিনি প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক খাদ্যসংকট মোকাবিলায় দেশের জনগণকে প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর আহ্বান জানিয়ে আসছেন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি নিজে গণভবন আঙিনার পতিত প্রতি ইঞ্চি জমিকে উৎপাদনের আওতায় এনেছেন। জনগণের প্রতি তাঁর যে আহ্বান, তাকে তিনি বাস্তবে রূপদান করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

ইহসানুল করিম আরও বলেন, এ দেশের আলো-হাওয়ায় বেড়ে ওঠা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত। দেশের মাটি, মানুষ ও কৃষির সঙ্গে মিশে আছে তাঁর প্রাণ। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ফসলি উঠোনে নানা ধরনের ফসলের আবাদ তারই ছোট্ট একটি দৃষ্টান্ত।

ইহসানুল করিম জানান, প্রতি ইঞ্চি জমিতে আবাদ করার বিষয়টি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের সবুজ বিপ্লবের ডাক থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন আঙিনার পতিত প্রতি ইঞ্চি জমিকে উৎপাদনের আওতায় এনেছেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন আঙিনার পতিত প্রতি ইঞ্চি জমিকে উৎপাদনের আওতায় এনেছেন
ছবি: চ্যানেল আইয়ের ভিডিও থেকে নেওয়া

সূত্র জানায়, গণভবন আঙিনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঁশফুল পোলাওয়ের চাল, লাল চালসহ বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করছেন। ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পালংশাক, ধনেপাতা, গ্রামবাংলার জনপ্রিয় বতুয়াশাক, ব্রকলি, টমেটো, লাউ, শিমসহ প্রায় সব ধরনের শীতকালীন শাকসবজি চাষ করছেন তিনি।

এ ছাড়া গণভবনে তিল, শর্ষে, শর্ষেখেতে মৌমাছি পালনের মাধ্যমে মধু আহরণ,  হলুদ, মরিচ, পেঁয়াজ, তেজপাতাসহ বিভিন্ন ধরনের মসলা চাষ করছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, বরই, ড্রাগন, স্ট্রবেরিসহ বিভিন্ন ধরনের ফল চাষ করছেন। চাষ করছেন গোলাপ, সূর্যমুখী, গাঁদা, কৃষ্ণচূড়াসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল। তিনি অবসর পেলেই এসব তদারক করেন বলে গণভবন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

ফসল ফলাতে গণভবনে গরুর খামারের গোবর থেকে উৎপাদিত জৈব সার ব্যবহার করা হয়। গণভবনের আঙিনায় আলাদা করে গরুর খামার, দেশি হাঁস-মুরগি, তিতির, চীনা হাঁস, রাজহাঁস ও কবুতরের খামার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী গণভবনের পুকুরে রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করছেন। এমনকি গণভবন পুকুরে তিনি মুক্তার চাষও করছেন। অবসর সময়ে তিনি গণভবনের লেকে মাছও ধরেন।

গণভবন সূত্র জানায়, উৎপাদিত এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের জন্য সামান্য রেখে গণভবনের কর্মচারীসহ দরিদ্র-অসহায় মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.