ক্রীড়াক্ষেত্রের উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

0
147
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ৫ আগস্ট, ছবি: পিআইডি

দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে পৃষ্ঠপোষকতা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির বিকাশের জন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতাও প্রয়োজন। পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এটি বিকশিত হতে পারে না।’

বেসরকারি খাতকে বর্তমান সরকারের উন্মুক্ত করে দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি বলব, আমাদের এখানে এখন ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংক-বিমা অনেক কিছু আমরা করে দিয়েছি। বেসরকারি খাত অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে। তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম সব জায়গায় তাঁরাই (খেলোয়াড়েরা) তুলে ধরতে পারবেন। সে ক্ষেত্রেও আপনাদের (ব্যবসায়ী/উদ্যোক্তা) এই সহযোগিতাটুকু দরকার।’

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) পুরস্কার-২০২৩ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়েরা যদি সেই এভারেস্ট বিজয় করতে পারে অথবা এত স্বল্প সুযোগের মধ্য দিয়েও খেলোয়াড়েরা ক্রীড়াক্ষেত্রে যদি এত উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখতে পারে, তাহলে এই সুনাম বাড়ানোর জন্যই দরকার পৃষ্ঠপোষকতা।’
যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমাদের ক্রীড়াবিদেরা দেশের জন্য আরও অনেক সুনাম বয়ে আনবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে, আপনারাও একজন ক্রীড়াবিদকে চাকরি দিতে পারেন বা আপনাদেরও একটা ক্রীড়া সংগঠন থাকতে পারে। বিভিন্ন প্রতিভা ছড়িয়ে আছে সারা বাংলাদেশে। সেসব প্রতিভাগুলো আপনারা কুড়িয়ে আনেন ও তাদের একটু সুযোগ করে দেন। আপনারা দেখবেন, বাংলাদেশের জন্য এরাই সবচেয়ে বেশি সুনাম বয়ে আনবে।’

প্রধানমন্ত্রী খেলোয়াড়দের পৃষ্ঠপোষকতা এবং কল্যাণ ফাউন্ডেশনে অনুদান প্রদানে সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমি জানি, আপনাদের অনেক পুরোনো খেলোয়াড় রয়েছেন; যাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন ও তাঁদের চিকিৎসার কোনো সুযোগ থাকে না। অনেকে আর্থিক সংকটেও পড়েন। কারণ, খেলাধুলা বেশি বয়স পর্যন্ত করা যায় না। কিন্তু তাঁদের পরবর্তী জীবনটা কেমন হবে, সেটাও একটা বড় কথা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যতক্ষণ আছি, দিয়ে যাচ্ছি। যাদের ঘর নাই, তাদের ফ্ল্যাট তৈরি করে দেওয়া বা জমি দেওয়া, খেলাধুলার সরঞ্জাম প্রদান বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা বা চিকিৎসা করিয়ে বিদেশ থেকে আনা—সব করে যাচ্ছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘চিরদিন তো আর আমি থাকব না, আর হয়তো এভাবে কেউ আন্তরিকতার সঙ্গে করবেও না। কাজেই তাদের ভবিষ্যৎ যাতে নির্ভার থাকে ও ভবিষ্যতে তারা ভালো কিছু করে চলতে পারে, সে জন্যই আজকে আমাদের যাঁরা বিত্তশালী আছেন, তাঁদের আহ্বান করব, আপনারা একটু উদ্যোগ নেন বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তারাও একটু উদ্যোগ নিক।’

যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন ও যখন ছিলেন না, তখনো তিনি খেলোয়াড়দের সহযোগিতা করে গেছেন; বিশেষ করে আবাহনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত অধিকাংশ খেলোয়াড়কে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন ও সহযোগিতা করেছেন এবং করে যাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ক্রীড়াক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১০ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও দুটি সংস্থাকে ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২৩’ প্রদান করেন। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ দেওয়া হয়।

একই অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া শিক্ষাবৃত্তি’ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। শেখ কামাল: ক্ষণজন্মা এক নক্ষত্র নামের একটি বইয়ের মোড়কও উন্মোচন করেন তিনি। এর আগে তিনি শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গণভবন থেকে একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট ও একটি উদ্বোধনী খাম প্রকাশ করেন। ১০ টাকা মূল্যমানের ডাকটিকিট, ৪০ টাকার তিনটি স্ট্যাম্প, ১০ টাকার উদ্বোধনী খাম এবং ৫ টাকার ডাটাকার্ড–সংবলিত একটি স্যুভেনির শিট উন্মুক্ত করেন তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.