অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদে সব নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা

0
107
রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে সুবলং যাওয়ার পথে আজকে তোলা ছবি।

টানা তিন দিনের ভারী বর্ষণের কারণে রাঙামাটিতে জনজীবন বিপর্ষস্ত হয়ে পড়েছে। অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে জানমালের নিরাপত্তা স্বার্থে শনিবার ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানের স্বাক্ষরিত জরুরি সর্তকীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্তর কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জরুরি সরকারি কাজে নিয়োজিত নৌযানসমূহ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। এ ছাড়া এ সংক্রান্ত যে কোন জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করতে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে, আরও কয়েকদিন টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকলে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে পাহাড় ধসে গিয়ে যে কোনও সময় যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে সড়কের কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে ছোট ছোট পাহাড় ধস হওয়ার কারণে এখনও রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে।

রাঙামাটি-চট্টগ্রাম রোডের শালবন এলাকায় অতিবৃষ্টিতে ধসে পড়েছে পাহাড়

অপরদিকে, টানা বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় সর্তকতা হিসেবে পাহাড়ের পাদদেশে বিভিন্ন স্থানে ঝুঁকিপুর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পাশাপাশি সচেতনামূলক মাইকিং চালিয়ে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে রাঙামাটি শহরে ২৯টি ষ্পটকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহিৃত করা হয়েছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদের জন্য ২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের এ নির্দেশনা মানছেন না অনেকে। শনিবার দুপুরে শহরের রুপনগর লোকনাথ মন্দির, শিমুলতলীসহ কয়েকটি স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লোকজন ঝুঁকি নিয়ে নিজ নিজ ঘরেই অবস্থান করছেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, টানা বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসের ঝুঁকি রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের উদ্দেশ্যে তিনদিন ধরে সচেতনামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসন ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ওইসব স্থানে গিয়ে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধও জানিয়েছেন। তাদের নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে, কিন্তু তারা শুনছেন না।

উল্লেখ্য, একটানা ভারী বর্ষণের কারণে ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙামাটিতে ভয়াবহ পাহাড় ধসে ৫ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.