ক্রিকেট কাঠামো সংস্কারে হাথুরুর পরামর্শ

0
107
সাকিবকে ছাড়াই মিরপুরে রোববার শুরু হয়েছে লাল বলের অনুশীলন। সেখানেও ব্যাটিং জুটি শান্ত-লিটন

আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে, বিসিবির ক্রিকেট কাঠামো দারুণ শক্তিশালী। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট, এইচপি (হাই পারফরম্যান্স) ইউনিট, বাংলাদেশ টাইগার, বাংলাদেশ ‘এ’ দল এবং জাতীয় দলের কার্যক্রম চলমান। স্কুল ক্রিকেট, বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট, বড়দের ক্রিকেটের ঘরোয়া লিগে থাকে ব্যস্ততা। বিসিবির নিবন্ধিত ক্রিকেটারের তালিকা হাজারের কাছাকাছি। তবুও কেন দেশে আন্তর্জাতিক মানের ৩০ জন ক্রিকেটার নেই! ১৮ থেকে ২০ জন ঘুরেফিরে খেলেন জাতীয় দলে। সাকিব-লিটন না থাকলে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে দল। ইনজুরিতে পড়ার শঙ্কা থেকে মুস্তাফিজদের বিদেশি লিগে নিয়মিত খেলতে দিতে চায় না বোর্ড।

আইপিএল থেকে ডাক পাওয়ার পরও তাসকিন আহমেদ খেলতে যেতে পারেন না। বিসিবির চাপে নিজের ইচ্ছা দমন করা এ ফাস্ট বোলারকে মিডিয়ায় বলতে শোনা গেছে, ‘আমার কাছে জাতীয় দলই সব।’ দেশের সবচেয়ে ধনী আর অভিজাত খেলায় এত বছরেও কেন এই শূন্যতা? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতেই বিসিবিতে আজ ‘স্ট্রাকচার মিটিং’। জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে আর হেড অব প্রোগ্রাম ডেভিড মুর দেশের ক্রিকেট অবকাঠামোর নকশা উপস্থাপন করবেন এ সভায়।

বিসিবির সংশ্লিষ্ট স্ট্যান্ডিং আর কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দুই ধরনের ক্রিকেট অবকাঠানো নিয়েই আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। ক্রিকেটারদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, পাইপলাইনের পর্যায়ক্রম ঠিক করা হবে। পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট কমপ্লেক্স গড়ে তোলার ব্যাপারেও থাকবে নকশা। বিসিবি গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল আনামের মতে, ‘আমাদের সবই আছে, কিন্তু সেগুলোকে একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পরিচালিত করার ব্যাপার থাকে। যাতে করে প্রতিভাবানদের পরিপূর্ণ ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তোলা যায়। এ জন্য যে চেইন মেনে চলা প্রয়োজন, তারই একটা রূপরেখা দেওয়া হবে সভায়।’

বাংলাদেশের ক্রিকেটে সব থেকেও অনেক কিছুই নেই। প্রতিটি বিভাগে ভেন্যু থাকলেও ক্রিকেটারদের আবাসন আর ইনডোর-জিম সুবিধার অভাবে ক্যাম্প পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়ে। স্থানীয় ক্রিকেটাররা চাইলেও নিয়মিত অনুশীলন করতে পারেন না। যে কারণে প্রথম শ্রেণির প্রায় সবাই ঢাকামুখী। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে গাদাগাদি করে অনুশীলন করতে হয়। এই সীমাবদ্ধতা দূর করতেই পরিকল্পনা নেওয়া বলে জানান একজন পরিচালক।

২০০৪ সালে হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) সেন্টার গড়ে তোলে বিসিবি। যেখান থেকে বয়সভিত্তিক দলের পাশাপাশি সিনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়মিত বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিল। সে কাঠামো ভেঙে বর্তমানে একাধিক বিভাগ গড়ে তোলা হলেও কার্যকর প্রশিক্ষণ খুব বেশি হয় না। বর্তমান এইচপিতে ক্রিকেটারদের বয়স বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ বিভাগের নিজস্ব কোচিং স্টাফও সীমিত। নাঈমুর রহমান দুর্জয় চান এইচপির নিজস্ব কোচিং স্টাফ। তিনি বলেন, ‘কালকের (আজ) স্ট্রাকচার মিটিংয়ে আমার চাওয়া থাকবে নিজস্ব কোচিং প্যানেল। সারা বছরই যাতে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়। ক্যাম্পের বাইরেও ছেলেরা সমস্যায় পড়লে, যাতে কোচদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে উত্তরণ করতে পারে। নিজস্ব কোচিং প্যানেল থাকলে একটি ছেলে লম্বা সময় একই ধরনের প্রশিক্ষণ পাবে। জানাশোনা থাকায় কোচরাও সহজে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের সমস্যার সমাধান করে দিতে পারবেন।’

বাস্তবতা হলো বিসিবিতে পরিকল্পনার অভাব ছিল না কোনো দিনই, শুধু সেগুলো কার্যকর করা সম্ভব হতো না দেখভালের লোগের অভাব থাকায়। এবার সে শূন্যতা পূরণ করতে পারেন ডেভিড মুর।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.