কারও রক্তচক্ষু বাঙালি জাতি মেনে নেবে না : প্রধানমন্ত্রী

0
51
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারও রক্তচক্ষু বাঙালি জাতি কোনোদিন মেনে নেবে না। প্রয়োজন হলে বুকের রক্ত দিয়ে বাঙালি জাতি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-সম্মান রক্ষা করবে।
সোমবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় দেশের ৫৪তম মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালি বীরের জাতি। যুদ্ধ করে আমরা এদেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- জাতির পিতা নির্দেশিত এই বৈদেশিক নীতি অনুসরণ করেই আমরা দেশ পরিচালনা করি। আমাদের কোনো প্রভু নেই, আছে বন্ধু। তাই কারও রক্তচক্ষু বাঙালি জাতি কোনোদিন মেনে নেবে না। প্রয়োজন হলে বুকের রক্ত দিয়ে বাঙালি জাতি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-সম্মান রক্ষা করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও পঁচাত্তরের ঘাতক এবং তাদের দোসররা এখনও তৎপর রয়েছে পরাজয়ের বদলা নিতে। সুযোগ পেলেই তারা আঘাত হানবে।
এ সময় স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সামনে একমাত্র বাধা আওয়ামী লীগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে ছলে-বলে-কৌশলে নিশ্চিহ্ন বা দুর্বল করতে পারলেই পরাজিত শক্তির উত্থান অনিবার্য। কাজেই কাণ্ডারি হুঁশিয়ার।
অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ আওয়ামী লীগ বন্ধ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ আমরা চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছি। দেশের সব গণতান্ত্রিক দল এবং সাধারণ মানুষকে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার জন্য অতদ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে। মনে রাখতে হবে আমাদের সংবিধানই গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেওয়া ও সমুন্নত রাখার সর্বোচ্চ রক্ষাকবচ। সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে বা পদদলিত করে কোনো কিছু করার চেষ্টার অর্থ হচ্ছে গণতন্ত্রকে খর্ব করা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই সংবিধানকে সমুন্নত রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছে। জাতীয় সংসদকে আমরা রাষ্ট্রের সব কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছি। স্থানীয় সরকারের সব স্তরে নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবার এবং ১৯৭৫ এর পর পঞ্চমবারের মতো সরকার গঠন করেছে। একই সঙ্গে আমার দল আমাকে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব অর্পন করেছে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, দেশবাসীর প্রতি আমার কর্তব্য হিসেবে এবং আমার পিতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার কাজ আরও এগিয়ে নেয়ার জন্য আমি বারবার এই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছি। আমি চেষ্টা করেছি সকলের সমর্থন এবং সহযোগিতা নিয়ে এদেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের মাধ্যমে তাদের মুখে হাসি ফোটাবার।
তিনি বলেন, আজকে ২০২৪ সালে স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকীতে আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। এটা কোন অসার বাগাড়ম্বর দাবি নয়। বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল বিশ্বে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা প্রমাণ করেছি রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সীমিত সম্পদ দিয়েও একটি দেশকে এগিয়ে নেওয়া যায়।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ওপরে আস্থা রাখার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের ওপর আবারও আস্থা রাখার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য, যে উন্নয়ন-অগ্রগতি আমরা এখন পর্যন্ত সাধন করেছি, তা আরও এগিয়ে নিয়ে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। যে বাংলাদেশ হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্য-মুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.