এবার জর্জিয়ার দুটি অঞ্চলকে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার হুমকি

0
106
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (বাঁয়ে) এবং দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ, ফাইল ছবি: এএফপি

ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে এবার ইউরোপের আরেক দেশ জর্জিয়ার দুটি অঞ্চল রাশিয়ার ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে মস্কো। ক্রেমলিনের শক্তিশালী নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি সেক্রেটারি দিমিত্রি মেদভেদেভ দক্ষিণ ওশেটিয়া ও আবখাজিয়াকে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার এই হুমকি দিয়েছেন।

পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হওয়ার জন্য জর্জিয়ায় উদ্যোগের জেরে রাশিয়ার পক্ষ থেকে এমন হুমকি দেওয়া হয়েছে।

মস্কোভিত্তিক সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘আগুমেন্তি আই ফ্যাক্তি’ আজ বুধবার মেদভেদেভের লেখা একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। এতে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মেদভেদেভ দক্ষিণ ওশেটিয়া ও আবখাজিয়াকে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি জর্জিয়াকে ন্যাটোভুক্ত করতে আলোচনার চেষ্টার মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলকে পশ্চিমারা অস্থিতিশীল করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মেদভেদেভ নিবন্ধে লিখেছেন, দক্ষিণ ওশেটিয়া ও আবখাজিয়া অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করার ধারণা এখনো বেশ জনপ্রিয়। যদি যৌক্তিক কোনো কারণ থাকে, তাহলে এই ধারণাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া হতে পারে।

১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর দক্ষিণ ওশেটিয়া ও আবখাজিয়ার ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারায় জর্জিয়া। নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার চেষ্টায় ২০০৮ সালে রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সংঘাতে জড়ায় জর্জিয়া। এই অভিযান ছিল সংক্ষিপ্ত, তবে রক্তক্ষয়ী। এর পর থেকে জর্জিয়ার এই দুই অঞ্চলকে ‘স্বাধীন ভূখণ্ড’ হিসেবে বিবেচনা করছে মস্কো।

২০০৮ সালের ওই সংক্ষিপ্ত রক্তক্ষয়ী সামরিক অভিযান এবং দক্ষিণ ওশেটিয়া ও আবখাজিয়াকে ‘স্বাধীন’ অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতির ১৫তম বর্ষপূর্তিতে সংবাদপত্রে নিবন্ধটি লিখেছেন মেদভেদেভ।

এদিকে নিরাপত্তা উদ্বেগ থেকে ন্যাটোর সঙ্গে যুক্ত হতে চায় জর্জিয়া। এই পরিস্থিতিতে মেদভেদেভ হুঁশিয়ারি দিলেন, ‘জর্জিয়ার ন্যাটোভুক্ত হওয়ার বিষয়ে আমাদের আশঙ্কা যদি বাস্তবতার কাছাকাছিও যায়, তাহলে আমরা আর পাল্টা পদক্ষেপ নিতে অপেক্ষা করব না।’

জর্জিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে দেশটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কেননা দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ধরে রাখার পথে এটা সবচেয়ে কার্যকর কৌশল।

সামরিক জোট ন্যাটোর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘জর্জিয়া ন্যাটো জোটের ঘনিষ্ঠ অংশীদারদের একটি।’

এতে আরও বলা হয়েছে, ন্যাটোর সদস্য হতে চায় জর্জিয়া। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ন্যাটো ও জর্জিয়ার মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এই সম্পর্ক জর্জিয়ার সংস্কার প্রচেষ্টা ও ইউরো-আটলান্টিক এক করার ধারণাকে সমর্থন করে।

জর্জিয়ার বিরুদ্ধে মেদভেদেভের হুমকির বিষয়টি অনেকটা ইউক্রেনের মতো বিবেচনা করা হচ্ছে। কিয়েভের ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার প্রচেষ্টায় রাশিয়া নাখোশ হয়েছিল। এর জেরে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করে মস্কো।

এর আগে ২০১৪ সালে সামরিক অভিযান চালিয়ে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চলটি দখল করে নেয় রাশিয়া। আর চলমান যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনের চার অঞ্চলকে আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে মস্কো। অঞ্চল চারটি হলো দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.