একতরফা নির্বাচন করতে আবারও মিথ্যা মামলার হিড়িক: রিজভী

0
82
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতারা।

আবারও একতরফা নির্বাচন করতে দেশজুড়ে মিথ্যা ও গায়েবি মামলার হিড়িক পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছে গণতন্ত্রকামী হাজার হাজার মানুষ। বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত চলমান কর্মসূচিকে বানচাল করতে সরকার গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার এবং নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা, অন্ধ ও পঙ্গু করে যাচ্ছে। রোববার রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনুকে নিজ বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ। কিন্তু পুলিশ মজনুকে আটকের কথা এখনও স্বীকার কিংবা তার কোনো হদিস দিচ্ছে না।

সোমবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দেশকে পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীল করার জন্য অবৈধ সরকার নানা প্রকার চক্রান্তে মেতে উঠেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ভয়াবহ বেকারত্ব, মানুষের ক্রয়ক্ষমতার চরম হ্রাস পাওয়াসহ সারাদেশ ডুবে আছে অনাচার ও নৈরাজ্যের অমানিশায়।

তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সবার সামনে থেকে মজনুকে তুলে নিয়ে গেছে। তাকে ডিবি কার্যালয়েই রাখা হয়েছে, কিন্তু তারা এখনও স্বীকার করছে না। এই ঘটনায় মজনুর পরিবার ও বিএনপি নেতাকর্মীরা শঙ্কিত। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নং-৪৫২৩/২০২১ এর আদেশ এখনও বলবৎ আছে। ওই আদেশে কোনো উপযুক্ত আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া রফিকুল আলম মজনুকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনাও রয়েছে যেন সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া পেন্ডিং মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো না হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশের প্রতি সম্মান জানিয়ে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।

রিজভী আরও বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় পুলিশ গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে ব্যাপকভাবে হানা দিচ্ছে। ঢাকাসহ সারাদেশকেই এক আতঙ্কের নগরীতে পরিণত করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে খুলনা, পটুয়াখালী, ফরিদপুর, নেত্রকোণা, ফেনীসহ বেশকিছু জেলায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সহিংস আক্রমণ চালিয়েছে ও অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়াও ঢাকা, যশোর, সিলেট, ঝিনাইদহ ও রাজশাহীতেও একইভাবে চলছে রক্তাক্ত আক্রমণ, নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নির্বিচারে গ্রেপ্তার-আসবাবপত্র ভাংচুর এবং মিথ্যা মামলার হিড়িক চলছে।

তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে সকল জায়গায় এই অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে যে আওয়াজ শুরু হয়েছে তাতে তারা উপলব্ধি করছে যে, তাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে, ক্ষমতা তাদের হারাতে হবে। এখন সরকার তাদের সুবিধাভোগী প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নিধনে লেলিয়ে দিয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদেরকে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য রক্ত ঝরানো। এই কারণে সামনের নির্বাচন নিয়ে ইতোমধ্যেই মানুষের মনে বিষণ্ণতার ছায়া ফেলছে। তবে এবার যুগান্তকারী সাহস ও সহনশীলতা দিয়ে জনগণ শেখ হাসিনাকে নির্বাচন নিয়ে তামাশা করতে দেবে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.