উদ্বোধনের অপেক্ষায় তৃতীয় টার্মিনাল, ব্যাপক প্রস্তুতি

0
85
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণ পাশে তৃতীয় টার্মিনালের দৃষ্টিনন্দন ভবন।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে ৮৩ শতাংশ। এখন চলছে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ। আগামী ৭ অক্টোবর এই টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে বছরে দুই কোটি ৪০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব।

বিমানবন্দরের দক্ষিণ পাশে তৃতীয় টার্মিনালের দৃষ্টিনন্দন ভবনটি এরই মধ্যে দৃশ্যমান। তবে যাত্রীরা আপাতত এটি ব্যবহার করতে পারবেন না। বেবিচক জানায়, ২০২৪ সালের শেষ দিকে এই টার্মিনাল থেকে স্বল্প পরিসরে চলাচল করবে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট। এটি পুরোদমে চালু হবে ২০২৫ সালে।

তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান বলেন, উদ্বোধনের আগে ৯২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করতে দেশি-বিদেশি কর্মীরা রাত-দিন কাজ করছেন।

অনেকের অভিযোগ, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনে তোড়জোড় করছে বেবিচক। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনের কোনো সম্পর্ক নেই।’

তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রজেক্ট ম্যানেজার ও বেবিচকের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এইচ এমডি নুরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘অধিকাংশ কাজ শেষ। কাঠামো তৈরির কাজ শতভাগ হয়েছে। ছাদের কাজ হয়েছে ৯৮ শতাংশ এবং ফলস সিলিংয়ের কাজ ৭০ শতাংশ। মেঝে ও টয়লেট নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ দেয়াল তৈরি, ভিআইপি লাউঞ্জ নির্মাণ, অ্যাপ্রোন চিহ্নিত ইত্যাদি কাজ সামান্য বাকি। ভূগর্ভস্থ টানেলের কাজও শতভাগ হয়েছে। লাগেজ হ্যান্ডলিং সিস্টেম তৈরির কাজ হয়েছে ৬৫ শতাংশ। নিরাপত্তা যন্ত্রপাতি স্থাপন হয়েছে ৮৫ শতাংশ। গাড়ি পার্কিংয়ের কাজ ৮৫ শতাংশ, ফায়ার স্টেশনের কাজ ৫৪ ও আমদানি-রপ্তানি কার্গো ভবনের কাজ ৯৬ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয় ২০১৭ সালে। নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে পাঁচ হাজার কোটি টাকা সরকারের, বাকি অর্থ দিচ্ছে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘পুরোনো টার্মিনালে ২৯টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাচ্ছে। তৃতীয় টার্মিনালের অ্যাপ্রোনে আরও ৮ থেকে ১০টি উড়োজাহাজ রাখা যাবে।’ বেবিচকের হিসাব অনুযায়ী, শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রতিদিন ৩০টি এয়ারলাইন্সের ১২০ থেকে ১৩০টি ফ্লাইট ওঠানামা করে। এসব ফ্লাইটের ১৯ থেকে ২১ হাজার যাত্রী প্রতিদিন এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেন। হজ বা বিশেষ সময়ে যাত্রী আরও বাড়ে।

এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘যাত্রীদের মানসম্মত সেবা দিতে বিমানবন্দরের বর্তমান টার্মিনাল দুটি যথেষ্ট নয়। সে কারণেই নতুন টার্মিনাল করা হচ্ছে। দুই টার্মিনালে বর্তমানে বছরে ৮০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হলেও তৃতীয় টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে বছরে দুই কোটি ৪০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া যাবে।’ তৃতীয় টার্মিনাল  উদ্বোধন (আংশিক) নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.