ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন: পাঁচ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার

0
107
বহিষ্কৃত ৫ শিক্ষার্থী। ছবি-সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের দায়ে শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচ অভিযুক্তকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সোমবার বিকেল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬০তম জরুরি সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, আজ ২৬০তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃত পাঁচ ছাত্রী হলেন, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী।

এদিকে এর আগে এ ঘটনায় গত ১৫ জুলাই নির্যাতনকারী পাঁচ অভিযুক্তকে ১ বছরের জন্য  বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি ও উচ্চ আদালতের গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কোড অব কন্ডাক্ট-১৯৮৭ এর পার্ট-২ ধারা-৮ মোতাবেক ১২ মাসের জন্য তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি।

তবে বিষয়টি পুনরায় ১৯ জুলাই আদালতের দৃষ্টিতে আনেন রিটাকারী আইনজীবী গাজী মো. মহসিন। তিনি আদালতকে জানান যে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি প্রাসঙ্গিক পদ্ধতি লঙ্ঘন করে পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রায় বাতিল করে হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এই রায়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিল বলে মন্তব্য করেন। এছাড়া নির্যাতনকারী পাঁচ শিক্ষার্থীর সাজা পুনঃনির্ধারনে উপাচার্যকে নির্দেশও দেওয়া হয়। গত ২৬ জুলাই বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে সোমবার জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী খাতুন বলেন, প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আমি সঠিক বিচার পেয়েছি। তারা আমার ওপর যে নির্যাতন করেছে তার উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে। এ বিচার দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে। পরবর্তীতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস করবে না। একইসঙ্গে আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা চাচ্ছি।

চলতি বছরের ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগ নেত্রী ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মীর বিরুদ্ধে।

এ নিয়ে হল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উচ্চ আদালত এবং শাখা ছাত্রলীগ কতৃক পৃথক চারটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত শেষে প্রতিবেদনের আলোকে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে হাইকোর্টের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই পাঁচ অভিযুক্তকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগ তাদের তদন্তের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বহিষ্কার করে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.