ইন্টারভিউয়ে মজা করে কথাটি বলেছিলাম: তমা মির্জা

0
81
তমা মির্জা

তমা মির্জা। অভিনেত্রী। ঈদে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘সুড়ঙ্গ’। রায়হান রাফী পরিচালিত এ সিনেমা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো এই অভিনেত্রীর সঙ্গে–

‘সুড়ঙ্গ’ মুক্তির সপ্তাহ পেরোল। এই সময়ে এসে দর্শক সাড়া কেমন মিলছে?

মুক্তির আগে থেকেই আলোচনায় ছিল সিনেমাটি। সুড়ঙ্গের দর্শক কথা কম বলে। তারা গঠনমূলক সমালোচনা করেন। সে জায়গা থেকে তারা যখন এসে কথা বলছেন, গল্পটা আলাদা। ময়না ভালো হলো না। তখন বুঝতে হবে, সিনেমাটি ভালো যাচ্ছে। তাদের মধ্যে চরিত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। সব দর্শকের কাছেই ইতিবাচক কথা শুনেছি। এও বলেছেন, আমাদের জুটিকে তারা একসঙ্গে দেখতে চান। সবাই পুরো টিমের প্রশংসা করছেন। প্রথম থেকেই বলছিলাম এটি  কারও একার সিনেমা নয়। টিমওয়ার্কের। দর্শক সাড়াই এটি প্রমাণ হচ্ছে। দর্শককে না জানিয়ে অনেক হলে গিয়েছিলাম। চেয়েছি দর্শক মন খুলে হাসুক, গালি দিক, সিনেমাটি নিয়ে কথা বলুক। সিনেপ্লেক্সের দর্শক শিস বাজাচ্ছে, আইটেম গানের সঙ্গে নেচেছে। এমন চিত্র আগে কখনও দেখিনি।

ঈদে আরও চারটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সেগুলো নিয়ে আপনার মতামত কী? 

সিনেমাগুলো দর্শক বেশ উপভোগ করছেন। এতেই বোঝা যায়, সিনেমার সুদিন ফিরছে। এবার ঈদের সিনেমার গান সুন্দর হয়েছে। অনেককেই বলতে শুনেছি, আগে সিনেমায় ভালো গান হতো, আমরা এখন কেন এ রকম গান পাই না। প্রিয়তমার ‘ঈশ্বর’ তো অসাধারণ। সুড়ঙ্গে ‘গা ছুঁয়ে বলো’ দারুণ হয়েছে। ‘প্রহেলিকা’, ‘ক্যাসিনো’, লাল শাড়ি সিনেমায় সুন্দর সুন্দর গান শুনছেন শ্রোতারা। ঈদের সিনেমার সাফল্যের জন্য নির্মাতাদের পাশাপাশি প্রযোজকদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই। সিনেমার ব্যবসা ভালো হলে চলচ্চিত্রের জন্যই মঙ্গল। যদি মনে করি, একটি সিনেমা ভালো যেতে হবে, তাহলে আমি চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির ভালো চাই  না।  চলচ্চিত্রের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। ক্রমাগত লোকসান হচ্ছে– এ রকম কথা আগে শুনতে পেতাম। এখন চলচ্চিত্রে প্রযোজকরা বলে দিচ্ছেন, সিনেমায় কত লাভ হচ্ছে। কতটা খুশি হলে তারা এভাবে বলতে পারেন!

কেউ কেউ বলছেন এটি আপনার ক্যারিয়ারের সেরা সিনেমা। আপনার কি তা মনে হয়?

দেখুন, অভিনয় করি দর্শকের জন্য। তারা  যদি এটি বলে থাকেন, তা হলে তো আর কথা নেই। আমার কিন্তু ‘খাঁচা’, ‘ফ্রাইডে’ও  পছন্দের কাজ। তবে সুড়ঙ্গের ক্যানভাস অনেক বড়। এটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। কোটি কোটি দর্শক দেখছেন। সুড়ঙ্গ আলাদা করে দর্শকের ভালোবাসা ও ভালোলাগার জায়গা তৈরি করে দিয়েছে।

তমা মির্জা থেকে ময়না হয়ে ওঠার জার্নি কেমন ছিল?

এখানে আমি একজন বিবাহিত মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। স্ত্রীর জায়গা থেকে আমি স্বামীর সঙ্গে প্রতারণা করেছি। আমাদের আশপাশে এ রকম কিছু শুনলে কিন্তু আমরা ছিঃ ছিঃ করি। এমন একটি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য রাজি হওয়াটাই চ্যালেঞ্জিং ছিল। এটি কোনো টিনএজারের কাহিনি নয়।  চাইলেও  আমি ন্যাকামি করে সংলাপ বলেতে পারব না। ওভার এক্সপ্রেশনও সম্ভব নয়। নিশো ভাই [আফরান নিশো] একজন দক্ষ ও  ভালো মাপের  অভিনেতা।  তাঁর অভিনয় সাবলীল ও বাস্তবধর্মী। তাঁর সঙ্গে যদি আমি ওভার করে ফেলি, সেটি স্ক্রিনে খুব বাজে লাগবে। আমাকে ন্যাচারাল অভিনয় করতে হয়েছে। ব্যক্তি তমাকে সবাই চেনেন। আমি এই চরিত্রের মতো নই। আশপাশের যাদের সঙ্গে মিশি, তারাও এমন নয়। আশপাশেও এ ধরনের মানুষের সংখ্যা খুবই কম। তবে এই ময়নার মতো নারীকে আমরা জানি। কিন্তু কাছ থেকে দেখি খুব কম। তাই  চরিত্রকে ভাবা একটু কঠিনই ছিল। ময়না যে কী চায়, তা বোঝা কঠিন। তাঁর কথার চেয়ে যেন চোখমুখের অভিব্যক্তি বেশি থাকে– এটাই চেয়েছি। ময়নাকে সেভাবেই পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছি। টাকার প্রতি তাঁর আলাদা মোহের বিষয়টি মুখে যতটা না সে  বলে, চোখে তাঁর থেকে বেশি প্রকাশ পায়। ময়নার চাহিদা খুব অল্প। কিন্তু সেই চাহিদা মেটানোর যে পথ সে বেছে নেয়, সেটা সঠিক নয়। দর্শকের মনে জায়গা করে নেওয়ার পাশাপাশি অভিনয়শিল্পীদের জন্য এটি একটি রেফারেন্স চরিত্র হয়। সবার মনে যেন দাগ কাটে চরিত্রটি– এটাই ছিল আমার চেষ্টা।

  কাজে ফিরছেন কবে?

এখন সুড়ঙ্গ প্রচার-প্রচারণার রেশ কাটেনি। হলে হলে চলছে সিনেমাটি। আগস্ট পর্যন্ত সুড়ঙ্গ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই। সেপ্টেম্বরের পর নতুন প্রজেক্টের কাজ শুরু করব বলে ভাবছি। সুড়ঙ্গ সিনেমার শুটিংয়ের সময় কোনো কাজ রাখিনি। দুর্দান্ত কিছু কাজের চিত্রনাট্য জমা রয়েছে। অনেক নির্মাতা আমাকে নিয়ে কাজের জন্য অপেক্ষা করছেন। তাদের কাজ দিয়ে বিরতি ভেঙে অভিনয়ে ফেরা হবে।

এবার ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে আসা যাক। রায়হান রাফির সঙ্গে আপনার সম্পর্কের বিষয়ে ঈদের পর জানানোর কথা ছিল…

একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ইন্টারভিউয়ে মজা করে  কথাটি বলেছিলাম। প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই এমন উত্তর দিয়েছি। আমাদের সম্পর্ক নিয়ে জানানোর মতো কিছু নেই। ব্যক্তিগত জীবনের চেয়ে নিজের অভিনীত চরিত্র নিয়েই আলোচনায় থাকতে চাই। তবে ব্যক্তিগত জীবনে আমি যখন কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যাব, সেটা কাছের মানুষ ও দর্শকের  জানার অধিকার আছে। শুধু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েই আলোচনায় আসতে চাই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.