আ.লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ, কিশোর নিহত

0
130
নিহত মো. জাহেদ হাসান, ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে এক কিশোর নিহত হয়েছে। তার নাম মো. জাহেদ হাসান (১৫)। আজ বিকেলে উপজেলার ওচমানপুর ইউনিয়নের আজমপুর বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আজমপুর বাজার এলাকায় একটি পানি বিক্রির দোকানের কর্মচারী ছিল কিশোর জাহেদ।

সংঘর্ষে চার যুবক আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁরা হলেন ওচমানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. হাসান (২৮), যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লা আল মামুন (২৮) এবং যুবলীগের কর্মী সায়েদ খান (৩৫) ও মিজানুর রহমান (৩২)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রঘোষিত আগামী ৫ অক্টোবরের ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চ সফল করতে আজমপুর বাজারসংলগ্ন এলাকায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিনের বাড়িতে একটি প্রস্তুতি সভা ডাকে বিএনপি। সভা শেষে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আজমপুর বাজার এলাকায় এলে সেখানে তাঁদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় কিশোর জাহেদ দোকান থেকে বেরিয়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করলে তার মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে একটি পক্ষ। এতে সে অচেতন হয়ে পাশের একটি পুকুরে পড়ে যায়। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী নিহত কিশোরকে ছাত্রলীগের কর্মী দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের সমাবেশে একতরফা হামলা চালানো হয়েছে। বিএনপি সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের নেতা-কর্মীদের মেরে আহত করেছে। তারা ছাত্রলীগ কর্মী জাহেদ হাসানকে পিটিয়ে মেরেছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ একাধিক নেতার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাঁরা কেউ সাড়া দেননি।

তবে নিহত জাহেদ হাসানের চাচা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমার ভাতিজা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। তিন ভাইয়ের মধ্যে মেজ ছিল জাহেদ। দুই দলের মারামারির বলি হয়েছে ছেলেটা।’

জাহেদ উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাপাহাড় গুচ্ছগ্রামের মৃত নূর জামানের ছেলে। বাবা মারা যাওয়ার পর মা ও তারা তিন ভাই আজমপুর এলাকায় নানার বাড়িতে থাকছে। তার বড় ভাইও একটি পানি বিক্রির দোকানে চাকরি করে। আর ছোট ভাইয়ের বয়স সাত বছর। সে পড়াশোনা করছে।

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক খন্দকার নোমান শায়রি প্রথম আলোকে বলেন, আজমপুর বাজারে মারামারির ঘটনায় ওই কিশোরকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। একই ঘটনায় আসা আরও চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আজ রাত ৮টার দিকে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আজমপুর বাজারে দুই পক্ষের মারামারিতে এক কিশোর নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। আমরা ঘটনা তদন্ত করছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.