বাজার মাতাতে হুয়াওয়ে এনেছে পিউরা ৭০, কী আছে নতুন এই স্মার্টফোনে

0
55
হুয়াওয়ে,ছবি: রয়টার্স

বাজারে নতুন স্মার্টফোন নিয়ে এসেছে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা চীনের প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়ে। আইফোনের সমতুল্য হিসেবে বিবেচিত পিউরা ৭০ মডেলের এই স্মার্টফোন বাজারে আসার পরপরই দ্রুত বিক্রি হয়ে গেছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, গত বছর মেট ৬০-এর পর এ বছর পিউরা ৭০ স্মার্টফোন বাজারে এনে দামি স্মার্টফোনের বাজারে অ্যাপলের সঙ্গে ভালোভাবেই প্রতিযোগিতায় নেমেছে হুয়াওয়ে।

পিউরা সিরিজের ফোনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, উন্নত ক্যামেরা ও চকচকে চেহারা; মেট ৬০ ফোনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, কর্মনৈপুণ্য ও ব্যবসায়িক কাজের সক্ষমতা।

এই ফোনের বৈশিষ্ট্য ও কার্যকারিতা কী, তা বুঝতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আইফিক্সিট ও টেকসার্চ ইন্টারন্যাশনাল রয়টার্সের হয়ে এই পিউরা সিরিজের ফোনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। তাদের পরীক্ষায় যা উঠে এসেছে তা হলো:

পিউরা ৭০ ফোনে উন্নতমানের সিস্টেম-অন-চিপ ব্যবহার করা হয়েছে। এই চিপের বহিরাবরণের যে চেহারা, তা আগের প্রজন্মের কিরিন ৯০০০ চিপের মতো। মেট ৬০ সিরিজের ফোনে এই কিরিন ৯০০০ চিপ ব্যবহার করা হয়েছে। চাইনিজ চিপ ফাউন্ড্রি সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এই কিরিন ৯০০০ চিপ বানিয়েছিল।

মেমোরি চিপ

মেট ৬০-এর মতো পিউরা ৭০ সিরিজের ফোনে দক্ষিণ কোরিয়ার এসকে হিনিক্সের তৈরি ডিআরএএম চিপ ব্যবহার করা হয়েছে। পিউরা ৭০-এর এনএএনডি ফ্ল্যাশ মেমোরি চিপ দেখলে মনে হয়, কোম্পানির নিজস্ব চিপ ইউনিট তা সংযোজন করেছে। এর বিপরীতে মেট ৬০-তে হিনিক্সের এনএএনডি চিপ ব্যবহার করা হয়েছিল।

পিউরা ৭০-তে যে এনএএনডি ৭০ চিপ ব্যবহার করা হয়েছে, তার ধারণক্ষমতা উচ্চমানের ল্যাপটপের সমান বা এক টেরাবাইট।

হুয়াওয়ের এই ফোনের বৈশিষ্ট্য হলো, এর অধিকাংশ উপাদান চীনেই তৈরি। তবে কিছু উপাদান অন্য দেশ থেকেও আনা হয়েছে। এই ফোনের ব্যাটারির চার্জার তাইওয়ানের রিচটেক থেকে আনা হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই ফোনের মোশন ও রোটেশন সেন্সর জার্মান ফার্ম বোশ থেকে আনা হয়েছে।

আইফিক্সিট একটি বিষয়ে কৌতূহলী। সেটা হলো, এসব উপাদান চীনের বিভিন্ন কোম্পানির বানানোর সক্ষমতা থাকলেও কেন তারা অন্যান্য দেশ থেকে তা সংগ্রহ করেছে।

হুয়াওয়ের প্রত্যাবর্তন

হুয়াওয়ে
হুয়াওয়েছবি: রয়টার্স

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে হুয়াওয়ে স্মার্টফোনের বাজার থেকে একরকম হারিয়েই গিয়েছিল। তবে গত বছরের আগস্ট মাসে হুয়াওয়ে মেট ৬০ প্রো ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইস উন্মোচন করে বাজারে রীতিমতো রাজসিক প্রত্যাবর্তন করে। প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা অবাক হয়েছিলেন। কারণ, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরও হুয়াওয়ের নিজস্ব চিপনির্ভর প্রথম ফাইভজি ডিভাইস ছিল এটি।

মূলত হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে চীনের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ এনে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, যদিও তারা সেই অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করেছে। এরপর গত মাসে হুয়াওয়ে তাদের সর্বশেষ ফ্ল্যাগশিপ পিউরা ৭০ উন্মোচন করল।

অ্যাপলের সবচেয়ে বড় বাজার চীন। কিন্তু সেই চীনে বছরের প্রথম প্রান্তিকে আইফোন বিক্রি কমেছে ৮ শতাংশ। বিশ্বের সবখানেই বিক্রি কমছে অ্যাপলের। বছরের প্রথম প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে স্যামসাংয়ের। হুয়াওয়েও নতুন মডেলের ফোন নিয়ে আবার বাজার মাত করতে পারে বলেই বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.