আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ ৪৪ জন রংপুর মেডিকেলে, দুজনের মৃত্যু

0
76
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার হিমু খাতুন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। পাশে মা মজিদা বেগম যত্ন নিচ্ছেন। রোববার সকালে

কনকনে শীতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে ৪৪ জন দগ্ধ রোগীর মধ্যে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রংপুরসহ আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকে এসব দগ্ধ রোগী ভর্তি হয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে মারা যাওয়া দুজনের মধ্যে একজন হলেন রংপুর নগরের তাজহাট এলাকার বাসিন্দা নাসরিন বেগম (৩৫)। তিনি রোববার সকালে মারা যান। এ ছাড়া রংপুরের পীরগাছা উপজেলার বাসিন্দা আমেনা বেগম (৬০) গতকাল শনিবার সকালে মারা যান।

হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ দিনের ব্যবধানে (রোববার দুপুর পর্যন্ত) শীতে আগুন পোহানোসহ গরম পানি ব্যবহার করতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে রোগী ভর্তি হন ৪২ জন। এর মধ্যে বার্ন ইউনিটে ১১ জন এবং সার্জারি, শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ৩১ জন।

বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক ফারুক আলম জানান, চিকিৎসাধীন রোগীদের শরীরের ১০ থেকে ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের বার্ন ইউনিটসহ সার্জারি ও শিশু ওয়ার্ডে আগুনে দগ্ধ রোগীরা চিকিৎসাধীন। গত ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া গঙ্গাচড়ার তালুক হাবু এলাকার নাজমুন নাহার (৪০) ৮ নম্বর শয্যায় আছেন। তাঁর সঙ্গে থাকা স্বামী আসাদুজ্জামান বলেন, ‘হাড়কাঁপানো শীত থাকি রক্ষা পাওয়ার জন্যে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে কাপড়ে আগুন ধরি যায়। তার শরীরের নিজের দিকে আগুনে ঝলসে গেইছে।’

১২ নম্বর শয্যায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন লালমনিরহাটের মহেন্দ্রনগর এলাকার আনারবি খাতুন (৬৫)। গত ৬ জানুয়ারি দগ্ধ হয়ে ভর্তি হয়েছেন। তাঁর সঙ্গে থাকা বোন ছায়রা খাতুন জানান, পাটখড়ি ও খড় দিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে কাপড়ে আগুন ধরে যায় আনারবির।

৬ জানুয়ারি ভর্তি হওয়া সৈয়দপুরের ধলোগঞ্জ এলাকা থেকে শিশু হিমু খাতুন (৬)। সঙ্গে থাকা মা মজিদা বেগম জানান, খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে গায়ে ধরে।

চিকিৎসক ফারুক আলম জানান, অল্প কয়েক দিন হলো এ অঞ্চলে কনকনে শীত পড়েছে। শীত থেকে রেহাই পেতে গ্রামাঞ্চলের মানুষজন খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করেন। সেই সঙ্গে গরম পানির ব্যবহারও বেড়ে যায়। অসাবধানতার কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। তাঁরা সাধ্যমতো দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.