কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার চারণকবি রাধাপদ রায়ের (৮০) ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করেছেন ২৫ বিশিষ্টজন। পাশাপাশি হামলার ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনারও দাবি জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন।
নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নে রাধাপদের নিজ গ্রাম গোড্ডারাপাড় বটতলায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সকালে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়।
হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন কবির ওপর নির্যাতনের ঘটনায় আমরা লজ্জিত, বিব্রত ও ব্যথিত।’ রাধাপদ রায়কে নির্যাতনের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও সংস্কৃতিজনের ওপর হামলা নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগেও দেশের বিভিন্ন স্থানে বাউলশিল্পী ও নাট্যকর্মীর ওপর হামলা, বাউলের বাদ্যযন্ত্র ও পাণ্ডুলিপিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে, যার কোনোটিই রাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, প্রতিটি ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে আখ্যা দেওয়ার প্রবণতা এ ধরনের ঘটনা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। আমরা রাধাপদ রায়ের ওপর হামলার ঘটনাটিতে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুততম সময়ে সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’ বিবৃতিদাতারা আরও বলেন, সংস্কৃতিচর্চা বন্ধ করে দেওয়ার যে আয়োজন দেশব্যাপী চলছে, তার সঙ্গে এ ঘটনাকে পৃথক করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। যে কোনো কারণ বা প্রকারেই এ ধরনের ঘটনা ঘটুক না কেন, এর পেছনে একটি বৃহৎ শক্তি রয়েছে, যারা দেশ থেকে সংস্কৃতিচর্চা নির্বাসনে পাঠাতে চায়, যারা রাধাপদ রায়ের মতো সংস্কৃতিসেবীদের একের পর এক আক্রমণ করে চলেছে।
বিবৃতিদাতারা হলেন– বিশিষ্ট মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধুরী, রামেন্দু মজুমদার, ডা. সারওয়ার আলী, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, নুর মোহাম্মদ তালুকদার, মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, ডা. ফওজিয়া মোসলেম, খুশী কবির, রানা দাশগুপ্ত, এম এম আকাশ, রোবায়েত ফেরদৌস, সালেহ আহমেদ, জোবায়দা নাসরিন, পারভেজ হাসেম, দীপায়ন খীসা, জীবনানন্দ জয়ন্ত, সেলু বাসিত, এ কে আজাদ, জহিরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, অলক দাস গুপ্ত, আবদুল আলীম, আবদুর রাজ্জাক এবং গৌতম শীল।