কাতারের মধ্যস্থতায় ফিলিস্তিনির গাজা উপত্যকায় চারদিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা (বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা) থেকে এই চুক্তি কার্যকর হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েলের ১৩ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এছাড়াও থাইল্যান্ডের ১২ শ্রমিককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের এখন মিসরের রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে।
এদিকে আজ (শুক্রবার) ইসরায়েল ৩৯ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন।
আজ শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন বলেন, ‘গাজায় আটক ১২ থাই শ্রমিককে হামাস মুক্তি দিয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি।’
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর অফিসের বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপে ১৩ ইসরায়েলিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের এখন মিসরের রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। সেখান থেকে তাদের গ্রহণ করবেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
এদিকে হামাসের বরাতে এএফপি জানায়, আধ ঘণ্টা আগে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে মিশর হয়ে ইসরায়েলে ফেরার জন্য রেড ক্রসের কাছে বন্দিদের হস্তান্তর করা হয়েছে।
হামাসের সামরিক শাখার একটি সূত্র জানায়, ‘এটি চুক্তির অধীনে প্রথম দল’।
তবে এএফপির ছবির বরাত দিয়ে আল-জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে দালিয়াত আল-কারমেলের দামুন কারাগার থেকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের পশ্চিম তীরের ওফার কারাগারে স্থানান্তর করতে দেখা গেছে।
গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। হামাসের এই হামলার জবাবে ওই দিনই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। ১৬ অক্টোবর থেকে সেই অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গত দেড় মাসে উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৫ হাজার ৫৩২ জনে। এই নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুদের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি।
১৪ অক্টোবর প্রথম বার জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করে রাশিয়া। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আপত্তির কারণে তা বাতিল হয়ে যায়।
তার দুই দিন পর ১৬ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় মানবিক বিরতির আহ্বানের প্রস্তাব উত্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র; কিন্তু রাশিয়া ও চীনের আপত্তির কারণে সেটিও বাতিল হয়ে যায়।
তবে নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন প্রস্তাব বাতিল হলেও গাজায় যুদ্ধবিরতি কিংবা মানবিক বিরতির পক্ষে শক্ত অবস্থান নেয় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ। সেই সঙ্গে এই যুদ্ধের শুরু থেকেই হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করে আসছিল কাতার ও মিসর।