অদ্ভুত, খ্যাপাটে, উচ্চাভিলাষী, অতি সাহসী, ভুল, বুদ্ধিদীপ্ত বা নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক—কোন বিশেষণে বোঝাবেন কে জানে, কিন্তু পাঁচ দিন আগে এজবাস্টন টেস্টের প্রথম দিন বেন স্টোকসের ওই ইনিংস ঘোষণা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তো?
ফেসবুক বা টুইটারে অথবা অন্য কোথাও এর পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা হয়তো দেখেছেন, অংশ নিয়েছেন আপনিও।
এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক। কেউ হয়তো ‘আগেই বলেছিলেন’ স্টোকসের ওই সিদ্ধান্ত ইংল্যান্ডকে ভোগাবে। কেউ ‘শুরু থেকেই এর পক্ষে’, আশপাশে আলোচনায় আগ্রহী মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, কেন এমন করে থাকতে পারেন স্টোকস। কেউ আবার আগে থেকে ঝুঁকি নেননি, ‘অপেক্ষা করে ছিলেন’, কী হয়—শেষ পর্যন্ত সেটি দেখে নিজের আলোচনার পাল সেদিকে তুলবেন বলে।
এজবাস্টনের প্রথম দিন জো রুট ও ওলি রবিনসন মাত্রই নাথান লায়নের ওভারে ২০ রান তুলেছেন, ৪০০ রানের দিকে এগোতে থাকা ইংল্যান্ডকে থামিয়ে দিলেন তাঁদের অধিনায়ক। ইনিংস ঘোষণা করে দিয়েছেন তিনি। কেন করেছিলেন এমন?
বেন স্টোকসের মুখেই শুনুন—‘আমি এটিকে (অস্ট্রেলিয়াকে) ধাক্কা দেওয়ার সময় হিসেবে দেখেছি। ড্রেসিংরুমে বলেছি, অন্য যেকোনো দলের বিপক্ষে ওই অবস্থানে থাকলে আমরা এমনটিই করতে চাইতাম। এটি অ্যাশেজ বলেই এক বছর ধরে ক্রিকেট যেভাবে খেলছি, সেটি আমি বদলাব না। কে জানে! হয়তো আমরা আরও ৪০ রান করতে পারতাম। হয়তো ঠিক পরের বলে জো আউট হতে পারত, পরের বলে ওলি আউট হতে পারত।’
আপনি বলতে পারেন, হেরে যাওয়ার পর এমন ব্যাখ্যা স্টোকস দিতেই পারেন। হয়তো এটি নিজেকে ‘রক্ষা’ করার একটা উপায় তাঁর। তবে এমন কথা অবশ্য তিনি বলে আসছেন অ্যাশেজের আগে থেকেই। এপ্রিলের শুরুতে স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাসের হুসেইন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘ধরো, তোমরা ২-১-এ এগিয়ে ওভালে (শেষ টেস্টে) গেলে। প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ৪৮০ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করবে?’
স্টোকস বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ!’ এরপর হাসতে হাসতে বলেছিলেন, ‘বিশেষ করে, যদি জিমি (অ্যান্ডারসন) বাকি থাকে ব্যাটিংয়ের জন্য! সে তো চলন্ত উইকেট!’
নাসের হুসেইন এরপর আরেকটি দৃশ্যকল্প তুলে ধরলেন, ‘ধরো, শেষ দিন, ৩০০ রানে এগিয়ে তোমরা, ৩ উইকেট পড়েছে। অ্যাশেজ জিততে ড্র হলেই চলবে, ২০০৫ সালের মতো। ইনিংস ঘোষণা করবে নাকি ব্যাটিং করে যাবে?’
‘নাহ, ঘোষণা করব ইনিংস’—উত্তর দিতে ভাবেননি স্টোকস। কারণ, ‘অ্যাশেজ বলে আমি বদলাব না। তাহলে তো নিজের প্রতি সৎ থাকলাম না।’
এজবাস্টনে যে উদ্দেশ্য বা আশায় স্টোকস প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিলেন, তা পূরণ হয়নি। সারা দিন ফিল্ডিংয়ে ক্লান্ত পা ‘প্রতারণা’ করেনি ডেভিড ওয়ার্নার বা উসমান খাজার সঙ্গে। নিরাপদে তাঁরা পার করে দিয়েছিলেন পড়ন্ত বিকেলটা। ‘বাজবল’-এর সঙ্গে মিনিট বিশেকের সে লড়াইয়ে জিতেছিলেন অস্ট্রেলীয় ওপেনাররা।
ওয়েলিংটনে অবশ্য স্টোকসের উদ্দেশ্য সফল হয়েছিল। ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর, সেঞ্চুরিয়ান রুটকে ক্রিজে রেখেই ইনিংস ঘোষণা করে দিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে। জেমস অ্যান্ডারসন এরপর সফল হয়েছিলেন প্রথম ওভারেই। যদিও সেবার কিছু রান বেশি তুলেছিল ইংল্যান্ড (৪৩৫), তবে উদ্দেশ্যটা যে একই ছিল, সেটি বলাই যায়। ইতিহাসের দ্বিতীয় দল হিসেবে ম্যাচটি ইংল্যান্ড হেরেছিল ১ রানে। নিউজিল্যান্ড জিতেছিল আবার ফলো-অনে পড়ে।
নিউজিল্যান্ডের তাসমান পাড়ের প্রতিবেশিদের কাছে এবার ইংল্যান্ডের হারের ব্যবধান ২ উইকেটের। যে টেস্টটি শুরু হয়েছিল জ্যাক ক্রলির মারা চার দিয়ে। অ্যাশেজের প্রথম বলের আলাদা একটা ইতিহাস হয়তো আছে, অথবা সিরিজের ফল নির্ধারিত হয়ে যাওয়ার পর প্রথম বলের তাৎপর্যও বেড়ে যায়। সবশেষ অ্যাশেজে যেমন অ্যারাউন্ড দ্য লেগে বোল্ড হয়েছিলেন ররি বার্নস।
২০০৬-০৭ মৌসুমে স্টিভ হার্মিসন প্রথম বলটি জাস্টিন ল্যাঙ্গারকে এমন বাইরে দিয়ে করেছিলেন, ব্যাটে না লেগেই উইকেটকিপারের বদলে সেটি গিয়েছিল প্রথম স্লিপের কাছে। বার্নসের বোল্ডে শুরু অ্যাশেজে ইংল্যান্ড হেরেছিল ৪-০-তে, হার্মিসনের ওয়াইড দিয়ে শুরু অ্যাশেজে ফল ছিল ৫-০। যেন শুরুতেই আভাস মিলেছিল, কী হতে চলেছে।
এবার ক্রলির ওই ড্রাইভে নাকি অস্ট্রেলিয়াকে একটা বার্তা দিয়েছে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলীয় বলে খেলার ধরনটা বদলাবে না তারা। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ‘বাজবল’ কেমন করে, সেটি ছিল দেখার বিষয়।
এজবাস্টনের পর হয়তো বলা হবে ইংল্যান্ডের অতি আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের বিপক্ষে চিরায়ত টেস্টই খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। যদিও অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডের এমন মনোভাবের ‘প্রতিক্রিয়া’ দেখিয়েছে প্রথম বল হওয়ার আগে থেকেই। ক্রলির বিপক্ষে কামিন্স প্রথম বলেই ফিল্ডার রেখেছিলেন ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। তৃতীয় ওভারে বেন ডাকেটের বিপক্ষে কামিন্স তিনজন রেখেছিলেন বাউন্ডারিতে। প্রথম দিন সকালে স্কট বোল্যান্ডের বলে স্টাম্পের ওপর উঠে এসেছিলেন উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারি!
টেস্টের বেশির ভাগ সময়ই ইংল্যান্ড যা করেছে (প্রোঅ্যাক্টিভ), অস্ট্রেলিয়া তার প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে (রিঅ্যাক্টিভ)। প্রথম দিনের অমন ইনিংস ঘোষণার পর শেষবেলায় সফল না হলেও পরদিন ঠিকই অস্ট্রেলিয়ার টেল-এন্ডারদের দ্রুত ফিরিয়ে লিড নিয়েছিল ইংল্যান্ড, দ্বিতীয় ইনিংসে বারবার উইকেট হারালেও ঠিকই ছুড়ে দিতে পেরেছিল চ্যালেঞ্জিং এক লক্ষ্য।
স্টোকসের মনে হয়েছে, ম্যাচের প্রায় পুরো সময় নিয়ন্ত্রণ ছিল তাঁদের কাছেই। সেটি যে ভুল বলেছেন, তা নয়। অস্ট্রেলিয়া সে অর্থে চড়াও হয়েছে শেষ দিনের শেষ বেলায় এসে। প্যাট কামিন্স ও নাথান লায়নের হাতে তখন আক্রমণ ছাড়া উপায়ও ছিল না, এ টেস্টে ড্র আর তখন অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিকল্প হিসেবেও ছিল না। তারা আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছে তখন।
কিন্তু স্টোকস কি দ্বিতীয় নতুন বলটি নিতে পারতেন আরও আগেই? ৮০তম ওভারটা স্টোকস নিজে মেডেন করেছিলেন। ধারাভাষ্যে মেল জোনস বলছিলেন, ইংল্যান্ড অধিনায়ক তাঁর কাজটি করে দিয়েছেন। ৮০তম ওভার শেষেই টেলিভিশন ক্যামেরা ধরল রিজার্ভ আম্পায়ার মাইক বার্নসের দিকে, দ্বিতীয় নতুন বলটা নিয়ে নামছেন তিনি।
কিন্তু সে বলটা স্টোকস নেননি। দিয়েছেন জো রুটকে। আগে একটি কঠিন আর একটি হাতে এসে পড়া ফিরতি ক্যাচের সুযোগ হাতছাড়া করা রুট ওই পুরোনো বলেই আরেকটি ফিরতি ক্যাচে ফিরিয়েছেন অ্যালেক্স ক্যারিকে। এরপরও স্টোকস নতুন বল নেননি।
এজবাস্টনের এ উইকেট ফ্ল্যাট, কিন্তু ঠিক দ্রুতগতির নয়। মানে বল ব্যাটে আসছে খুব ভালোভাবে, তা নয়। স্টুয়ার্ট ব্রড আগেই বলেছিলেন, এখানে রান করা বা উইকেট নেওয়া—কোনোটিই সহজ নয়। কামিন্স নিজেও ম্যাচ শেষে বলেছেন, তাঁদের মনে হয়নি উইকেটে তেমন কোনো দানব আছে। এটি আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল তাঁদের। রুটকে পুরোনো বলে করানো ‘বাড়তি’ ওভারে দুটি ছক্কাও নিশ্চিতভাবেই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে থাকবে তাঁর।
দ্বিতীয় নতুন বল মানেই শুধু সিম-সুইং নয়, সেটি ব্যাটে আসবে আরেকটু ভালোভাবে, ফলে কামিন্সদের জন্যও শট খেলা সহজ হবে। স্টোকস তাই একরকম জুয়াই খেলেছেন। শেষ পর্যন্ত টেল-এন্ডারদের বিপক্ষে নতুন বল নিতেই হয়েছে তাঁকে।
শুরুতে অফ স্টাম্পের বাইরে লেংথ আর ফুললেংথে করে, ড্রাইভে প্রলুব্ধ করে এজ পাওয়ার চেষ্টাই করছিলেন ব্রড–রবিনসনরা। তবে ফুললেংথে পেয়ে এমনকি নাথান লায়নও শট খেলছিলেন। সেই লায়ন-অস্ট্রেলিয়ার ‘লেজের’ সদস্য, দুই দিন আগেও যাঁদের ‘তিনজন ১১ নম্বর’ বলে ‘খাটো’ করেছিলেন রবিনসন। এরপর তাঁরা ঝুঁকেছেন শর্ট বলের দিকে।
স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেটে আপনার বিনিময়মূল্য রান ও উইকেট। স্টোকসের তখন উইকেট প্রয়োজন, কিন্তু হাতে রান বেশি নেই। ফিল্ডিং ছড়িয়ে দিয়েছেন, ক্যাচিং পজিশন বলতে তখন শুধু শর্ট লেগ আর স্লিপে একজন—এমন। হয়তো আশা করছিলেন ব্রড বা রবিনসনের কোনো ‘জাদুকরি’ ডেলিভারি, অথবা কামিন্স-লায়নদের ভুল। দুটির একটিও হয়নি।
অবশ্য তারও আগে, পুরোনো বলেই যদি রুট ওই ফিরতি ক্যাচগুলোর একটি নিতে পারতেন, অথবা স্টোকস স্কয়ার লেগে দুর্দান্ত ‘ওভারহেড’ ক্যাচে ফিরিয়ে আনতে পারতেন ২০১৯ বিশ্বকাপের ওই স্মৃতি—তাহলে হয়তো ফল ভিন্ন হতে পারত। শুধু শেষ দিন নয়, ম্যাচজুড়েই ইংল্যান্ড সুযোগ হাতছাড়া করেছে।
জনি বেয়ারস্টো স্টাম্পিং মিস করেছেন, ক্যাচ নিতে পারেননি, নো বলে উইকেট কাটা পড়েছে। তৃতীয় দিনের বৃষ্টি এসেছে বড় অসময়ে। আবার জ্যাক লিচের চোটে দুই বছর লাল বল হাতে না তোলা মঈন আলীকে ফিরিয়ে আনতে হয়েছে জরুরি তলবে—এমন সিদ্ধান্ত তো আছেই। দিন শেষে সাম্প্রতিক সময়ে লিচের বিকল্প নেই ইংল্যান্ডের, কিছুটা বাধ্য হয়েই হাঁটতে হয়েছে এ পথে। মঈনের পারফরম্যান্স কেমন, সেটি অবশ্য একটু ভিন্ন আলোচনাই।
তবে দিন শেষে ক্রিকেটে ভাগ্য ব্যাপারটি বড় একটি অনুষঙ্গ। সেটি অস্ট্রেলিয়া খুব ভালোভাবেই জানে, অন্তত টেস্ট ক্রিকেটে। ২০১৯ সালের হেডিংলিতে যদি আম্পায়ার জোয়েল উইলসন স্টোকসকে এলবিডব্লুটা দিতেন, তার আগেই যদি রিভিউটা অমন হেলায় অস্ট্রেলিয়া নষ্ট না করত, নিশ্চিত রান আউটের সুযোগটা যদি মিস না করতেন লায়ন—তাহলে হয়তো ফলটা হতো ভিন্ন। অথবা ২০০৫ সালের এজবাস্টনে স্টিভ হার্মিসনের লো ফুলটসটায় মারা ব্রেট লির শট ৫ মিটার এদিক-ওদিক হতো, তাহলে হয়তো ২ রানের আক্ষেপে পুড়তে হতো না অস্ট্রেলিয়াকে।
ক্রিকেটের মতো খেলায় এসব সূক্ষ্ণ ব্যাপার পার্থক্য গড়ে দেবেই, কোনো দিন এসব আপনার পক্ষে আসবে, কোনো দিন আসবে না। সেটি স্টোকসও জানেন, কামিন্সও জানেন।
তবে যা আপনার নিয়ন্ত্রণে, সেটি সবকিছু নিজের মতো করে করার ব্যাপার। স্টোকস বা এই ইংল্যান্ড নিজেদের আলাদা দাবি করেন এখানেই। শুধু দাবি করেন না, গত এক বছরে সেটি তাঁরা দেখিয়েছেনও। দিন শেষে তাঁরা বিনোদন দিতে চান, দিন শেষে ড্র তাঁদের কাছে কোনো অপশন নয়। এ জায়গায় তাঁরা নিজেদের সফল দাবি করতেই পারেন।
হয়তো এ কারণেই এজবাস্টন এভাবে ফিরে আসে। ইংল্যান্ডের সন্ধ্যায় গ্যারি লিনেকার বা অস্ট্রেলিয়ার গভীর রাতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এ টেস্ট নিয়ে টুইট করেন। এবি ডি ভিলিয়ার্স বলেন, তিনি টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডে ভালোবাসলেও নিজের সন্তানদের ঘুমাতে যাওয়ার সময় পিছিয়ে দেবেন শুধু এমন টেস্ট দেখার জন্য।
স্টোকস তাই ম্যাচ শেষে বিবিসির ইশা গুহ ও মাইকেল ভনের সঙ্গে হাসতে হাসতে কথা বলতে পারেন এমন একটা হারের পরও। ভনকে মনে করিয়ে দেন, ২০০৫ সালে তাঁরাও তো প্রথম ম্যাচ হেরেছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রুট মনে করিয়ে দেন, তাঁরা বিনোদন দিতে চান, ফল আসবে ফলের মতো। বিনোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা তো সফল।
তাহলে কি জয়-পরাজয়ে কিছু আসে যায় না? শুধু ক্রিকেট কেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক যেকোনো খেলায় জয়-পরাজয়েই পার্থক্যটা করা হয় দিন শেষে। স্টোকসরাও সেটি জানেন, ‘আমরা যদি এমন ম্যাচ খেলি এবং হারি, তাহলে অবশ্যই সেটি বিধ্বস্ত করার মতো। এ মুহূর্তে আবেগ বেশ নাড়া দিয়ে গেছে আমাকে। তবে এটিই খেলা, আর বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর আবেগ।’
তাহলে, সেই যে স্টোকস অ্যাশেজ শুরুর আগেই বলে রেখেছেন, ‘আমরা এসব ফেলে এগোব, রাতে ঘুমাব, পরদিন জাগব। আশা করি, সূর্য আগের মতোই উষ্ণতা ছড়াবে, আমরা আবার এই কাজটাই করব।’
তাহলে, স্টোকসরা বলছেন—দেখা হবে লর্ডসে। আপনি হয়তো আনন্দ পাবেন, পর্দার সামনে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হবেন। স্টোকস আর ইংল্যান্ডের ট্যাকটিকস নিয়ে আলোচনা করবেন। কাজে এলে প্রশংসা করবেন, বিপক্ষে গেলে সমালোচনা। হয়তো আবারও ইংল্যান্ডের জন্য ফিরে আসবে সেই ওয়েলিংটন, এই এজবাস্টন। অথবা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ‘গেল গেল’ রব ওঠার পরও ইংল্যান্ড নিজেদের মতো খেলেই জিতবে। বদলে দিতে চাইবে টেস্ট ক্রিকেট।
শুধু জয়-পরাজয়, শুধু অ্যাশেজের ফল দিয়ে এই ইংল্যান্ড আর স্টোকসকে বিচার করবেন কি না, তার ভার আপনার ওপরই।