১৭ আগস্ট থেকে গত বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশন স্কিম বা কর্মসূচিতে চাঁদা দিয়েছেন মোট ৮ হাজার ২৩১ জন। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা নামের চারটি আলাদা পেনশন কর্মসূচি চালু হয়েছে। আরও দুটি কর্মসূচি চালুর চিন্তা করছে সরকার।
সূত্রগুলো জানায়, গতকাল সকাল পর্যন্ত যত ব্যক্তি চাঁদা দিয়েছেন, তার মধ্যে প্রগতি কর্মসূচির আওতায় ৪ হাজার ৩৭১ জন, সুরক্ষায় ২ হাজার ৭৪১, সমতায় ৯১০ ও প্রবাস কর্মসূচিতে চাঁদা দিয়েছেন ২০৯ জন।
পেনশনের কর্মসূচিগুলোর মধ্যে প্রবাস কর্মসূচিতে সাড়া কম পাচ্ছে সরকার। এ জন্য কর্মসূচিটিকে ঘিরে নতুন করে ভাবা হচ্ছে সরকারের দিক থেকে। দেশে প্রবাসী আয়ে (রেমিট্যান্স) যে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে, তা দেওয়া হতে পারে এ পেনশন কর্মসূচির চাঁদার বিপরীতেও। গত জুলাইয়ের সরকারি হিসাবে, ১ কোটি ৪৯ লাখের বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত। কর্মসূচিটি তাঁদের জন্য।
এদিকে নিবন্ধনের পর চাঁদা দিলে অন্য তিন কর্মসূচি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হলেও সমতা কর্মসূচির ক্ষেত্রে তা হতে একটু দেরি হবে। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করার পরই তা চূড়ান্ত হবে। তবে চূড়ান্ত না হলেও এ কর্মসূচির আওতায় পরের মাসের চাঁদা দেওয়া যাবে। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় কেউ কোনো ভাতা পেয়ে থাকলে এ কর্মসূচিতে যুক্ত হওয়া যাবে না। সমতা কর্মসূচিটি দরিদ্র মানুষের জন্য, যাঁদের বার্ষিক আয় ৬০ হাজার টাকার কম। এ কর্মসূচিতে চাঁদার অর্ধেক টাকা দেবে সরকার। তাই কোনো ভাতাভোগী যাতে এ কর্মসূচিতে যুক্ত না হন, সে জন্যই মূলত যাচাই-বাছাই করা হবে।
সমতা কর্মসূচিতে চাঁদার হার একটিই, আর তা হচ্ছে ৫০০ টাকা। প্রতি চাঁদা দাতার বিপরীতে সরকার অনুদান দেবে আরও ৫০০ টাকা করে।
সমতা কর্মসূচিতে ১৮ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ ৪২ বছর কেউ চাঁদা দিলে ৬০ বছরের পর থেকে চাঁদা দাতা মাসিক পেনশন পাবেন ৩৪ হাজার ৪৬৫ টাকা করে।
চাঁদা দেওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের সঙ্গেই চুক্তি করেছে পেনশন কর্তৃপক্ষ। উদ্বোধনের পর অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংকের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে। সেবা দেওয়ার কাজটিকে আরও সহজ ও মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে ভবিষ্যতে বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গেও চুক্তি হওয়ার আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে তিন দিন আগে দেশের ৬৪ জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে জুম বৈঠক করেছে পেনশন কর্তৃপক্ষ। ডিসিদের বলা হয়, এ কর্মসূচি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নে মানুষকে সহযোগিতা করতে হবে।
পেনশন কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা জানান, ‘নিবন্ধন অনেকেই করছেন। কিন্তু নিবন্ধনকে আমরা আমলে নিচ্ছি না। আমরা দেখছি, প্রকৃতপক্ষে চাঁদা দিয়েছেন কতজন। চাঁদা দাতাই হচ্ছে প্রকৃত হিসাব, নিবন্ধনকারী নয়। আগ্রহীদের অনেকে নিবন্ধন করা যাচ্ছে কি না, তা পরীক্ষা করার জন্যও নিবন্ধন করেন।’