শক্তিশালী তবে ‘ক্লান্ত’ লেবানন, চমকের আশায় জামালরা

0
240
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে লেবানন পরীক্ষার আগে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াদের অনুশীলন।

গল্পটা সুখের, গল্পটা লেবানন বধের। ২০১১ সালের ২৮ জুলাই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে লেবাননের বিপক্ষে দুই গোলের ঐতিহাসিক জয়ের পুরোনো স্মৃতিগুলো নতুন করে আলোচনায় বাংলাদেশের ফুটবলে। বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তেভেরা স্টেডিয়ামে আজ বিকেল ৪টায় লেবাননের বিপক্ষে এমিলি-মিঠুন হওয়ার সুযোগ সুমন-রাকিবদের।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান এবং র‍্যাঙ্কিংয়ের তফাতটা আকাশচুম্বী; বাংলাদেশ ১৯২ আর লেবানন ৯৯। এবারের সাফে আট দলের মধ্যে র‍্যাঙ্কিংয়ের বিচারে তারাই সেরা, সবচেয়ে শক্তিশালী। তাই এক যুগ আগের স্মৃতিটা ফিরে এলেও জামাল ভূঁইয়ারা তার পুনরাবৃত্তির স্বপ্ন দেখছেন না। আবার একেবারে হারার আগে হেরেও যাচ্ছেন না। বরং টানা ম্যাচ খেলা ‘ক্লান্ত’ লেবাননে চমকের আশা ২০০৩ সালের পর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিততে না পারা বাংলাদেশের। ৩ পয়েন্ট না হলেও অন্তত ১ পয়েন্ট পেয়ে সাফ যাত্রা শুরুর প্রত্যাশা কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দলের।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর কাছে সাফ মানেই এই অঞ্চলের ‘বিশ্বকাপ’। একসময় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানাত বাংলাদেশ। ২০০৯ সালের পর তো এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বের চৌকাঠ পার হতে পারেনি। সাফের বাইরের দুই দেশ লেবানন এবং কুয়েত যুক্ত হওয়ায় এবার সেমিফাইনাল আরও কঠিন। সেই কঠিন অভিযানে প্রথম বাধা পশ্চিম এশিয়ার দেশ লেবানন।

গ্রুপ ‘বি’তে শুধু এই লেবাননই নয়, বাংলাদেশের জন্য মাথাব্যথার কারণ মালদ্বীপ। অবশ্য পুরো দল আজকের ম্যাচ নিয়েই ভাবছে। কারণ, বড় কোনো লক্ষ্য নির্দিষ্ট না করা জামালরা যে ম্যাচ বাই ম্যাচ ধরে এগিয়ে যেতে চান, ‘এবার লেবানন অনেক শক্তিশালী। একটা দিক চিন্তা করলে তারা কিন্তু ক্লান্ত। সাফের আগে ১০ ম্যাচ খেলার একটা ধকল তো আছেই। এটা আমাদের জন্য সুবিধা।’

অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার এই আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য দলের সবার কানে পৌঁছে গেছে। বেশি ম্যাচ খেলা যদি ‘ক্লান্ত’ হয়, অন্যদিক বিবেচনা করলে এটা ভালো প্রস্তুতিও বটে। কম্বোডিয়ায় গিয়ে তাদের জাতীয় দলের সঙ্গে এবং স্থানীয় ক্লাব টিফফি আর্মির সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছেন আনিসুর রহমান জিকোরা। আর লেবানন প্রস্তুতি নিয়েছে উড়িষ্যায় চারজাতি ইন্টারকন্টিনেন্টাল টুর্নামেন্ট খেলে। যেখানে ভারতের কাছে হেরে রানার্সআপ হলেও কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কাজটা ভালোভাবেই রপ্ত করেছে আলেকজান্ডারের দল। জামাল ভূঁইয়ার উল্টোটাই ভাবছেন বাংলাদেশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা, ‘আমাদের জন্য মূল বিষয় হলো, নিজেদের ওপর মনোযোগ দেওয়া। বিশেষ করে দুই সপ্তাহের যে প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। লেবাননও বেশ কিছু ম্যাচ খেলে এসেছে, যা তাদের প্রথম ম্যাচের জন্য ভালোভাবেই প্রস্তুত করেছে। আমাদের জন্য এটি নিশ্চিতভাবেই খুব কঠিন লড়াই হতে চলেছে।’

কঠিন এই লড়াইয়ে সবুজ গালিচায় বড় পরীক্ষা দিতে হবে তপু বর্মণ, বিশ্বনাথ ঘোষ এবং গোলরক্ষক জিকোকে। লেবানন খেলবে আক্রমণাত্মক কৌশলে, আর বাংলাদেশ খেলবে রক্ষণাত্মক। সেই হিসেবে ৫-৩-২ ফরমেশনে একাদশ সাজাতে পারেন ক্যাবরেরা। সেই হিসেবে তপু, বিশ্বনাথ, তারিক কাজি, রহমত মিয়াকে শুরুর একাদশে দেখা যেতে পারে। আলমগীর মোল্লা কিংবা মেহেদি হাসান– এ দু’জনের একজনকে বেছে নেবেন বাংলাদেশ কোচ। কিন্তু বাংলাদেশের বড় দুর্ভাবনা হলো আক্রমণভাগ। কম্বোডিয়ার বিপক্ষে গোলদাতা মজিবুর রহমান জনি খেলেন মাঝমাঠে। আক্রমণভাগে সুমন রেজা, রাকিব হোসেন এখনও আস্থার প্রতীক হয়ে উঠতে পারেননি। সাফের মতো বড় মঞ্চে ফরোয়ার্ডদের মেলে ধরার সুযোগ। সঙ্গে ২০১১ সালকে ফিরিয়ে আনার হাতছানি জামালদের সামনে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.