ইউক্রেনে ব্যাপক হারে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ফলে মস্কোর ভান্ডারে কমে এসেছে এসব সমরাস্ত্র। এ ঘাটতি কমাতে গোপনে প্রায় ৪০ হাজার রকেট উৎপাদন করে রাশিয়ায় পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল মিসর। যুক্তরাষ্ট্রের ফাঁস হওয়া গোয়েন্দা নথির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া গোয়েন্দা নথিগুলো গত ১৭ ফেব্রুয়ারির। ওই নথি অনুযায়ী, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি দেশটির শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে তাঁরা রাশিয়াকে রকেটের পাশাপাশি কামানের গোলা ও বারুদ সরবরাহের বিষয়েও আলোচনা করেন। ‘পশ্চিমাদের সঙ্গে ঝামেলা এড়াতে’ এ পরিকল্পনার কথা গোপন রাখতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন সিসি।
মিসরের এ পরিকল্পনা হতবাক করে দিয়েছে মার্কিন রাজনীতিক ও কর্মকর্তাদের। দেশটির কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের জুনিয়র সিনেটর ক্রিস মারফি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘রাশিয়ার জন্য মিসর গোপনে রকেট তৈরি করছে, যেগুলো হয়তো ইউক্রেনে ব্যবহার করা হবে—এ তথ্য যদি সত্যি হয়, তাহলে আমাদের দুই দেশের (যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর) সম্পর্ক নিয়ে গুরুত্বসহকারে বোঝাপড়া করতে হবে।’
ফাঁস হওয়া নথিগুলো সঠিক কি না, তা যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি নিশ্চিত করতে রাজি হননি বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ। তবে নথিগুলো সাধারণ মানুষের জন্য নয় বলে সতর্ক করেছেন তিনি। এর কারণও অবশ্য আছে। গোপন এসব নথি ওয়াশিংটন ও কায়রোর সম্পর্কের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ মিসরের সঙ্গে অতি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।
এর আগে গত জানুয়ারিতে কায়রোতে সিসির সঙ্গে দেখা করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। পরে এক বিবৃতিতে ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার যে অর্থনৈতিক প্রভাব মিসর মোকাবিলা করছে, তার জন্য দেশটির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সংহতি’ প্রকাশ করেন ব্লিঙ্কেন।
এ ছাড়া গত বছরের নভেম্বরে সিসির সঙ্গে দেখা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সে সময় তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মিসরের অবস্থানের জন্য সিসির প্রশংসা করেছিলেন।