রমজানের আগে সব জিম্মির মুক্তি চায় ইসরায়েল

0
66
প্রায় ১৭ লাখ বাস্তহারা ফিলিস্তিনির বেশিরভাগই আশ্রয় নিয়েছে রাফাহ এলাকায়।

রমজান মাস শুরুর আগে যদি হামাস সব জিম্মিকে মুক্তি না দেয়, তবে গাজার রাফাহ অঞ্চলে জোরেশোরে অভিযান শুরু করবে ইসরায়েল, ইসরায়েলি যুদ্ধ সংক্রান্ত মন্ত্রীসভার সদস্য বেনি গান্টজ বলেছেন।

‘বিশ্ব জানে, আর হামাস নেতারা নিশ্চয়ই জানে, যদি রমজানের আগে জিম্মিরা বাড়ি না ফেরে, তবে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়বে সর্বত্র, এমনকি রাফাহ এলাকায়ও,’ অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনী প্রধান গান্টজ রবিবার জেরুজালেমে এক সম্মেলনে এ কথা বলেন।

মুসলিমদের পবিত্র মাস রমজান শুরু হতে যাচ্ছে মার্চের ১০ তারিখ।

এই প্রথম রাফাহ আক্রমণের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করলো ইসরায়েল। প্রায় ১৭ লাখ বাস্তহারা ফিলিস্তিনির বেশিরভাগই আশ্রয় নিয়েছে রাফাহ এলাকায়। গত চার-মাসব্যপী যুদ্ধে গাজার কেবল এই একটি বড় শহরেই এখনো ইসরায়েলি যোদ্ধাদের প্রবেশ করা বাদ আছে।

ইসরায়েলের এ হুমকির পর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য রাষ্ট্র এবং সাহায্য সংস্থাগুলোর মাঝে। রাফাহ আক্রমণ থেকে বিরত থাকতে ইসরায়েলকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছে, এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরাসরি রাফাহ আক্রমণের বিপক্ষে। তা সত্ত্বেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রাফাহ আক্রমণের প্রশ্নে অটল।

রবিবার জেরুসালেমের ওই একই সম্মেলনে নেতানিয়াহু দাবি করেন জিম্মি মুক্তির সমঝোতা হোক আর না হোক, হামাসের সাথে যুদ্ধে নিরঙ্কুশ বিজয় আনতে শেষ দেখে ছাড়বেন তিনি।

অন্যদিকে গান্টজ বলেন, রাফাহ শহরে অভিযান চালানোর প্রক্রিয়াটি নিয়মের মধ্যে দিয়ে হবে, মার্কিন ও মিশরীয়দের সাথে আলোচনার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের সে শহর ছাড়তে সাহায্য করা হবে এবং ‘হতাহতের পরিমাণ যথাসম্ভব কমিয়ে আনা হবে।’

কিন্তু রাফাহ শহর ছেড়ে যুদ্ধবিদ্ধস্ত গাজার কোথায় ঠাঁই নেবেন ফিলিস্তিনি উদবাস্তুরা, সে প্রশ্নের কোনো পরিষ্কার উত্তর পাওয়া যায়নি।

বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে জিম্মি মুক্তি ও যুদ্ধবিরতির সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলছে, যদিও তা ফলপ্রসূ হয়নি। এমনকি মধ্যস্থতাকারী কাতার জানিয়েছে আলোচনায় কোনো সুফল আসার সম্ভাবনা এখন ক্ষীণ।

ওদিকে ইসরায়েলের মিত্র এবং সামরিক সহায়তাকারী যুক্তরাষ্ট্র চাইছে গাজায় ছয়-সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি, এবং এর বিনিময়ে গাজায় বন্দী ১৩০ জিম্মির মুক্তি। এর মাঝে ৩০ জন ইতিমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েল দাবি করেছে বেশকিছু জিম্মি এবং হামাসের নেতারা রাফাহ শহরে অবস্থান করছেন।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায়। এতে নিহত হন ১ হাজার ১৩৯ জন। আহত হওয়ার সংখ্যা ৮ হাজার ৭৩০। এ হিসাব ইসরায়েল সরকারের।

হামাসের হামলার জবাবে ৭ অক্টোবরই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তাদের হামলা থেকে মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আশ্রয়শিবির কিছুই বাদ যায়নি।

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৮৫৮ জনে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৬৮ হাজার ৬৬৭ জন, যার বেশিরভাগ নারী ও শিশু। উদ্বাস্তু হয়েছে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ১৮ লাখের বেশি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.