ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় গণনা শুরু হয়। ভোটের দিনের মতো গণনাকে কেন্দ্র করেও বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষিপ্ত সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।
গণনার শুরুর প্রথম দুই ঘণ্টায় একাধিক কেন্দ্রে থেকে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের এগিয়ে থাকার খবর মিলেছে। ফল ঘোষণা হওয়ার আগেই একাধিক জেলায় জয়ের আনন্দে মেতে উঠেছে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। কোথাও আবির খেলা, কোথাও মিষ্টি মুখ চলছে। কোথাও আবার আতশবাজি ফাটাতে শুরু করে।
শনিবার গোটা রাজ্যে ৩৩১৭টি গ্রাম সভা (৬৩,২২৯ আসন), ৩৪১টি পঞ্চায়েত সমিতি (৯৭৩০ আসন) এবং ২২ জেলা পরিষদে (৯২৮ আসন) ভোট অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ওই নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা দেখা যায় অধিকাংশ জেলায়। ছাপ্পা ভোট, ভোট লুট, ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেওয়া, ভোটারদের প্রভাবিত করা, ভয় দেখানো, মারধর, বোমা, গুলি চালানোর মতো ঘটনা ঘটে। কেবলমাত্র ভোটের দিনই সহিংসতায় মৃত্যু হয় ১৫ জনের। সেই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সোমবার রাজ্যের ৬৯৬টি বুথে পুনঃনির্বাচন নেয়।
এদিন গণনা শুরুর পরই বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্ষিপ্ত সহিংসতার খবর আসতে থাকে। খবর পেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড়ের কাঁঠালিয়া হাইস্কুলে গণনা কেন্দ্র পরিদর্শনে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ভাঙড়ের ওই গণনা কেন্দ্রের সামনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন তা খতিয়ে দেখেন।
এদিকে ভোট গণনার শুরুতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে ডায়মন্ড হারবার ফকির চাঁদ কলেজ। বিরোধীদের কাউন্টিং হলে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, ফকিরচাঁদ কলেজ কাউনটিং সেন্টারে ঢোকার মুখে তৃণমূল কর্মীরা তাদের ঢুকতে দিচ্ছে না। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সড়ক অবরোধ করেন তারা। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ভোট গণনা কেন্দ্রে আসার পথে প্রার্থী ও তার স্বামীকে রাস্তায় আটকে মারধর ও এজেন্ট কার্ড কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠে সিপিআইএমের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার রুকুনপুর হাই স্কুল মোড় সংলগ্ন এলাকায়।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় গরবেতা দাঁতন পিংলায় বিজেপি প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের গণনা কেন্দ্রে যেতেই দেয়নি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। এর প্রতিবাদে জেলা শাসকের দপ্তরে অনশনে বসেন বিজেপি নেতাকর্মীরা।
গণনা শুরুর পরই ক্ষমতাসীন-বিরোধী দল সংঘর্ষে উত্তেজনা দেখা দেয় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত ব্লক-২ নবীনচন্দ্র হাই স্কুলে। এই জেলার রোহান্ডা চন্ডিগড়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে আইএসএফের প্রার্থীর তীব্র বচসা হয়। এই জেলারই দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের সংঘর্ষ বাঁধে। তৃণমূল প্রার্থী আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
হুগলি জেলার জাঙ্গিপাড়া ভোট গণনা কেন্দ্রে ভোট চুরির অভিযোগে ফুরফুরা শরীফ তালতলা হাটে সড়ক অবরোধ করে আইএসএফ। জাঙ্গিপাড়ায় গণনা কেন্দ্রের সামনে তৃণমূল ও সিপিএমের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে সিপিএইএমের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে সিপিআইএম কর্মী ও কাউন্টিং এজেন্টদের উপর লাঠিচার্জ করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার রুকুনপুর হাই স্কুল মোড় এলাকায় ভোট গণনা কেন্দ্রে আসার পথে তৃণমূল মহিলা প্রার্থী ও তার স্বামীকে রাস্তায় আটকে মারধর, গাড়ি ভাঙচুর ও এজেন্ট কার্ড কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিপিআইএমের বিরুদ্ধে।