ভারতে যেসব ওষুধের পেটেন্ট বা মেধাস্বত্ব শেষ হয়ে যাবে বা শেষের কাছাকাছি চলে যাবে, সেসব ওষুধের দাম অর্ধেক কমে যাবে। ভারতের সরকারি এক নথির সূত্রে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
সংবাদে বলা হয়েছে, মেধাস্বত্ব শেষ হওয়ার পরে ওষুধের দাম ৫০ শতাংশ কমে যাবে। এর এক বছর পর বিভিন্ন ওষুধের জন্য যে হোলসেল প্রাইজ ইনডেক্স বা পাইকারি মূল্যসূচক করা হয়েছে, তার সাপেক্ষে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারিত হবে। ভারতের ওষুধ মূল্য নিয়ন্ত্রণ সংশোধনী ২০২৩-এ সরকারের এই নীতি পরিবর্তন দেখা যাবে।
কয়েক বছর ধরে ভারত সরকার এই নীতি অনুসরণ করছে এবং সেটা এখন আনুষ্ঠানিকতা পেল বলে জানাচ্ছেন ওষুধশিল্পর সঙ্গে জড়িত এক বিশেষজ্ঞ। সাধারণত দেখা যায়, কোনো ওষুধের একচেটিয়া ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে, অর্থাৎ বাজারে অন্যান্য জেনেরিক ওষুধ এলে দাম ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
সরকারের এই সিদ্ধান্ত বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানিগুলোর জন্য একধরনের দিকনির্দেশনা হিসেবেও কাজ করবে; অর্থাৎ বহুল প্রচলিত ওষুধের মেধাস্বত্ব শেষ হয়ে গেলে তারা সেগুলোর দাম কত নির্ধারণ করতে পারে, সে বিষয়ে। এ নিয়ে গত কয়েক বছরে ভারত সরকারের সঙ্গে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মতভেদ হয়েছে।
গত কয়েক বছরে দেখা গেছে, ভারতে ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগের যেসব ওষুধের মেধাস্বত্ব শেষ হয়েছে, সেগুলোর দাম অনেকটাই কমে গেছে। এরপর ভারতের জাতীয় ওষুধ মূল্য নির্ধারণ কর্তৃপক্ষ সেসব ওষুধের দামের সীমা বেঁধে দিয়েছে, যাতে সেগুলো মানুষের আয়ত্তের মধ্যে থাকে।
মেধাস্বত্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পর উচ্চ মানের জেনেরিক ওষুধ বাজারে এলে ওষুধের দাম অনেকটাই কমে আসবে। এতে স্বাস্থ্যসেবা মানুষের আরও নাগালের মধ্যে আসবে। চিকিৎসা নাগালের মধ্যে আসবে।
ভারতের এক স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞ টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, ভারতের বাজার অনেক বড়, ভালো ওষুধের কাটতি থাকে, ফলে ভালো কোম্পানিগুলো যাদের উদ্ভাবনী শক্তি আছে, তারা ভালো করবে।
তবে যেসব ওষুধের মেধাস্বত্ব আছে, সেগুলোর বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি। সে জন্য এ বিষয়ে নীতিও ঠিক হয়নি। যদিও সরকার আগে এ নিয়ে একাধিক কমিটি করেছে, মূল্য নির্ধারণের পদ্ধতি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে কিছু বেরিয়ে আসেনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত আলোচনার পরও যেসব ওষুধের মেধাস্বত্ব আছে, সেগুলোর দাম সাধারণের নাগালের বাইরে থাকবে।