ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনারের সেনাদের সরকারিভাবে পূর্ণ অর্থায়ন করা হতো বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর হিসাবে, শুধু বেতন ও বোনাস বাবদ ২০২২ সালের মে মাস থেকে গত মে পর্যন্ত ভাগনারকে ৮৬ দশমিক ২৬২ বিলিয়ন রুবল (১০০ কোটি মার্কিন ডলার) দিয়েছে রাশিয়া।
ভ্লাদিমির পুতিন আরও বলেছেন, ‘ভাগনারকে কীভাবে সরকারিভাবে বরাদ্দ করা এই অর্থ দেওয়া হয়েছে এবং ভাগনারপ্রধান সরকারি এই অর্থ কীভাবে ব্যয় করেছেন, তা কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখবে।’
বিদ্রোহের পর পুতিন বলেন, ‘আমরা সব সময় ভাগনার যোদ্ধা ও তাঁদের কমান্ডারদের সম্মান জানিয়েছি। কারণ, তাঁরা সব সময় সত্যিকার অর্থেই সাহসিকতা ও বীরত্বের প্রমাণ দিয়ে এসেছেন।’
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকারি বাজেট থেকে ভাগনারকে এ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পুতিন। গত ২৪ জুন রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ভাগনার। এ ঘটনা রাশিয়াসহ সারা বিশ্বে আলোড়ন তৈরি হয়। দুই দিনের উত্তেজনা-অনিশ্চয়তার পর সমঝোতা হলে বিদ্রোহের সমাপ্তি টানেন ভাগনারপ্রধান ও পুতিনের একসময়ের মিত্র হিসেবে পরিচিত ইয়েভগেনি প্রিগোশিন। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় এই সমঝোতার পরই বেলারুশে যান প্রিগোশিন।
ভাগনারের ব্যর্থ বিদ্রোহের পর রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভাগনারের সেনাদের নিরস্ত্র করা হবে। তবে ক্ষণিকের এ বিদ্রোহচেষ্টার কারণে কোনো ভাগনার সেনাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে না।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভাগনারের কাছে ভারী যেসব অস্ত্র ও সরঞ্জাম রয়েছে, সেগুলো রাশিয়ার সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুতি চলছে। রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি বলেছে, সেই বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার হয়েছে।
এফএসবি জানিয়েছে, সশস্ত্র বিদ্রোহের জন্য ভাগনার সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে ক্ষণিকের বিদ্রোহে অপরাধ সংঘটিত হওয়ায় মামলাগুলো তুলে নেওয়া হয়।
ভাগনারের বিদ্রোহের দুই দিন পর পুতিন বলেন, ভাগনার সেনারা হয় নিয়মিত সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারবেন, নয়তো তাঁরা বাড়ি অথবা বেলারুশে যেতে পারেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ভাগনার যোদ্ধার সিংহভাগই দেশপ্রেমী। ভুল বুঝিয়ে তাঁদের অপরাধের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।