বাজার কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব, ব্যবসায়ীরা চান নির্বাচন

0
213
যশোর জেলার মানচিত্র

যশোরের কেশবপুরের ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের সরসকাটি বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীরা ওই বাজারের কমিটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে এককাট্টা হয়েছেন। ওই কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ আখ্যা দিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোনো নির্বাচন ছাড়াই ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান তাঁর পছন্দের লোকজনদের নিয়ে ওই কমিটি করে দিয়েছেন। সেই কমিটির লোকদের দাপটে তাঁরা সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা করতে পারছেন না।

কমিটির নেতারা বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষণ না করে উল্টো নানা সময়ে দুর্ব্যবহারসহ দাপট দেখিয়ে চলেছেন। সেই সঙ্গে কোনো সমস্যা নিয়ে গেলে কমিটির নেতারা তা সমাধানের কোনো চেষ্টা করেন না বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ।

এ সমস্যা সমাধানে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীরা নির্বাচনের মাধ্যমে তাঁদের নেতা বাছাইয়ের ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন করেছেন। তাঁরা বাজার পরিচালনা কমিটির নির্বাচনের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে গত ১১ জুন স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাতে ১০২ জন ব্যবসায়ীর স্বাক্ষর রয়েছে।

বাজারের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, বাজারের মধ্যে একজন বালুর ব্যবসা করেন। একটু বাতাস হলেই ওই বালু উড়ে তাঁদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চলে আসে। তাঁদের চোখের মধ্যে বালু ঢুকে যায়। বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন তাঁর পক্ষ হয়ে তাঁকে বালুর ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছেন।

বাজারের মাংসের ব্যবসায়ী রবিউল ইসলামের কর্মচারী জিয়ামত হোসেন এক ক্রেতার কাছে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা পান। রবিউল ইসলাম এ বিষয়ে বাজারের কমিটির সাধারণ সম্পাদকের কাছে অভিযোগ করেন। তিনি কোনো ব্যবস্থা না দিয়ে দীর্ঘদিন ঘোরাচ্ছেন।

কাপড়ের ব্যবসায়ী জামাল উদ্দীন সরদার অভিযোগ করেন, তিনি একজন খরিদ্দারের কাছে টাকা পান। সেই টাকা আদায় করতে গেলে বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক খরিদ্দারের পক্ষ নেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, চেয়ারম্যানের পছন্দের লোকদের দিয়ে কমিটি করায় তাঁরা বাজারের ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখছেন না। তাঁরা দাপট দেখাচ্ছেন। তাঁরা কোনো পকেট কমিটি চান না। তাঁরা নির্বাচনের মাধ্যমে একটি কমিটি চান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, বাজার পরিচালনা করতে গেলে পক্ষ-বিপক্ষ থাকে। তিনি নিজেও বাজারের একজন সার ব্যবসায়ী। এখানে দাপট দেখানোর অভিযোগ সত্য নয়। মাংসের ব্যবসায়ীর সমস্যা সমাধানের বিষয়ে সাগরদাঁড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ওই ব্যবসায়ীর সমস্যা সমাধানে উদ্যোগে নেবেন বলে কিছু করা হয়নি। বালুর ব্যবসা বাজারের মধ্যে করা উচিত নয় বলে স্বীকার করে বলেন, তাঁকে বাজারের মধ্যে বালুর ব্যবসা না করার জন্য বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাজার কমিটির সভাপতি সিরাজুল মোল্ল্যা বলেন, অভিযোগ থাকলে চেয়ারম্যান দেখবেন। কারণ, চেয়ারম্যান কমিটি করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান যদি নির্বাচন চান, তাহলে হবে।

ত্রিমোহিনী ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলেন, ওই কমিটির মেয়াদ দুই বছরের জন্য। এখনো এক বছর কমিটির মেয়াদ রয়েছে। মেয়াদ শেষে না হলে কিছু করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে কেশবপুরের ইউএনও এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীদের একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঈদের পর উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানি করে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.