প্রোবক্স ডিএক্স মডেলের প্রাইভেট কারটি ভাড়ায় চালাতেন আশরাফুল ইসলাম। কার ভাড়ার টাকায় বৃদ্ধ মা-বাবাসহ আট সদস্যের পরিবারটি চলত। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছোট ভাইয়ের পড়াশোনার খরচও আসত এখান থেকেই। পরিবারের মুখে আহার জোগানো সেই প্রাইভেট কারটি ঈদের আগের রাতে চুরি হওয়ার পর দিশাহারা আশরাফুল ইসলাম (৩৬)।
২৮ জুন বগুড়া শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলদীঘি মধ্যপাড়া নিজ বাড়ির কাছ থেকে সাদা রংয়ের গাড়িটি চুরি হয়। প্রাইভেট কারটির সন্ধান পেতে পুলিশের কাছে ধরনা দিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত গাড়িটি উদ্ধার হয়নি। উপার্জনের একমাত্র মাধ্যমটি হারিয়ে ঈদ আনন্দও মাটি হয়েছে পরিবারটির।
গাড়িটি উদ্ধারে পুলিশের সহায়তা পেতে আশরাফুল ইসলামের ছোট ভাই মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান গতকাল রোববার বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সাইহান ওলিউল্লাহর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি গাড়িটি খুঁজে বের করতে সব ধরনের আইনি সহায়তার আশ্বাস দেন।
রাকিবুল হাসান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করে এখন চাকরির চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, তাঁর বাবা নেছার উদ্দিন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ জামে মসজিদের পেশা ইমাম ছিলেন। বাধ্যর্কজনিত কারণে এখন বেকার। মা আনোয়ারা বেগমও অসুস্থ। বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম বিয়ে করেছেন। স্ত্রী ছাড়াও দুটি সন্তান আছে। তাঁর উপার্জনে পরিবারের আট সদস্যের মুখে দুই বেলা আহার জোটে। আশরাফুলের পাঠানো টাকায় পড়ালেখা শেষে এখন চাকরি খুঁজছেন। ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষাও দিয়েছেন।
রাকিবুল হাসান আরও বলেন, একার উপার্জনে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো আশরাফুলকে। সংসার মুখের দিকে তাকিয়ে ধারদেনা করে একটি প্রোবক্স ডিএক্স মডেলের প্রাইভেট কার কেনেন। ভাড়ায় চালাতেন গাড়িটি। নিজেই চালক ছিলেন। ঈদের রাতে গাড়িটি বাড়ির অদূরে একটি স্থানে রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। রাতে কে বা কারা প্রাইভেট কারটি চুরি করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় শাজাহানপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তবে এখনো গাড়ির কোনো হদিস মেলেনি।
বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, গাড়ি চুরির বিষয়টি জানার পর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিবি পুলিশের ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাড়িটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।