উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। পাশাপাশি খাদ্যে ভেজাল রোধে দরকার দৃশ্যমান শাস্তি; বলছেন বিশেষজ্ঞরা। আর নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, জনসাধারণের অসচেতনতাসহ রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ, প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। এ অবস্থায় দেশে পালিত হচ্ছে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস।
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্নিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি, জীবনধারনের জন্য খাদ্যের গুরুত্ব যে কত তা অনুধাবন করতে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার এই লাইনগুলোই যথেষ্ট। একাবিংশ শতাব্দিতে বাংলাদেশে ক্ষুধা-দারিদ্রতা কমে এলেও এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপদ খাদ্য।
দেশে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যপণ্যের বিক্রি বন্ধে নানা সময়ে বিভিন্ন সংস্থা অভিযান, জেল-জরিমানা করলেও বাজারে তার তেমন কোন প্রভাব নেই। রাজধানীতে বিশুদ্ধ খাবার খুঁজে পাওয়া ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে।
কনজ্যুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাব’র সভাপতি গোলাম রহমানের মতে, ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিতে নিতে হবে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য যদি না হয় তাহলে খাদ্যই অসুস্থতার কারণ হতে পারে, এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। আইনকে আরও শক্ত করা প্রয়োজন, কিন্তু শক্ত করে যদি বাস্তবায়ন না হয় তা থেকে কোনো সুফল আসবে না। ভেজাল নকল করে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া, এর চেয়ে তো বড় অপরাধ কিছু হতে পারে না। সেই অপরাধের শাস্তিটা দৃশ্যমান হওয়া দরকার এবং দ্রুত হওয়া দরকার।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার বলছেন, দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা, এগুলো মোকাবিলা করাই বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, এখানে প্রশিক্ষণের ঘাটতি রয়েছে। নতুন একটা প্যারামিটার যখন পরীক্ষা করতে যাই, তখন অনেক প্রতিষ্ঠানে দেখা যায় এ প্যারামিটার পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। আইনের সঠিক প্রয়োগের জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। তখন আশা করি আমরা চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারবো। পাশাপাশি সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারবো।
বলা হয়ে থাকে, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে সারাবিশ্বে প্রতি দশজনের মধ্যে একজন খাদ্যবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। দেশে এখনই নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত না করা গেলে আগামী প্রজন্মকে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলা করতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।