ইরানের কারাবন্দি মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদিকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার কড়া সমালোচনা করেছে দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। কিছু প্রতিবেদনে নার্গিসের সঙ্গে ‘সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতা’ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
কোনো কোনো প্রতিবেদনের ভাষ্য, তিনি ইরানবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত। এদিকে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী নার্গিসকে শান্তিতে নোবেল দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘পক্ষপাতমূলক ও রাজনৈতিক’ বলে অভিহিত করেছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি। খবর এএফপির
শুক্রবার এ বছর শান্তিতে নোবেলজয়ী হিসেবে নার্গিস মোহাম্মদির (৫১) নাম ঘোষণা করা হয়েছে। নরওয়ের নোবেল কমিটি বলেছে, ইরানে নারীদের অধিকার আদায় ও সামাজিক সংস্কারের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হলো।
ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো নার্গিস ও তাঁর পুরস্কারপ্রাপ্তি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছে। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নার্গিস ‘সন্ত্রাসীগোষ্ঠীকে সহযোগিতা’ করেন। তিনি ‘নিজের দেশে বিশেষ করে ইরানি নারীদের কাছেও অচেনা’। এমন এক নারীকে পুরস্কার দেওয়ায় নোবেল কমিটির সমালোচনা করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
ইরনার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নার্গিস মোহাম্মদিকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়াটা ইরানের অভ্যন্তরে ‘হস্তক্ষেপমূলক কর্মকাণ্ড’। এর মধ্য দিয়ে ‘মানবাধিকারের ধারণাকে রাজনীতিকীকরণ করা হচ্ছে।’
ইরানের আরেক বার্তা সংস্থা তাসনিমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, নার্গিস ‘নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত’। ‘অপরাধীর’ হাতে নোবেল শান্তি পুরস্কার তুলে দেওয়ার ইতিহাস স্থাপন করায় প্রতিবেদনটিতে নোবেল কমিটির সমালোচনা করা হয়েছে।
গত দুই দশকে নার্গিসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণায় শামিল হওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে। ‘গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে নার্গিস এখন তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে বন্দি আছেন।
জেল থেকে মুক্তির আশা নেই তাঁর। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার বেদনা সহ্য করছেন। তবু ইরানে পরিবর্তনের আশা করেন নার্গিস। তবে সন্তানদের কাছে না পাওয়ার বেদনার কথা বলেন তিনি। গত মাসে এক সাক্ষাৎকারে এএফপিকে তিনি এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এভিন কারাগার থেকে এই অকুতোভয় নারী প্রশ্নের লিখিত উত্তর দেন।