বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র জানায়, বৈঠকে আমির হোসেন আমু শরিকদের জানান যে কিছু ইসলামি দল ১৪–দলীয় জোটে অন্তর্ভুক্তির জন্য তাঁর কাছে আসছে। এ বিষয়ে করণীয় কী?
এর বিরোধিতা করেন জোটের বাম ঘরানার দলগুলো এবং একমাত্র ধর্মভিত্তিক দল তরীকত ফেডারেশনের নেতারা। একটি শরিক দলের নেতা বৈঠকে বলেন, আগ্রহী দলগুলো স্বাধীনতাবিরোধী। তাদের কোনোভাবেই নেওয়া যাবে না।
সূত্র আরও জানায়, বিরোধী দলের কর্মসূচির পাল্টা যে কর্মসূচি আওয়ামী লীগ নিচ্ছে, তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। শরিক দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বৈঠকে বলেছেন, বিএনপির আন্দোলনের পাল্টা হিসেবে আওয়ামী লীগ কর্মসূচি পালন করছে—এতে তাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ একা একা ভোটের প্রচার শুরু করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে নৌকায় ভোট চাইছেন। তাহলে শরিকেরা কোথায় থাকল? এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী যেহেতু জোটেরও প্রধান, সে ক্ষেত্রে ঢাকার বাইরে তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ১৪ দলের শরিকদেরও রাখা উচিত।
এ বিষয়ে আমির হোসেন আমু বলেন, বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে জোটের যৌথ সভা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
একজন নেতা রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মানুষ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা শুনতে চায় না। কিছু চিহ্নিত ব্যবসায়ী বাজার নিয়ে কারসাজি করছে। মনে হচ্ছে সরকার তাদের বিষয়ে নমনীয়। এ জন্যই বাজার বেশি অস্থির হচ্ছে। দ্রব৵মূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে প্রায় সব শরিকই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বৈঠক শেষে আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় গ্যাস বিস্ফোরণ হচ্ছে এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। এগুলো নিয়ে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। সঙ্গে সঙ্গে অনেক সন্দেহও হয়। কারণ, বঙ্গবন্ধুর সময়েও থানা লুট, পাটের গুদামে আগুন—এ রকম বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সংঘটিত করা হতো। হঠাৎ করে প্রতি মাসে এসব ঘটার কারণে সন্দেহের সৃষ্টি হচ্ছে।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক অসিত বরণ রায়, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান প্রমুখ।