ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাট এলাকায় খিরু নদের ওপর থাকা বেইলি সেতুটি ভেঙে যাওয়ার দুই মাস পরও সংস্কার করা হয়নি। এ অবস্থায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহন এক লেন দিয়ে যাচ্ছে। ফলে ঈদযাত্রার সময় সড়কের এ অংশে যানজট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ।
গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ত্রিশাল চেলেরঘাট এলাকায় দেখা যায়, ভেঙে পড়া সেতুটির দুই পাশে মহাসড়ক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। দুই পাশে প্রতি তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এক লেনে চলাচল করছে দুই পাশের যানবাহন। ভেঙে পড়া বেইলি সেতুটির অপর পাশে থাকা সচল সেতু দিয়ে দুই পাশের গাড়ি চলাচল করছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা বলেন, ঈদের ছুটি শুরু হয়ে গেলে প্রচুর যানবাহন চলবে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। তখন এ এলাকায় যানজট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, পুরো সড়ক চওড়া। এ সেতুর কাছে এসে এক সারিতে সব গাড়ি পার হবে। তখন সেতু এলাকায় লম্বা সারি হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, ঈদে ছুটির সময় ওই সেতুটিতে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। তাঁরা আগাম প্রস্তুতি শুরু করেছেন। তবে সে প্রস্তুতি খুব কাজে আসবে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ, সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর ওই এলাকায় অন্তত তিন কিলোমিটার এলাকায় একটি লেনে চলছে দুই পাশের যানবাহন। এতে মাঝেমধ্যে যানজট হয়।
মাঈন উদ্দিন আরও বলেন, ঈদে যানবাহনের চাপ বাড়ার বিষয়টি মাথায় রেখে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, এক লেন হয়ে চলার দূরত্ব তিন কিলোমিটার থেকে কমিয়ে আনতে। অর্থাৎ ভেঙে যাওয়া সেতুটির ২০০ মিটার আগপর্যন্ত মহাসড়কের দুই লেন চালু রাখা দরকার। এরপর যেন যানবাহনগুলো এক লেনে চলাচল শুরু করে। এ জন্য সেতুর দুই পাশের মহাসড়কে ইট-বালু ফেলে কিছু সংস্কারকাজ করার দরকার ছিল। গতকাল রোববার থেকে সে কাজ শুরু হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ এপ্রিল বিকেলে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারবাহী ৪২ চাকার একটি লরি বেইলি সেতুটি পার হচ্ছিল। এ সময় সেতু ভেঙে খিরু নদের পড়ে যায়। লরিটির ওজন ছিল প্রায় ১০০ টন। অথচ ওই সেতুতে সর্বোচ্চ ৩৬ টন ওজনের যান চলাচলের নিয়ম ছিল। ওই বেইলি সেতুটি ১৯৮৮ সালে নির্মাণ করা হয়। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় লরি চালককে আসামি করে ৩০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা করে সওজ।
মামলাটি এখনো তদন্তাধীন বলে জানান সওজের ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সেতুটির সংস্কারকাজের কার্যাদেশ হয়েছে। তবে ঈদের আগে সংস্কার করা সম্ভব হবে না।
ঈদে যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে তাঁরা আনসার সদস্য নিয়োগ করেছেন। গত শনিবার থেকেই আনসার সদস্যরা সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া যানজট যাতে না হয়, সে লক্ষ্যে ওই এলাকায় সড়কটি সংস্কার করা হবে।