উত্তর কোরিয়ায় আটক মার্কিন সেনার ভাগ্যে কী ঘটছে

0
139
উত্তর কোরিয়ায় আটক ট্রাভিস কিং

উত্তর কোরিয়ায় আটক মার্কিন সেনা ট্রাভিস কিং-এর ভাগ্যে কি ঘটছে তা জানতে নানা চেষ্টা করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ ব্যাপারে এখনও সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। কারণ বৈরী এই দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের সরাসরি কোনো মাধ্যমও নেই। এ অবস্থায় ওই সেনা সদস্যের মুক্তি নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ। খবর-সিএনএন ও বিবিসি

মার্কিন সামরিক বাহিনী সমস্যাটি সমাধানের জন্য উত্তর কোরিয়া সরকারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। তবে দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এখনও উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাননি।

যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি সচিব ক্রিস্টিন ওয়ার্মুথ বলেন, আমরা তাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। যখন তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল মনে হয় তার সঙ্গে নৃশংস আচরণ করা হয়েছিল। এটি আমাদের খুবই উদ্বিগ্ন করে তোলে যে ট্রাভিস কিং উত্তর কোরিয়ায় আটক। দেশটি তার সঙ্গে কেমন আচরণ করবে তা নিয়ে আমরা চিন্তিত। তাই আমরা তাকে ফিরে পেতে চাই।

হোয়াইট হাউস বলছে, ট্রাভিস কিং ঠিক কোথায় আছে এবং তার অবস্থা কী তা জানার জন্য আমরা এখনও কাজ করছি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কারিন জিন-পিয়ের বলেন, আমরা এ সংক্রান্ত সব তথ্য সংগ্রহ করছি। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা তার মুক্তির বিষয়ে শান্তিপূর্ণ পথ খোঁজার চেষ্টা করছেন। তবে উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সাড়া পাওয়া যায়নি।

ক্রিস্টিন ওয়ার্মুথ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে যে, ট্রাভিস কিং এখনও উত্তর কোরিয়ার হেফাজতে আছে। তবে তার সুস্থতা বা এ ব্যাপারে তাদের কাছে বিস্তারিত তথ্য নেই। ঠিক কী ঘটছে তা জানতে আমরা এখনও আমাদের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব বলেন, ট্রাভিস কিংয়ের নিরাপত্তা এবং তাকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পরিবারের কাছে ফিরে আনার ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সুইডেন ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের সঙ্গে কাজ করছে।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সরাসরি কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকায় সুইডেন সাধারণত উত্তর কোরিয়ায় মার্কিন স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে।

গত ১৮ জুলাই ‘শৃঙ্খলা ভঙ্গে অভিযুক্ত’  ট্রাভিস কিং শাস্তি এড়াতে হঠাৎ ঢুকে পড়ে উত্তর কোরিয়া সীমান্তে। দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে পাহারা দিয়ে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। এ সময় তিনি উত্তর কোরিয়া পালিয়ে যান। ‘শাস্তি এড়াতে’ ওই সেনা সদস্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

দুই কোরিয়াকে বিভক্তকারী সীমান্ত অঞ্চলে তদারকির দায়িত্বে রয়েছে জাতিসংঘ। কোনো রকম অনুমোদন ছাড়াই ওই মার্কিন সেনা সীমান্ত পার হয়ে উত্তর কোরিয়ায় ঢুকে পড়ে।

এ ঘটনায় তাকে আটক করা হয়েছে। এরপর উত্তর কোরিয়া থেকে তার ফিরে আসার আসার কোনো তথ্য মেলেনি। এ ব্যাপারে উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকেও কোনো বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।

ঘটনাটি নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানমুনজম গ্রামের এই ঘটনাস্থলটি বিশ্বের অন্যতম একটি বিচ্ছিন্ন এলাকা যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের প্রবেশ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী বলছে, ওই সেনা সদস্য ইচ্ছাকৃত ও অনুমোদন ছাড়াই এটি করেছেন।

ট্রাভিস কিং ‘প্রাইভেট সেকেন্ড ক্লাস’ পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা। শৃঙ্খলাজনিত কারণে পাহারা দিয়ে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নিয়ে হচ্ছিল।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, দুই কোরিয়ার মাঝে সীমান্তবর্তী পানমুনজম গ্রামে হা ‍হা হা চিৎকার করে কয়েকটি ভবনের মাঝখান দিতে দৌড়াতে দেখেন তাকে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.