গতি বাড়ছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র। এতে বাংলাদেশের উপকূলের সঙ্গে এর দূরত্ব কমছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে কক্সবাজার ও সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকার অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ ঝড়-বৃষ্টি শুরু হতে পারে। এছাড়া রোববার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের লাইভ আপডেট ওয়েবসাইট উইন্ডি ডটকম এখন ‘মোকা’ যে গতিচিত্র দেখাচ্ছে, তাতে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র গতিপথ বাংলাদেশের দিকে অনেকটাই সরে এসেছে। এখনকার গতিপথ অনুযায়ী, ঝড়ের চোখ বা আই সরাসরি বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলায় বাহারছড়া ইউনিয়নের দিকে উপকূলে আঘাত হানবে। রোববার দুপুর ২টার পর টেকনাফের স্থলভাগের কাছাকাছি চলে আসতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। এ সময় ঘণ্টায় এটির গতিবেগ থাকতে পারে ৬৩ নট বা ১৬৩ কিলোমিটার।
ঝড়ের চোখ উপকূল অতিক্রমের ঠিক আগে (রোববার বিকেল ৪টা) টেকনাফ উপকূলে বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৮৫ নট বা ১৫৭ কিলোমিটারের মতো থাকার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। বিকেল ৫টার দিকে উপকূল রেখা অতিক্রমের পর ওই অঞ্চলে বাতাসের গতি অনেকটা কমলেও তা থাকবে ঘণ্টায় ৫৫ নট বা প্রায় ১০২ কিলোমিটার। সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বের সীমানা অতিক্রম করে মিয়ানমারের পশ্চিমে দিকে যাবে ‘মোকা’। এসময় বাতাসের গতি বেগ থাকতে পারে ৪৩ নট বা ৮০ কিলোমিটার।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, মোকা ৮ কিলোমিটার গতিতে উৎপত্তিস্থল থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে এগোচ্ছে। এটির গতিপথ বাংলাদেশের দিকে অনেকটাই সরে এসেছে। রোববার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলায় বাহারছড়া ইউনিয়নের দিকে উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
এদিকে শনিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৪ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকার কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। কেন্দ্রের কাছের সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
শনিবার রাত থেকে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকার’ এর অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং এদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।