২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ বাহিনী অভিযান শুরুর পর থেকে কিয়েভকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু দেশ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া দেশগুলোর তালিকায় সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্র এবং সাবেক সোভিয়েত স্যাটেলাইট রাষ্ট্রগুলোরও নাম আছে।
ইউক্রেন ও দেশটির শরণার্থীদের জন্য এ পর্যন্ত কে, কেমন সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তার একটি পরিসংখ্যান দিয়েছে কিয়েল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমি। জার্মানিভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠান বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এতে দেখা গেছে, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৩১ মে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভকে ৭ হাজার ৭০ কোটি ইউরো সমমূল্যের সামরিক, আর্থিক ও মানবিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরের অবস্থানেই আছে জার্মানি। দেশটি ইউক্রেনকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮০১ কোটি ইউরো মূল্যের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহায়তা বাবদ ১ হাজার ৬৮ কোটি ইউরো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাধ্যমে ৭৩৩ কোটি ইউরো দেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেনকে সহায়তার দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্য। দেশটি ১ হাজার ৭৪ কোটি ইউরো মূল্যের সহায়তা দিয়েছে।
ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ইউক্রেনকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা দিয়েছে জাপান। যুদ্ধের প্রথম ১৫ মাসে দেশটি কিয়েভকে মোট ৬৬২ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বাল্টিক রাষ্ট্রের সহায়তা
যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় সহায়তার পরিমাণ কম হলেও তিন বাল্টিক দেশ এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুনিয়াও সাবেক সোভিয়েত দেশ ইউক্রেনের জন্য সহায়তা পাঠিয়েছে। কিয়েল ইনস্টিটিউটের হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত এস্তোনিয়া তাদের জিডিপির ১ দশমিক ২৬ শতাংশ, লাটভিয়া তাদের জিডিপির ১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ এবং লিথুনিয়া তাদের জিডিপির শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় এ সহায়তার পরিমাণ শূন্য দশমিক ৩৩ শতাংশ।
এ ছাড়া ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী দেশ পোল্যান্ড তাদের জিডিপির শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং স্লোভাকিয়া তাদের জিডিপির শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ সহায়তা দিয়েছে।
২০২২ সালে পোল্যান্ড ইউক্রেনকে সোভিয়েত যুগের শত শত যুদ্ধযান সরবরাহ করেছে। আর চলতি বছর দেশটি জার্মানি নির্মিত লিওপার্ড-২ ট্যাংক পাঠিয়েছে।
রাশিয়ার মিত্রদেশ হিসেবে পরিচিত হাঙ্গেরি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত ইউক্রেনকে জিডিপির শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ সহায়তা দিয়েছে।
বেশির ভাগ শরণার্থী জার্মানি ও পোল্যান্ড
ইউক্রেনের মিত্রদেশগুলোর মধ্যে জার্মানি ও পোল্যান্ড বেশির ভাগ শরণার্থীকে জায়গা দিয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের হিসাব অনুযায়ী, জার্মানিতে ইউক্রেনের ১০ লাখ ৭০ হাজার এবং পোল্যান্ডে ৯ লাখ ৯৫ হাজার শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন। এর পরের অবস্থানে আছে চেক প্রজাতন্ত্র। দেশটি আশ্রয় দিয়েছে ৩ লাখ ৪৬ হাজার শরণার্থীকে।
মন্টেনেগ্রো ৩৮ হাজার ৫৪০ শরণার্থীকে জায়গা দিয়েছে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৬ দশমিক ১ শতাংশের বেশি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সে সবচেয়ে কম ইউক্রেনীয় শরণার্থী আশ্রয় পেয়েছে। দেশটি তাদের মোট জনসংখ্যার শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে।