রুশ সরকারি বার্তা সংস্থা তাস এ খবর নিশ্চিত করেছে। ইতোমধ্যে নাভালনির মৃত্যুর বিষয়টি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবহিত করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ খুঁজে করতে তদন্ত হচ্ছে।
গত বছরের শেষের দিকে রাশিয়ার আর্কটিক অঞ্চলের একটি কারাগারে পাঠানো হয় নাভালনিকে। এই কারাগারটিকে রাশিয়ার সবচেয়ে কঠিন কারাগার বলে মনে করা হয়।
মাত্র ৪৭ বছর বয়সে নাভালনির আকস্মিক এই মৃত্যুর কারণ জানা নেই বলে জানিয়েছে রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিন। তবে, কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাঁটার সময় হঠাৎ করে পড়ে যান নাভালনি।
গত জানুয়ারিতে ভিডিও কলের মাধ্যমে আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন নাভালনি। তখন তার মাথা ন্যাড়া ছিল। এছাড়া তার শারীরিক অবস্থাও বেশ খারাপ দেখাচ্ছিল সে সময়। এর আগে গত ডিসেম্বরে হঠাৎ করে কারাগার থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। প্রায় ছয় সপ্তাহ কোনো খোঁজ-খবর ছিল না তার।
প্রসঙ্গত, সন্ত্রাসবাদ এবং জালিয়াতির অভিযোগে নাভালনিকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০১০ সাল থেকেই তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিলেন। পুতিন প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় নাভালনির মুক্তি পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা ছিল না। সেই পুতিনের শাসনের অবসান দেখার সুযোগ আর তার হলো না।
২০১১-১২ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। ওই বিক্ষোভ আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন নাভালনি। রাশিয়ার সরকারের দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য সামনে এনেছিলেন তিনি। এছাড়া পুতিনের কাছের লোকদের বিভিন্ন গোপন তথ্যসংবলিত ভিডিও প্রকাশ করতেন তিনি। যা লাখ লাখ মানুষ দেখতেন।
এরপর ২০১৩ সালে রাশিয়ার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন নাভালনি। সেই বছর মস্কোর মেয়র নির্বাচনে তিনি ২৭ শতাংশ ভোট পান। রাশিয়ার বেশিরভাগ মানুষের বিশ্বাস ছিল মস্কোর মেয়র নির্বাচন স্বচ্ছ ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি এত ভোট পেয়েছিলেন।
রাশিয়ায় নাভালনিকেই একমাত্র বিরোধী নেতা বলে মনে করা হতো, যিনি সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিতে রাশিয়াজুড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে একত্রিত করতে সক্ষম ছিলেন। ২০২০ সালে তাকে সাইবেরিয়ায় বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। তবে সে যাত্রায় অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি। সে সময় পশ্চিমা দেশগুলো জানায় যে, তার ওপর স্নায়ুবিক এজেন্ট প্রয়োগ করা হয়েছিল।