সংলাপ প্রত্যাখ্যান বিদ্রোহীদের

মিয়ানমার পরিস্থিতি

0
98
নারীরা প্রতিবাদের শপথ নেয়

মিয়ানমারে শান্তি ফেরাতে অস্ত্র রেখে সংলাপের মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানোর যে আহ্বান জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং জানিয়েছিলেন, তা প্রত্যাখ্যান করেছে বিদ্রোহী সংগঠনগুলো। ‘রাজনৈতিক উপায়ে’ পরিস্থিতির সমাধান করতে বিদ্রোহীদের প্রতি আহ্বান জানান জান্তাপ্রধান। বিদ্রোহীদের কারণে বেসামরিক লোকজনের প্রাণহানি ঘটতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। এর জবাবে বিদ্রোহী জোটের মুখপাত্র খিয়াও ঝাও বলেন, তারা (সরকারি বাহিনী) লড়াইয়ে খুব বাজেভাবে হারছে। এ জন্য বের হওয়ার পথ খুঁজছে। খবর রয়টার্স ও ইরাবতির

বার্মিজ উইমেন্স ইউনিয়নের (বিডব্লিউইউ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে জান্তা বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ৬৬৪ নারী নিহত হয়েছেন। এখনও জান্তা সরকার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নৃশংস কামান, বিমান এবং অন্যান্য ভারী অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার বিডব্লিউইউ আরও জানিয়েছে, গত তিন বছরে জান্তা কর্তৃক মোট ২ হাজার ৪৪১ নারী নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং আটক হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭০৬ জন অন্যায়ভাবে অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

এদিকে চিন রাজ্যের পালেতওয়া টাউনশিপের ট্রুনাইংয়ে জান্তার প্রধান ঘাঁটি দখলের ঘোষণা দিয়েছে আরাকান আর্মি (এএ)। ২১ দিনের হামলার পর এ দাবি করেছে গোষ্ঠীটি। গত ১৪ নভেম্বর থেকে টাউনশিপের প্রধান হনোনবুউ ঘাঁটি দখল করার চেষ্টা করছিল আরাকান আর্মি।

প্রতিবেশী রাখাইন রাজ্যে অবস্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, তারা বারবার জান্তার বিমান হামলা ও গোলাগুলির সম্মুখীন হয়েছে। এ ছাড়া সরকার তাদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের করেছে বলেও অভিযোগ গোষ্ঠীটির। গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিটি রক্ষায় বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে জান্তা সরকার।

অন্যদিকে, বেসামরিক জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি)) দাবি করেছে, ২৭ অক্টোবর উত্তর শান রাজ্যে চলমান সমন্বিত প্রতিরোধ অভিযানের প্রতিক্রিয়া হিসেবে মিয়ানমারের সামরিক শাসন বেসামরিকদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার অভিযান বাড়িয়েছে। সামরিক শাসক সাতটি রাজ্য এবং পাঁচটি অঞ্চলে বেসামরিক নাগরিকদের কমপক্ষে ২৪৪ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। গত ৩০ নভেম্বর দেশব্যাপী আক্রমণের সময় ৩০৯ বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে এনইউজি জানিয়েছে।

এ ছাড়া মিয়ানমারের বাণিজ্যিক কেন্দ্র ইয়াঙ্গুনে তীব্র জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। শহরের পেট্রোল পাম্পগুলোর সামনে জ্বালানি কেনার জন্য যানবাহনের লম্বা সারি দেখা গেছে। শহরবাসী ও দেশটির জান্তা নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম বুধবার এ খবর জানিয়েছে।

রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মিয়ানমারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার থেকে জ্বালানি সংকটের মুখে পড়েছে ইয়াঙ্গুনবাসী। থিলাওয়া বন্দর থেকে জ্বালানি সরবরাহ বিলম্ব হওয়ায় পেট্রোল পাম্পগুলোতে এ সংকট দেখা দিয়েছে। তবে কেন জ্বালানি সরবরাহে বিলম্ব হয়েছে, কেনইবা সংকট এতটা তীব্র হয়েছে, এসব নিয়ে প্রতিবেদনে কিছু জানানো হয়নি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.