নিস্তব্ধ শহরে সহাস্য কামিন্স

0
157
ফাঁকা হয়ে যাওয়া মোদি স্টেডিয়ামে কামিন্সের শিরোপা উল্লাস। ছবি: এএফপি

প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের আকুতি ভরা বিশ্বে হাত উঁচিয়ে ধরতে পারেন প্যাট কামিন্স। তাঁর মতো কথা দিয়ে ‘নীল জার্সির ভরা গ্যালারি স্তব্ধ’ ক’জন করতে পেরেছেন! শুধু কি গ্যালারি? কামিন্স অ্যান্ড কোং নিস্তব্ধ করেছেন গোটা আহমেদাবাদ। যে নীরব হাহাকার শহর ছাপিয়ে ভারতের অজস্র গ্রামগঞ্জ, লোকালয়ে হানা দিয়েছে। ভূতুড়ে কোনো গ্রামে বিরাজ করা নিস্তব্ধতায় নিঠুর বাঁশরিয়া সেজেছেন কামিন্স। থেমে থেমে সহাস্যে ভেঙেছেন তন্দ্রা। তিনি যেন ‘নিস্তব্ধ সুখের জনক’।

ফাইনাল শেষে ‘ভরা গ্যালারি স্তব্ধ করার মতো সুখ আর নেই’ মন্তব্যের জেরে কামিন্স তিনবার বলেন, ‘এটা বিশাল কিছু।’ ইংল্যান্ডে গিয়ে তিনি অ্যাশেজ ধরে রেখেছেন। ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডে জিতেছেন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। তাঁর মতে, ওই সব বিশ্বকাপের সমকক্ষ নয়। ক্রিকেটে এখনও শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি ওয়ানডে বিশ্বকাপই। সেটা আবার ভারতের মাটিতে, তাদেরই বিপক্ষে ভরা গ্যালারির সামনে। ‘নতুন করে ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রেমে পড়ে গেলাম’ কথাটাও বলে গেলেন অসি অধিনায়ক।

ফাইনাল খেলতে টিম হোটেল থেকে মোদি স্টেডিয়ামের পথ ধরেছিলেন নির্ভার কামিন্স। কিন্তু হোটেল টু স্টেডিয়ামের দূরত্ব কমতেই স্নায়ুচাপ অনুভব করেন ডানহাতি এ পেসার। ড্রেসিংরুমে ঢুকে ‘নীল জার্সির সাগর’ দেখে মাঠে পা দিয়ে ‘নীল সাগরের সাঁতারের অনুভূতি’ তাঁর চাপ বাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে অধিকাংশ সময় গ্যালারি শান্ত রাখতে পেরে খুশি তিনি। কোহলির আউটের মধ্য দিয়ে যার শুরু, ‘মনে হচ্ছিল, কোহলি অন্য দিনের মতো সেঞ্চুরি করতে যাচ্ছেন। তাঁকে আউট করে গ্যালারি থামিয়ে দেওয়া ছিল খুব আনন্দের।’

দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজ হেরে ভারতে আসে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের আগে রোহিতদের বিপক্ষেও সিরিজ হারে। বিশ্বকাপের আগে ইনজুরিতে ছিলেন কামিন্স। টানা দুই হারে আসর শুরু হয় অসিদের। বিশ্বকাপ দলে ইনজুরি আক্রান্ত ট্রাভিস হেড থাকবেন কিনা, মারনাস ল্যাবুশেন খেলবেন নাকি পেস অলরাউন্ডার ক্যামেরুন গ্রিন কিংবা মার্কাস স্টয়নিস– এসব সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে অধিনায়ক কামিন্সের। তাঁর সব সিদ্ধান্ত বুমেরাং হয়েছে। হেড, ল্যাবুশেন পারফর্ম করেছেন। দল হয়ে ফাইনালে দিতে পেরেছেন সেরাটা।

কিছু শক্তি সঞ্চয় করে রাখার মাহাত্ম্য বুঝিয়েছেন কামিন্স ও তাঁর দল, ‘আমরা সাহসী ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। হেড, ওয়ার্নার ও মার্শ ওই আগ্রাসন দেখিয়েছে। হেডকে নিয়ে নেওয়া ঝুঁকিটা কাজে লেগেছে। মারনাস (ল্যাবুশেন) জাত চিনিয়েছে। সে ভিন্নধর্মী ক্রিকেট খেলে। তার জন্য একাদশে জায়গা বের করার দরকার ছিল। ধরে নিন, আমরা শেষের জন্য সেরাটা জমিয়ে রেখেছিলাম। বেশ ক’জন বড় ম্যাচের খেলোয়াড় আত্মপ্রকাশ করেছে, এটা দারুণ খুশির ব্যাপার।’

সুমন মেহেদী

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.