বিএনপি-জামায়াতের ডাকে মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ। শনি ও রোববার ছিল হরতাল ও তিন দলের সমাবেশ। এ অবস্থায় আতঙ্ক, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় দিন পার করেছেন রাজধানীবাসী। রাস্তাঘাট ছিল অনেকটা ফাঁকা। যানবাহনের অভাবে ভোগান্তি যেমন পোহাতে হয়েছে, আবার সহিংস ঘটনায় জরুরি প্রয়োজনেও ঘর থেকে বের হননি অনেকে। তবে সোমবার নির্বিঘ্ন একটি দিন পেয়েই প্রয়োজনের তাগিদে ছুটেছেন মানুষ। কেউ ছুটেছেন রাজধানীর বাইরে, আবার কেউ এসেছেন ঢাকায়। টানা তিন দিনের অবরোধ মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ফেলার তাগাদা ছিল সবার মাঝে। ফলে দু’দিনের ফাঁকা ঢাকা হঠাৎ ব্যস্ত হয়ে ওঠে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় যানবাহন ছিল কিছুটা কম।
সোমবার ঢাকা ফিরে পায় যানজটের আসল চিত্র। দিনভর মূল সড়কগুলোতে যানবাহন ঠাসা থাকায় পথচলতি মানুষের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। এর রেশ চলে রাত পর্যন্ত। দুপুর ১২টার দিকে ফার্মগেটে যানবাহনের সারি সংসদ ভবন এলাকা পর্যন্ত পৌঁছায়। খামারবাড়ির মুখে যানজটে আটকে থাকা বাসের যাত্রী আসাদুর রহমান বলেন, একই যানজট পার করে এসেছেন মোহাম্মদপুর ও আসাদগেটেও। তাঁর ভাষায়, হরতাল ও সমাবেশের কারণে মানুষ ছিল অবরুদ্ধ। এবার আসল ঢাকার দেখা পাওয়া গেছে।
দুপুর দেড়টার দিকে কারওয়ান বাজার সার্ক ফোরায়ার চারদিকেই দীর্ঘ গাড়ির সারি দেখা গেছে। বসুন্ধরা সিটির সামনের সড়কের একটা সিগন্যাল পার হতে সময় লেগেছে প্রায় ২০ মিনিট। কাছাকাছি সময়ে কলাবাগান, সায়েন্স ল্যাবরেটরি এবং শাহবাগেও তীব্র যানজট ছিল। মতিঝিলের অফিসপাড়ায়ও ছিল মানুষের তীব্র ভিড়।
সকাল ৭টার দিকে ধানমন্ডি, লালমাটিয়া ও মোহাম্মদপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্কুলগুলোর সামনে ছিল শিক্ষার্থী-অভিভাবকের ভিড়। যানজট আর মানুষের ভিড়ে কচি মুখগুলোকে বেশ হাঁপিয়ে উঠতে দেখা যায়। সুযোগ বুঝে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোচালকরাও বেশি ভাড়া চেয়েছেন।
রাজধানীর বিভিন্ন বিপণিবিতান ছিল খোলা। নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটিসহ বড় বিপণিবিতান ও মার্কেটে প্রচুর ভিড় দেখা গেছে। টানা তিন দিন অবরোধের কারণে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ও নগরের আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালগুলোর আশপাশেও তীব্র যানজট দেখা দেয়।