ডেঙ্গু রোগ চলতি দশকের মধ্যে আমেরিকা, ইউরোপ ও আফ্রিকার নতুন নতুন অংশে ‘বড় এক হুমকি’ হয়ে দেখা দিতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির প্রধান বিজ্ঞানী ও সংক্রামক রোগবিশেষজ্ঞ জেরমি ফারার সম্প্রতি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এত দিন ধরে কেবল এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোয় ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছিল। নতুন করে ইউরোপ ও আমেরিকায় রোগটির প্রাদুর্ভাব শুরুর কারণ হিসেবে তাপমাত্রা বাড়ার কথা বলছেন জেরমি ফারার। তিনি বলেছেন, উষ্ণ আবহাওয়া ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার বংশবিস্তারে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া হিসাবে, ডেঙ্গুতে প্রতিবছর আনুমানিক ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৮ গুণ বেড়েছে। এর বড় কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের কথা বলছেন বিজ্ঞানীরা। এ ছাড়া নগরায়ণকে অন্যতম কারণ বলছেন তাঁরা।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনেক রোগীর বিষয়ে জানা যায় না। ফলে হিসাবের মধ্যে আসেন না তাঁরা। বিভিন্ন দেশের সরকারের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গত বছর বিশ্বে ৪২ লাখ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। জনস্বাস্থ্যবিদেরা সতর্ক করে বলছেন, এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।
এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ চলছে বাংলাদেশ। বছরের প্রথম ৯ মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হাজার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশে এর আগে কখনো ডেঙ্গুর এতটা প্রকোপ দেখা যায়নি।
জেরমি ফারার বলেন, ‘ডেঙ্গুর বিষয়ে আমাদের আরও গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা ও পদক্ষেপ নিতে হবে। ভবিষ্যতে বড় বড় অনেক শহরে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেবে। এতে জনস্বাস্থ্যে তৈরি হবে নতুন চাপ। এই চাপ কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেই লক্ষ্যে দেশগুলোকে এখনই প্রস্তুত করা প্রয়োজন।’
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চল, দক্ষিণ ইউরোপ ও আফ্রিকার নতুন অংশে একবার ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হলে স্থানীয়ভাবে তা মহামারির রূপ নিতে পারে বলে মনে করেন জেরমি ফারার। তিনি বলেন, এসব এলাকায় আগে থেকেই অল্প কিছু কিছু মানুষের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়ে আসছে। তবে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এই রোগের বাহক এডিস মশা ডেকে নিয়ে আসছে এবং এডিসের বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে। এতে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ভয়াবহ এক চাপ তৈরি হবে বলেও সতর্ক করেছেন এই জনস্বাস্থ্যবিদ।