ইরানের কাছ থেকে জব্দ করা হাজার হাজার অস্ত্র ও গোলাবারুদ ইউক্রেনকে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধের জন্য এখন প্রয়োজনীয় অস্ত্রের সংকটে আছে ইউক্রেন। বলা হচ্ছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সে সংকট কাটাতে সাহায্য করবে এসব অস্ত্র।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড ইতিমধ্যে ইরানের কাছ থেকে জব্দ করা ১০ লাখ গোলাবারুদ ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীকে পাঠিয়েছে। বুধবার মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড এ তথ্য জানায়। এসব গোলাবারুদ পাঠানো হয়েছে গত সোমবার।
সেন্ট্রাল কমান্ডের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এসব গোলাবারুদ ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) কাছ থেকে জব্দ করা। যুক্তরাষ্ট্রের বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গত ২০ জুলাই জব্দ করা এসব অস্ত্রের মালিকানা পায় সরকার।’
গত জুলাইয়ে মার্কিন বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, ইরানের কাছ থেকে জব্দ করা ৯ হাজারের বেশি রাইফেল, ২৮৪টি মেশিনগান, ১৯৪টি রকেট লঞ্চার, ৭০টির বেশি ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও ৭ লাখ গোলাবারুদের মালিকানা পেতে চায়। মন্ত্রণালয় জানায় যে মার্কিন নৌবাহিনী ইরানের কাছ থেকে এসব অস্ত্র জব্দ করে।
সেন্ট্রাল কমান্ডের দেওয়া তথ্য বলছে, ২০২২ সালের ৯ ডিসেম্বর মারওয়ান–১ নামের একটি জাহাজ থেকে এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করে তারা। ইরানের আইআরজিসির পাঠানো এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘিত হওয়ায় এসব জব্দ করা হয়।
মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড মধ্যপ্রাচ্যের দায়িত্বে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে থাকা মার্কিন ঘাঁটিগুলোয় জব্দ করা বিপুল অস্ত্র রয়েছে। এসব অস্ত্র বৈধ উপায়ে কীভাবে ইউক্রেনে পাঠানো যায়, দীর্ঘদিন ধরে সে চেষ্টা চালিয়ে আসছিল বাইডেন প্রশাসন।
গত এক বছরে মার্কিন নৌবাহিনী ইরানের কয়েক হাজার রাইফেল ও ১০ লাখের বেশি গোলাবারুদ জব্দ করেছে। ইরান থেকে ছোট ছোট জাহাজে করে এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ হুতিদের কাছে পাঠানো হচ্ছিল বলে দাবি মার্কিন নৌবাহিনীর।
জব্দ করা এসব অস্ত্র বৈধ উপায়ে কীভাবে ইউক্রেনে পাঠানো যায়, সে বিষয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা। শেষ পর্যন্ত বিদ্যমান একটি আইনেই এসব সরকারি মালিকানায় নিয়ে পাঠানোর বন্দোবস্ত হয়।
ইরানের কাছ থেকে জব্দ করা অস্ত্র–গোলাবারুদ সরকারি মালিকানায় নিতে এ বছর দুটি অভিযোগ দাখিল করে মন্ত্রণালয়। এর একটি গত জুলাইয়ে, অপরটি গত মার্চে।
জব্দ করা ইরানের অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠানোর পক্ষে গত ফেব্রুয়ারিতে সংবাদপত্রে একটি কলাম প্রকাশিত হয়। এর লেখক ছিলেন সেন্টার ফর আ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক পরিচালক জোনাথন লর্ড।
ইরানের জব্দ করা অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠানো হচ্ছে—এ তথ্য জানানো হলে জোনাথন বলেন, ‘দিন শেষে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো নানা দিক থেকে অস্ত্র–গোলাবারুদের জোগান পাওয়া ইউক্রেনের জন্য এখন জরুরি। তবে ইউক্রেনে এখন যে অস্ত্র–গোলাবারুদের সংকট চলছে, এর মাধ্যমে সবটা পূরণ করা সম্ভব নয়।’