জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা জি এম কাদের বর্তমানে ভারত সফরে রয়েছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে নিজেকে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ঘোষণা করলেন রওশন এরশাদ। মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ ঘোষণা দেন।
জাপার প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জীবদ্দশাতেই তার উত্তরাধিকারী কে হবেন তা নিয়ে বিরোধ চলছিল রওশন এরশাদ ও জিএম কাদেরের মধ্যে। এরশাদের মৃত্যুর পর দেবর-ভাবীর বিরোধ প্রকটভাবে প্রকাশ্যে আসে। এরশাদের মৃত্যুর চার দিন পর জিএম কাদেরকে জাপার চেয়ারম্যান করা হয়। রওশন তা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য বিরোধীদলীয় নেতার আসনে জিএম কাদের বসতে চাইলে, দেবর-ভাবির বিরোধে জাপা আরেক দফা ভাঙনের মুখোমুখি হয়।
পরে দুই পক্ষের সমঝোতায় কাউন্সিল পর্যন্ত জিএম কাদেরকে চেয়ারম্যান পদে মেনে নেন রওশন। বিনিময়ে রওশন এরশাদ বিরোধীদলীয় নেতা হন। এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য রংপুর-৩ আসনে জিএম কাদের সাদকে জাপার মনোনয়ন দেন এবং দলের যুগ্ম মহাসচিব করেন।
পরে আবার জাপায় বিরোধ সৃষ্টি হয়। রওশন এরশাদ দলের চেয়ারম্যান পদে নিজের প্রার্থিতার কথা জানান। তবে রওশনের অনুসারীদের দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে নিজের দিকে টেনে নিতে সক্ষম হন জিএম কাদের। ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে রওশনের অনুপস্থিতিতে তাকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক করে চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকেন জিএম কাদের। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদটি চেয়ারম্যানের ওপরে হলেও, আলঙ্কারিক পদ।
পরে রওশনকে বিরোধীদলীয় নেতার পদছাড়া করতে চেয়েও সরকারের কারণে পারেননি জি এম কাদের। স্পিকারের স্বীকৃতি পাননি। উল্টো রওশনপন্থীদের মামলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞায় রাজনীতি থেকে দূরে চলে যেতে হয়েছে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে।
পাঁচ মাস থাইল্যান্ডে চিকিৎসা শেষে গত ২৭ নভেম্বর দেশে ফেরেন রওশন। দুদিন পর তাঁর সঙ্গে দেখা করেন জি এম কাদের। কিন্তু তাতে বরফ গলেনি। বরং ৩০ নভেম্বর রওশনপন্থীদের আপিলে ফের নিষেধাজ্ঞায় পড়েন জি এম কাদের।
গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন রওশন। জি এম কাদেরও গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ডাকে। পরেরদিন রাতে আচমকাই রওশনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন তাঁর অনুসারীরা। তবে ৪৫ মিনিটের ব্যবধানে ঘোষণাটি স্থগিতও করা হয়।