দক্ষিণ আফ্রিকাকে কোনো বৈশ্বিক শক্তির পাশে দাঁড়াতে প্রভাবিত করা যাবে না বলে মন্তব্য করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। আজ মঙ্গলবার জোহানেসবার্গে শুরু হতে যাওয়া ব্রিকস সম্মেলনের আগে রোববার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। খবর আল-জাজিরার
ব্রিকস সম্মেলনের সদস্য রাষ্ট্র ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদের প্রভাবকে প্রসারিত করতে এবং বৈশ্বিক ভূরাজনীতিতে পরিবর্তনের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্রিকসভুক্ত অন্য দেশগুলো বৈঠকে চাপ দিতে পারে– এমন আশঙ্কা থেকেই তিনি এ কথা বলেন।
বিশ্বের চোখ এখন ১৫তম ব্রিকস সম্মেলনের দিকে। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ শহরে অনুষ্ঠিত হতে চলা এই সম্মেলনে ব্রিকসভুক্ত পাঁচ দেশ ছাড়াও যুক্ত হচ্ছেন আরও অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা। এবারের সম্মেলন থেকেই জোটটিতে নতুন সদস্য যুক্তের ঘোষণা আসতে পারে। ৪০টিরও বেশি দেশ এরই মধ্যে ব্রিকসের সদস্য হওয়ার আবেদন করেছে। এটিই এবারের ব্রিকস সম্মেলনের প্রধান আকর্ষণ।
জানা গেছে, সম্মেলন শুরুর প্রথম দিনেই নতুন সদস্য যুক্ত হওয়ার বিষয়টি আলোচিত হবে। তবে ঠিক কতটি দেশকে সদস্যপদ দেওয়া হবে, তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। কোনো দেশকে যুক্ত করার জন্য সব সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থন পেতে হবে। ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোতে এখন বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ সম্পদ রয়েছে। এ ছাড়া বৈশ্বিক জিডিপির এক-তৃতীয়াংশই এখন ব্রিকস দেশগুলোর। অর্থনীতির আকারে পশ্চিমা জি৭ দেশগুলোকে অনেক আগেই ছাড়িয়ে গেছে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো।
২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে ব্রিকস। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো এর সদস্য। এবারের সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা। স্বাগত দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাও থাকছেন এই সম্মেলনে। এ ছাড়া আরও অনেক দেশের সরকারপ্রধানরাও উপস্থিত থাকবেন এই সম্মেলনে।
ব্রিকস সদস্য হওয়ার পর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক যোগাযোগ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। ব্রিকসে যুক্ত হওয়ার পর চীনে দক্ষিণ আফ্রিকার রপ্তানি চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। চীন পরিণত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার সব থেকে বড় বাণিজ্য সহযোগী রাষ্ট্রে। ‘ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল ডায়ালগ’-এর ‘সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট’ সানুশা নাইডু বলেন, এবারের সম্মেলনে নতুন সদস্য যুক্ত হওয়ার দিকেই চোখ থাকবে সবার।
মূলত চীন, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা ব্রিকস বড় করতে সব থেকে বেশি আগ্রহী। বিশেষ করে মস্কো ও বেইজিং এখন পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে উন্নয়নশীল দেশগুলোর একটি বড় অর্থনৈতিক জোট তৈরিতে মরিয়া। তবে ভারত ও ব্রাজিল সদস্য বৃদ্ধিতে খুব একটা আগ্রহী নয়। নাইডু জানান, নতুন সদস্য যুক্ত করার ক্ষেত্রে পাঁচ সদস্যকেই একমত হতে হবে।