রাজধানীর লালবাগ থেকে গতকাল শনিবার তুলে নেওয়া ছাত্রদলের ৬ নেতাসহ বিএনপির মোট ১৮ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাঁদের মধ্যে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদের ছেলে তানভীর আহমেদসহ (রবিন) ১২ জনকে নাইটিঙ্গেল মোড় ও বিএনপি কার্যালয়ের আশপাশের এলাকা থেকে গতকাল রাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান ছয় নেতার কাছ থেকে তিনটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁরা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে অস্ত্র সংগ্রহ করছিলেন।
তবে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ ছাড়া গত রাতে গ্রেপ্তার বাকি ১১ জনের নাম সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রকাশ করেনি। গ্রেপ্তার ১৮ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা হয়েছে বলে জানায় ডিবি।
এর আগে গতকাল সকালে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মমিনুল ইসলাম (জিসান) তাঁর আজিমপুরের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন। খোঁজ নেওয়ার জন্য আজিমপুরে তাঁর বাসার সামনে গেলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহসভাপতি হাসানুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল রিয়াদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দীন মোহাম্মদও নিখোঁজ হন। এ ঘটনার বিএনপির অভিযোগ করা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা ছাত্রদলের এসব নেতাকে তুলে নিয়ে গেছেন। যদিও গতকাল বিকেল পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
এ বিষয়ে আজ ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, গ্রেপ্তার এই ছয়জনের কাছ থেকে তিনটি অস্ত্র জব্দ করা হয়। অস্ত্রগুলোর মধ্যে দুটি পাবনা ও একটি টেকনাফ থেকে সংগ্রহ করেন তাঁরা।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি জেনেছে, তাঁরা আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে তাঁরা অস্ত্র সংগ্রহ করে পরিকল্পনা করছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের যোগাযোগের সূত্র ধরে কাদের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করেছে, সে তথ্যও ডিবি জানতে পেরেছে। তাঁদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।
গতকাল বিএনপি বলছিল, ছাত্রদলের এসব নেতাকে ডিবি তুলে নিয়েছিল—এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ডিবির যুগ্ম কমিশনার খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ‘মামলার এজাহারে যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সেভাবেই আমরা তাঁদের গ্রেপ্তার করেছি এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’ সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই ছয়জনকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়, তবে সময়টা উল্লেখ করা হয়নি।
এ সময় সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন সরকারি দলের অনেক নেতা-কর্মীকে অস্ত্রসহ অনেক সময় দেখা যায়, তাঁদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেন না কেন? এখন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন কি না বা নিচ্ছেন কি না? তবে এই প্রশ্নের জবাব ডিবির কর্মকর্তা এড়িয়ে গেছেন।