ঘরের মাঠে ‘বাঘ’ বাংলাদেশ। মিরপুর ও চট্টগ্রাম বাঘের ডেরা। এই ডেরায় ঢুকে ম্যাচ হেরেছে ইংল্যান্ড, ভারত, অস্ট্রেলিয়া। সেখানেই ক্রিকেটের উঠতি দল আফগানিস্তানে বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকরা বৃষ্টি আইনে ১৭ রানে হারলেও কর্তৃত্ব ছিল রশিদদের। দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিকদের ১৮৯ রানে আটকে ফেলেছে সফরকারীরা। ১৪২ রানের বিশাল জয়ে এক ম্যাচ থাকতে সিরিজ জিতে নিয়েছে।
দেশের ক্রিকেট অঙ্গন দু’দিন তামিমের ‘অবসর নাটকে’ ব্যস্ত ছিল। তিনি অবসর ভেঙে ফিরলেও ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি দল। অধিনায়ক লিটন দাস ছিলেন এলোমেলো। টস জিতে বোলিং নিলেও সুবিধা ঘরে তুলতে পারেনি তার দল। সুযোগ দু’হাতে নিয়ে ৯ উইকেট হারিয়ে ওয়ানডেতে দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩৩১ রান তোলে আফগানিস্তান।
দুই আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান সেঞ্চুরি করেছেন। দু’জন দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৫৬ রানের রেকর্ড জুটি গড়েছেন। ওই জুটি ভাঙে ২১ বছরের তরুন গুরবাজ ১২৫ বলে ১৪৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ফিরলে। তিনি ১৩টি চার ও আটটি ছক্কার শট দেখান। ২১ বছরের আরেক ওপেনার ইব্রাহিম ১০০ রান করে আউট হন। ১৩ ওয়ানডেতেই তুলে নেন চতুর্থ সেঞ্চুরি।
রেকর্ড রান তাড়া করে জয়ের চ্যালেঞ্জ নিয়ে ২৫ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শুরুতেই হারের পথে বাড়িয়ে দেয় এক পা। ওপেনার লিটন ১৫ বল খেলে তিন চারের শটে ১৩ রান করেন। তিনে নামা নাজমুল শান্ত ১ রান করে বোল্ড হন। তামিমের জায়গায় একাদশে সুযোগ পাওয়া বাঁ-হাতি ওপেনার নাঈম শেখ ২১ বলে ৯ রান যোগ করে দৃষ্টিকটুভাবে বোল্ড হয়ে ফেরেন।
এরপর চারে নামা তাওহীদ হৃদয় ও পাঁচে নামা সাকিব আল হাসানও জুটি দিতে ব্যর্থ হন। তাদের জুটি ৪০ রানে যেতেই বোল্ড হয়ে ফেরেন ভালো ছন্দে থাকা তরুণ হৃদয়। তিনি ৩৪ বল খেলে ১৬ রান করে দলের ৬৫ রানে আউট হন। ৭২ রানের মধ্যে ছয় উইকেট হারিয়ে হারের পথে দুই পা বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। সাকিব ফিরে যান ২৫ রান করে। দলে ফিরে বিশ্বকাপে জায়গা পাকা করার সুযোগ পাওয়া আফিফ গোল্ডেন ডাক মারেন।
রেকর্ড হারের শঙ্কায় পড়ে যাওয়া বাংলাদেশকে টানতে শুরু করেন শেষ ভরসার জুটি মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি মিরাজ। তারা ৮৭ রান যোগ করে বিশাল হারের লজ্জা থেকে দলকে নিষ্কৃতি দেন। মিরাজ আউট হন ৪৮ বলে ২৫ রান করে। শেষটায় লড়াই করেও দলকে খুব বেশিদূর নিতে পারেননি অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিক। তিনি ৮৫ বলে ৬৯ রান করে আউট হন। ছয়টি চারের শট আসে তার ব্যাট থেকে। ইনজুরির কারণে এবাদত ব্যাট করতে না পারায় ৪৩.২ ওভারে ৯ উইকেট হারালে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
আফগানিস্তানের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন স্পিনার মুজিব উর ও রশিদ খান। ডানহাতি অফ স্পিনার মুজিব ১০ ওভারে ৪০ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। রশিদ খান ৯ ওভারে ২৮ রান দিয়ে নিয়েছেন দুটি উইকেট। তরুণ পেসার ফজলহক ফারুকী ৭.২ ওভারে মাত্র ২২ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন তিন উইকেট। এর আগে বাংলাদেশের হয়ে সাকিব-মিরাজ, মুস্তাফিজ-হাসান দুটি করে উইকেট নিলেও তারা ছিলেন খরুচে।