কক্সবাজারের শুকনাছড়ি এলাকায় সড়কের পাশে বড় বড় পাহাড়। ব্রিটিশ আমলে এসব পাহাড়কে ‘সংরক্ষিত বন’ ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ‘প্রতিবেশ সংকটাপন্ন’ বনভূমিও রয়েছে। কিন্তু ২০২১ সালে সংরক্ষিত ও সংকটাপন্ন এই এলাকার ৭০০ একর বনভূমি বরাদ্দ দেওয়া হয় বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশে আপাতত স্থগিত রয়েছে সেই বরাদ্দ কার্যক্রম।
বন বিভাগ বলছে, বন বিভাগের জমি নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে মাত্র ১ লাখ টাকা প্রতীকী মূল্যে ওই জমি বরাদ্দ দেয়। অথচ জমির প্রকৃত মূল্য ৪ হাজার ৮০৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। একইভাবে, কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের পাশে খুনিয়াপালং মৌজায় ২০২২ সালের ৪ জুলাই ২৫ একর সংরক্ষিত বন দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে)। সেখানে তৈরি হবে আবাসিক প্রশিক্ষণ একাডেমি। জমি বরাদ্দের সময় আপত্তি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেয় বন বিভাগ। ওই চিঠিতে বলা হয়, একাডেমি স্থাপনে সেখানে পাহাড়ের পাশাপাশি কাটা পড়বে প্রায় ৩০ হাজার গাছ। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে পরিবেশ।
বাফুফে ও পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন একাডেমিতেই শেষ নয়। ২০২২ সালে কক্সবাজার বিভাগীয় বন কার্যালয় থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সরকার কক্সবাজারে ৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার ২৮৮ একর বনভূমি বরাদ্দ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট, শহীদ এটিএম জাফর আলম মাল্টিডিসিপ্লিন একাডেমি ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের মতো প্রতিষ্ঠান। আইনের তোয়াক্কা না করে তাদের কেউ কেউ বরাদ্দ পাওয়ার আগেই পাহাড় কেটে স্থাপনা তৈরি শুরু করেছেন। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০ (সংশোধিত) অনুযায়ী, পাহাড় কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এটি আমলযোগ্য অপরাধ। তার পরও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সরকারের গোচরে-অগোচরে পাহাড় কেটে তৈরি করা হচ্ছে কংক্রিটের স্থাপনা। চলছে মিলেমিশে পাহাড় কেটে সাবাড় করার ‘উৎসব’, চলছে গণহারে বৃক্ষ হত্যা। অনেক পাহাড়ের ঢাল নেমেছে কক্সবাজারের কলাতলী সড়কের পাশে। এসব ঢালেও দেখা যায় কংক্রিটের স্থাপনা। ঝিলংজা মৌজার ওই এলাকার পুরোটা একসময় উঁচু পাহাড়ে ঘেরা ছিল। কিন্তু এখন সেগুলো প্রায় নিশ্চিহ্ন।
বন বিভাগের তথ্যমতে, কক্সবাজারে ২ লাখ ৬০ হাজার একর বনভূমির মধ্যে প্রায় ৪৬ হাজার একর বেদখল হয়ে গেছে। দখলদার হলেন ৪৩ হাজার ৫৫৮ ব্যক্তি এবং ৬৯৬টি প্রতিষ্ঠান। বন বিভাগ বারবার চিঠি দিয়েও পাহাড় দখলমুক্ত করতে পারছে না। যদিও বেশ কয়েকটি পাহাড় উদ্ধারে মামলা চলছে উচ্চ আদালতে। জেলার মহেশখালীতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে ১৯১ একর বনভূমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২০১৮ সালের মার্চে। সরকারের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর নামেও বিপুল পরিমাণ বনভূমি বরাদ্দ রয়েছে। ২০২২ সালে কক্সবাজার বিভাগীয় বন কার্যালয় থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে দেখা যায়, কক্সবাজারে ৩২টি প্রতিষ্ঠানকে সরকার ৩ হাজার ২৮৮ একর বনভূমি বরাদ্দ দিয়েছে।
জমি চেয়েছে সাংবাদিক হাউজিং সমবায় সমিতি
কক্সবাজার শহরের কলাতলী পুলিশ লাইন্সের সীমানা প্রাচীর লাগোয়া বিশাল পাহাড় কেটে চারতলা ভবন নির্মাণ করছেন খাইরুল আমিন নামে এক ব্যক্তি। এর ঠিক পূর্ব পাশে পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হয়েছে ইট ও টিনের স্থাপনা। এগুলো করছেন রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। ওই এলাকাতেই ৫ একর বনভূমি বরাদ্দ চেয়েছে ‘সাংবাদিক হাউজিং সমবায় সমিতি’। সরকার তাদের সেই বরাদ্দ চূড়ান্ত না করলেও এরই মধ্যে সেখানে টিলা কেটে নির্মাণ করা হয়েছে রাস্তা। ওই সাংবাদিক সমিতিকে জমি বরাদ্দে ভূমি মন্ত্রণালয় ‘ইতিবাচক’ বলেও জানা গেছে। সমিতির সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী বলেন, ‘জমিটি সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকার এখনও হস্তান্তর করেনি। তবে শোনা যাচ্ছে, ভূমিদস্যুরা সেখানে পাহাড় কেটে স্থাপনা করছে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি।’ পাহাড় কেটে আবাসন প্রকল্প করতে হবে কেন– এই প্রশ্নে কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী বলেন, ‘প্রস্তাবিত জমিটির সামান্য অংশ টিলা, বড় কোনো পাহাড় বা বনভূমি নয়। তাছাড়া, এটি সরকারি খাস খতিয়ানের জমি।’ এই এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি পানের বরজ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইফতেখার উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি পাহাড় কেটে পানের বরজ করতে সরকারি জমি ভাড়া দিয়েছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক ফাইজুল কবির বলেন, ‘অভিযানে গিয়ে পাহাড় কাটার প্রমাণ পেলেও জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারিনি। তবে এসব ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে।’
বন ধ্বংসে এগিয়ে সরকারি সংস্থা
কক্সবাজারে পাহাড় ও বনভূমি দখল নিয়ে একটি গবেষণা করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস)। ২০২২ সালে প্রকাশিত ‘কক্সবাজারে বনভূমির বিপন্নতা’ শীর্ষক তাদের ওই গবেষণায় দেখা গেছে, কক্সবাজারে বন ধ্বংসে এগিয়ে রয়েছে সরকারি সংস্থাগুলো। পাহাড় ইজারা নিতে তারাই আবেদন করছে। অনেকে অনুমোদন পাওয়ার আগেই স্থাপনা গড়ে তুলছে।
বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্প ও সরকারি সংস্থার কার্যালয় করার নামে কক্সবাজার বনভূমি শূন্য করা হচ্ছে। কীভাবে একটি জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা ধ্বংস হয়, তার বড় উদাহরণ হতে পারে কক্সবাজার। অথচ পাহাড়-বনভূমি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষাই হওয়ার কথা ছিল এখানকার মূল বিষয়।’ কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ‘পাহাড় একটি প্রাকৃতিক স্থাপনা। এগুলো দুর্যোগ থেকে মানুষকে বাঁচায়। অথচ আমরা উন্নয়ন করব বলে এগুলো ধ্বংস করে ফেলছি।’ গবেষণার মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করে সমন্বিত উদ্যোগে কক্সবাজারের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলম বলেন, ‘কক্সবাজারে যত উন্নয়ন হচ্ছে, সব কাজে বনের বালু ও মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। গাছ তো এখন তেমন নেই, তারপরও কাটা হচ্ছে পাহাড়। এগুলো মোকাবিলা করেই কাজ করতে হচ্ছে বনকর্মীদের।’ তাঁর মতে, বনভূমি রক্ষা করে কক্সবাজারে কোথায় কী হবে সে বিষয়ে একটি মাস্টারপ্ল্যান দরকার। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে একমত হতে হবে সবাইকে।
মিলেমিশে পাহাড় কাটা চট্টগ্রামেও
বেলতলী ঘোনায় আকবর শাহ হাউজিংয়ের মধ্যে বেশ কয়েকটি পাহাড়। সেগুলো কেটে তৈরি করা হচ্ছে রাস্তা। সড়কের কাজ করছেন সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম। ওই কাজ চলা অবস্থায় পাহাড় ধসে মারা যান এক শ্রমিক। আসে পরিবেশ অধিদপ্তর, মামলা হয়। অথচ নগরীর পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটিতে আছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। আছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও (চউক)। আবার পাহাড়ও কাটছে তারাই। চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমার সময়ে পাহাড় কেটে আবাসন প্রকল্প হয়নি, যা হয়েছে তা অনেক আগে। এখন প্রভাবশালীরা পাহাড়ে ঘর তুলে নিম্নবিত্তদের জন্য ফাঁদ তৈরি করে। কম টাকায় ভাড়া নিয়ে সেই ফাঁদে পা দেয় গরিবরা। এখানে বিদ্যুৎ থাকে। পানির লাইনও থাকে। এসব কারা কীভাবে আনে, তা খতিয়ে দেখা উচিত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের।’ কীভাবে গ্যাস-বিদ্যুতের লাইন আসে পাহাড়ে– এমন প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘এনজিওরাই পাহাড়ে বসতি স্থাপন করতে উৎসাহ দিচ্ছে নানাভাবে। এটি বন্ধ করতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে সমন্বিত পরিকল্পনা লাগবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকেও দায়িত্বশীল হতে হবে। পাহাড়ে নাগরিক সুবিধা গেলে পাহাড় কাটার পরিমাণ বাড়বে। বাড়বে ঝুঁকিপূর্ণ বসতিও।’
চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় সংগ্রাম পরিষদ ৩৪টি পাহাড় কেটে ৫৮৬ দশমিক ৬০ একর জায়গা দখল করে গড়ে তুলেছে ১৩ হাজার ৯০০ প্লট। আর আলী নগর সমবায় সমিতি লিমিটেড তিনটি পাহাড় কেটে ২৩৬ দশমিক ৩২ একর জায়গা দখল করে গড়ে তুলেছে প্রায় আড়াই হাজার প্লট। শুধু আবাসন নয়; মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজের নামেও পাহাড় কাটা হচ্ছে দেদার। ভূমি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জালালাবাদ মৌজায় তালিমুল কোরআন মাদ্রাসা বিএস ১ নং খতিয়ানের ৭০৩ নং দাগে ২ দশমিক ৬৩ একর, ৭০৯ নং দাগে দশমিক ২৪ একর এবং ৭১৬ নং দাগে ৩ দশমিক ৬৬ একর জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। চার দশকে ১২০ পাহাড় বিলুপ্ত চট্টগ্রামের ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের দাবি, গত চার দশকে চট্টগ্রাম নগরীর ১২০টি পাহাড় বিলুপ্ত হয়েছে। বেশিরভাগ পাহাড় কাটা হয় পাহাড়তলী, খুলশী, বায়েজিদ, লালখান বাজার, মতিঝরনা, ষোলশহর ও ফয়’স লেকে। ১৯৭৬ থেকে ৩২ বছরে চট্টগ্রাম নগর ও আশপাশের ৮৮টি পাহাড় সম্পূর্ণ এবং ৯৫টি আংশিক কেটে ফেলা হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আলিউর রহমান বলেন, ‘পাহাড় রক্ষার দায়িত্ব যাদের, তারাও পাহাড় কাটছে। ১৯৭৬ সালে নগরের পাঁচ থানা এলাকায় পাহাড় ছিল ৩২ দশমিক ৩৭ বর্গকিলোমিটার। ২০০৮ সালে তা কমে হয় ১৪ দশমিক ০২ বর্গকিলোমিটার। এ সময়ে ১৮ দশমিক ৩৪৪ বর্গকিলোমিটার পাহাড় কাটা হয়।’
রক্ষকই যখন ভক্ষক
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পাহাড় কেটে তৈরি করেছে লেক সিটি হাউজিং। দুই দশক আগে এ প্রকল্প তৈরি হলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের বাধায় প্লট এখনও বুঝে পাননি ক্রেতারা। এই আবাসিক এলাকার চারপাশে এখনও কাটা হচ্ছে পাহাড়। স্ট্যাম্পে কেনা-বেচা হচ্ছে প্লট। সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড়ঘেরা সরকারের ৬২৩ একর জায়গা এভাবেই হয়ে গেছে ভাগবাটোয়ারা। ‘বায়েজিদ লিংক রোডে’ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের ব্যানার ঝুলিয়ে কাটা হচ্ছে পাহাড়। এখানে সাংবাদিক, পুলিশ, ব্যাংকারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আছে। সমিতির নামে পাহাড় কেটে আবাসন তৈরির কাজ চলছে। ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগে একাধিক মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। সর্বশেষ মামলাটি হয় গত ৭ এপ্রিল। আকবর শাহ হাউজিংয়ের কাছে বেলতলী ঘোনায় পাহাড় কেটে দেয়াল তৈরির সময় মাটিচাপায় এক শ্রমিক নিহত হলে পরিবেশ অধিদপ্তর মামলা করে। সেই মামলায় কাউন্সিলর জসিমকে আসামি করা হয়।
শুধু কাউন্সিলর নন; চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও আছে পাহাড় কাটার অভিযোগ। ১৫টি পাহাড় কেটে ‘ফৌজদারহাট-বায়েজিদ বাইপাস’ নামে একটি সড়ক নির্মাণ করেছে তারা। এ জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর তাদের ১০ কোটি টাকা জরিমানা করে। বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোড করতে গিয়ে ১৫টি পাহাড় সাবাড় করেছে সরকারি এই সংস্থা। পুলিশের বিরুদ্ধেও আছে পাহাড় কাটার অভিযোগ। বায়েজিদ সড়কে এক ডজনের বেশি পুলিশ সদস্য পাহাড় কাটছেন বলে অভিযোগ আছে। চট্টগ্রামের পরিবেশ ও নাগরিক সংগঠন পিপলস ভয়েসের সভাপতি শরীফ চৌহান বলেন, ‘পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতির নেপথ্যে রয়েছেন কিছু রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধি। যাদের উচ্ছেদ করা হয়, তারা নিম্ন আয়ের লোক। কিন্তু দখলদারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
আইন বলছে, পাহাড় কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০ (সংশোধিত) অনুযায়ী, পাহাড় কাটা আমলযোগ্য অপরাধ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি, আধাসরকারি, সায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যক্তি পাহাড় কাটতে বা নিশ্চিহ্ন করতে পারেন না। যদি কেউ এ আইন অমান্য করেন, তবে তাঁকে অথবা ওই প্রতিষ্ঠানকে দুই বছর কারাদণ্ড অথবা ২ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। ফের একই অপরাধ করলে, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ১০ বছর কারাদণ্ড অথবা ১০ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হবে। এ ছাড়া সংবিধানের ১৮ক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার হিসেবে ‘রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন।’
সারোয়ার সুমন, চট্টগ্রাম ইব্রাহিম খলিল মামুন, কক্সবাজার