ব্রেন টিউমারের লক্ষণ ও করণীয়

0
165

যেকোনো বয়সেই ব্রেন টিউমার হতে পারে। ব্রেন টিউমার একটি অত্যন্ত জটিল ও সংবেদনশীল অঙ্গের টিউমার। তাই রোগটির চিকিৎসাপদ্ধতিও অনেক জটিল ও ক্ষেত্রবিশেষ অনেক ব্যয়বহুলও। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা করেও কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ করা যায় না।

আমরা জানি যে টিউমার হচ্ছে শরীরের যেকোনো জায়গায় বা অঙ্গে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এই টিউমার মস্তিষ্কের ভেতরে হলে সেটাকে আমরা ব্রেন টিউমার বলি। ব্রেন টিউমার দুই রকমের হতে পারে। বিনাইন বা নিরীহ টিউমার ও ম্যালিগন্যান্ট বা খারাপ ধরনের টিউমার।

কিছু ব্রেন টিউমারের মস্তিষ্ক থেকে উৎপত্তি, এগুলো হলো প্রাইমারি ব্রেন টিউমার। আবার কিছু ক্ষেত্রে শরীরের অন্য কোনো স্থানের টিউমার থেকে ছড়িয়ে ব্রেনে আসে। এটাকে সেকেন্ডারি বা মেটাস্টাটিক ব্রেন টিউমার বলা হয়।

কীভাবে বুঝবেন

ব্রেন টিউমারের লক্ষণ নানা ধরনের ও বিচিত্র হতে পারে। প্রধান বা স্বাভাবিক লক্ষণ হলো মাথাব্যথা। এই মাথাব্যথা রোগীর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তীব্র হয়। অর্থাৎ রোগী বিশ্রামে থাকলে মাথাব্যথা কম থাকে। আর কাজ করলে তীব্রতা বাড়ে। অনেক সময় ভোরের দিকে মাথাব্যথাটা বেশি হয়। পাশাপাশি রোগীর বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া এবং দৃষ্টিশক্তি ক্রমেই কমে যাওয়াকে টিউমারের লক্ষণ হিসেবে ধরা যায়। এ ছাড়া অনেক সময় খিঁচুনি হতে পারে অথবা শরীরের যেকোনো এক দিকের হাত বা পা দুর্বল বা অবশ হয়ে যেতে পারে। আবার তার মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে অর্থাৎ তার আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে।

কী করবেন

ওপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে যথাসম্ভব দ্রুত নিউরোমেডিসিন বা নিউরোসার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। রোগ নির্ণয়ে এসব পরীক্ষা সহায়ক—ব্রেনের সিটি স্ক্যান ও এমআরআই, স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা দেখার জন্য ইলেকট্রোএনকেফালোগ্রাফি বা ইইজি, স্নায়ুতন্ত্রের পরিবহনক্ষমতা বা নার্ভ কন্ডাকশন টেস্ট বা ইলেকট্রোমায়োগ্রাফি। তবে এমআরআই পদ্ধতি সবচেয়ে আধুনিক ও ব্রেন টিউমার নির্ণয়ের জন্য উন্নত পরীক্ষা।

ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা অত্যন্ত জটিল। চিকিৎসা নির্ভর করে টিউমারের ধরন, তীব্রতা, আকার ও অবস্থানের ওপর। সার্জারি, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি এর মূল চিকিৎসা। লক্ষণের ওপর ভিত্তি করে কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। যেমন খিঁচুনি বন্ধ করার ও বমির ওষুধ ইত্যাদি। ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুলও। সাধারণভাবে প্রশ্ন আসে, বাংলাদেশে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসাব্যবস্থাটা কেমন? দেশের বড় শহরগুলোয় যেসব হাসপাতাল আছে, সেখানে সফলভাবে এর চিকিৎসা করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশে যেকোনো ধরনের ব্রেন টিউমারের অস্ত্রোপচার করা সম্ভব। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে অনেক কম খরচে এ রোগের চিকিৎসা করা যায়।

  • অধ্যাপক ডা. হারাধন দেবনাথ, নিউরোসার্জারি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.