‘পরিবার থেকে পড়াশোনার ব্যাপারে কখনও চাপ পাইনি। তবু সময়ের অপচয় না করে লেখাপড়ায় মন দিয়েছি। আম্মুর ইচ্ছা আমি ডাক্তার হই। মেডিকেলেও চান্স পেয়েছি। তবে ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার।’
এভাবেই নিজের স্বপ্নের কথা বলছিলেন মেধাবী শিক্ষার্থী শাফিন আহমেদ। তিনি এবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় ১ম হয়েছেন। শাফিন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের পুটিমারী গ্রামের বিমানবাহিনীর সাবেক সদস্য সেকেন্দার আলী ও সুকরিয়া পারভীনের ছেলে। তবে তাঁর পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়।
গত সোমবার বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। বুয়েট ছাড়াও শাফিন মেডিকেল কলেজে মেধা তালিকায় ২৪৬তম হন। তিনি সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ভর্তিও হয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ইউনিটে ১০৩তম, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে ১৪তম এবং মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে ১৩তম স্থান অধিকার করেছেন।
এত জায়গায় পড়ার সুযোগ পেয়েছেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোথায় পড়বেন শাফিন? তাঁর উত্তর– ‘বুয়েটেই পড়ার সিদ্ধান্ত নেব।’ তাঁর এই সাফল্যের পেছনে কাদের অবদান রয়েছে জানতে চাইলে বলেন, ‘সবচেয়ে বড় অবদান মা-বাবার। বড় ভাইয়েরও অবদান অনেক, কেননা যে কোনো সমস্যায় আমি ভাইয়ের পরামর্শ নিতাম। আমার ভাই বর্তমানে বুয়েটে পড়ছেন। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’
জানা যায়, শাফিন ঢাকার রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে ২০২০ সালে বিজ্ঞান শাখায় জিপিএ-৫ নিয়ে এসএসসি ও ২০২২-এ একই প্রতিষ্ঠান থেকে বিজ্ঞান শাখায় জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন।
‘বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় শাফিন ১ম হয়েছে। এটা দেখে আমরা অনেক খুশি।’ ছেলের এমন অর্জনে এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানালেন বাবা সেকেন্দার আলী।
শাফিনের মা সুকরিয়া পারভীন বলেন, তাঁরা ২৪ বছর ধরে ঢাকায় বসবাস করছেন। তাঁর ছোট ছেলে শাফিনের পড়াশোনা, বেড়ে ওঠা ঢাকাতেই। সে ছোট থেকেই যে কোনো কাজ মনোযোগ দিয়ে করে। আমার দুই ছেলে। বড় ছেলে সাইদ আহমেদও বুয়েটে পড়ছে। তাঁদের জন্য সবাই দোয়া করবেন।’
শাফিনের চাচাত ভাই মাহমুদ মিলন কুড়িগ্রামে থাকেন। তিনি বলেন, শাফিনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকা শহরে হলেও তাঁর এমন অর্জন কুড়িগ্রাম জেলার জন্য গৌরবের।
প্রসঙ্গত, এ বছরই বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় কুড়িগ্রামের মেয়ে সিজরাত জাহান প্রকৃতি ১ম স্থান অধিকার করেন।