দীর্ঘ ১০ বছর পর রাজধানীতে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে শনিবার সমাবেশ করতে চাইলেও, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তাদেরকে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলায়তনে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দিয়েছে। তবে পুলিশ বলেছে, মিছিল করা যাবে না। সড়কে যান চলাচলও বন্ধ করা যাবে না।
শুক্রবার রাত ১২ টার দিকে এ অনুমতি দেওয়া হয়। এর আগে এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, জামায়াতকে সড়কে নয় বদ্ধ মিলনায়তনে সমাবেশে করার অনুমতি দেওয়া যায় কিনা ভাবা হচ্ছে।
অনুমতির আবেদন করা জামায়াতের প্রতিনিধি দলের প্রধান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান বলেন, পুলিশের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলায়তনে সমাবেশ করবে জামায়াত। পুলিশই ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলায়তনে সমাবেশ করার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
সমাবেশের আয়োজক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতও সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সাইফুর রহমান জানান, ডিএমপি কমিশনারের বিশেষ সহকারী উপকমিশনার সৈয়দ মামুন মোস্তফা জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। শনিবার লিখিত অনুমতি দেওয়া হবে। তবে মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
সবশেষ ২০১৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মতিঝিলে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছিল জামায়াত। এরপর থেকে ঝটিকা মিছিলে সীমাবদ্ধ জামায়াতের কর্মসূচি।
দলীয় আমির ডা. শফিকুর রহমানের মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ নানা দাবিতে গত সোমবার সমাবেশ করতে চেয়েছিল জামায়াত। গত ২৯ মে এর অনুমতি চাইতে গিয়ে ডিএমপির ফটক থেকে আটক হন দলটির চার প্রতিনিধি। যদিও ঘণ্টা তিনেক পর তাদের ছেড়ে দিয়ে পুলিশ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, জনদুর্ভোগ এড়াতে কর্মদিবসে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।
পুলিশের এ মনোভাবে আদালতের রায়ে নিবন্ধন হারানো জামায়াত কর্মসূচি পিছিয়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবারে সমাবেশ করতে চেয়ে গত মঙ্গলবার ফের আবেদন করে। বায়তুল মোকাররমের সামনে সমাবেশ করে, সেখান থেকে কাকরাইল পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিলের অনুমতি চায়।
২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর থেকে কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে জামায়াত। সরকারের মন্ত্রীরা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা সময়ের ব্যাপার বললেও, গত ডিসেম্বর থেকে কর্মসূচি পালনে ফের অনুমতি চাইতে শুরু করেছে দলটি। দলটির সমাবেশ করতে চাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল। তবে জামায়াত সংবিধানে বরাত দিয়ে বলছে, সমাবেশের অনুমতি পেতে নিবন্ধন জরুরি নয়। সভা-সমাবেশের অনুমতি না দিলে মার্কিন ভিসা অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা হিসেবে গণ্য হতে পারে।