যুক্তরাষ্ট্রে দুজনের সামনে দুরকম বাধা

0
144
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এখনো ১৮ মাস বাকি। এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন বাইডেন ও ট্রাম্প। এখন পর্যন্ত যা আলামত, তাতে চূড়ান্ত লড়াই এই দুজনের মধ্যে হবে বলে ধারণা। তবে একজনের সামনে বাধা বয়স, অন্যজনের আইনি ঝামেলা।

যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এখনো ১৮ মাস বাকি। তবে ইতিমধ্যে নির্বাচনী দৌড় পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। মাঠে একে একে প্রার্থীরা জড়ো হওয়া শুরু করেছেন। কেউ কেউ মাঠে নামব নামব করছেন। এরই মধ্যে যে দুজন কাড়া–নাকাড়া বাজিয়ে নির্বাচনী মাঠে অবস্থান নিয়েছেন, তাঁদের একজন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যাঁর বয়স ৮০। অন্যজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যাঁর বর্তমান বয়স ৭৬।

সব ধরনের আলামত থেকেই স্পষ্ট, শেষ পর্যন্ত হয়তো এই দুই বুড়োই দেশের দুই প্রধান দল যথাক্রমে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন। তারপরও অবস্থা যে বদলাবে না, সেটা হলফ করা যাবে না। আমি শুধু আলামতের কথা বলছি। এই দুজনের বাইরে যারা নামছি-নামব বলছেন, তাঁরা বাছাই পর্বে ধোপে টিকবেন বলে অন্তত এখনকার পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে না। তবে নির্বাচনী রাজনীতিতে ১৮ মাস দীর্ঘ সময়, ফলে অবস্থা তো বদলাতেই পারে।

বাইডেনের বয়স

সব মহলেই, এমনকি ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতরেও বাইডেনের বয়স নিয়ে কথা উঠেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে নির্বাচন হলে বাইডেনের বয়স দাঁড়াবে ৮২ বছর। যদি পুরো চার বছর তিনি শাসন করার সুযোগ পান, তাহলে পরবর্তী নির্বাচনের আগে তাঁর বয়স দাঁড়াবে ৮৬ বছর। এখনই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রবীণ প্রেসিডেন্ট। ছয় বছর পরের হিসাব না হয় ছেড়েই দিলাম।

গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে দায়িত্বরত সাংবাদিকদের সংগঠন হোয়াইট হাউস করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক নৈশভোজ ছিল। ভোজের আগে যথারীতি বক্তারা রাজনীতিকদের নিয়ে হাসি–ঠাট্টা করলেন। বক্তাদের একজন ছিলেন বাইডেন। তিনি নিজেও নিজের বয়স নিয়ে টিপ্পনী কাটা থেকে বিরত ছিলেন না। প্রবল হাস্যরোলের মধ্যে তিনি বললেন, ‘আমার বয়স নিয়ে কথা হবে, এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। কিন্তু বুড়ো তো একা আমি নই, ট্রাম্পও। কই, তাঁর কথা নিয়ে তো নিউইয়র্ক টাইমস–এ কোনো রা নেই।’

৮০ ও ৭৬
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বয়স এখন ৮০ বছর। আগামী নির্বাচনে জিতলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়সী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। আর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বয়স এখন ৭৬ বছর

বাইডেনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বুড়ো প্রেসিডেন্ট ছিলেন রোনাল্ড রিগ্যান। ১৯৮৪ সালের নির্বাচনে তাঁর প্রতিপক্ষ ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির ৫৬ বছর বয়স্ক ওয়াল্টার মন্ডেল। সেবারও রিগ্যানের বয়স নিয়ে তর্কবিতর্ক কম হয়নি। টিভি বিতর্কে বয়স নিয়ে কথা ওঠার আগেই রিগ্যান প্রতিপক্ষ মন্ডেলের দিকে তাকিয়ে কিঞ্চিৎ পরিহাসের সঙ্গে বললেন, ‘এই নির্বাচনী প্রচারে আমি বয়স নিয়ে কোনো বাদানুবাদ করব না। একই সঙ্গে আমি আমার প্রতিপক্ষের অল্প বয়স ও অনভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগাব না।’

ব্যাস, ওই এক কথাতেই বয়স নিয়ে সব বিতর্কের ইতি টানলেন রিগ্যান।

গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের নৈশভোজে অনেকটা সে ভাষা অনুকরণ করে বাইডেন বলেন, ‘কেউ কেউ বলবেন, আমি অতি প্রাচীন। আমি বলি, না, আমি প্রাজ্ঞ। অথবা (সিএনএনের সদ্য চাকরিচ্যুত টক শো পরিচালক) ডন লেমনের কথায়, আমি এখন একদম টসটসে, ‘প্রাইম টাইমে রয়েছি।’

ট্রাম্পের আইনি ঝামেলা

বাইডেনের জন্য বয়স যদি একটি অব্যাহত বিতর্ক হয়, তো ট্রাম্পের জন্য গলার ফাঁস তাঁর আইনি ঝামেলা। আর্থিক অনিয়মের জন্য তিনি ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিক ৩৪ দফা অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। গত নির্বাচনের ফলাফল বদলানোর চেষ্টা, ৬ জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিলে হামলা ও হোয়াইট হাউস থেকে সরকারি নথি হাতানোর অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা ঝুলছে। এই তিন মামলাকে তিনি হয়তো ‘রাজনৈতিক  উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে নিজের সমর্থকদের বুঝ দিতে পারবেন। বস্তুত, তাঁর বিরুদ্ধে এসব গুরুতর অভিযোগ সত্ত্বেও নিজ সমর্থকদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা বিন্দুমাত্র কমেনি; বরং বেড়েছে।

ক্যারল জিনের ধর্ষণ মামলায় গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের আদালতে জুরিবোর্ডের সামনে জবানবন্দী দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু ক্যারল নন, এমন অন্তত ২৬ নারী তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন। চান বা না চান, এই মামলার কারণে ট্রাম্পের গায়ে এখন ‘ধর্ষক’ তকমাটি জুটে গেছে

তবে যে মামলাটিকে ‘ফালতু’ বলে উড়িয়ে দেওয়া সহজ হবে না, সেটি হচ্ছে ক্যারল জিন নামের এক নারীর উত্থাপিত ধর্ষণের অভিযোগ। দীর্ঘ বিলম্বের পর এই অভিযোগ নিয়ে ম্যানহাটানে মামলা শুরু হয়েছে। শুধু এক ক্যারল নয়, অন্তত ২৬ নারী তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন। ৩০ বছর আগের ঘটনা, কিন্তু এই অভিযোগ তোলায় কোনো আইনি ঝামেলা নেই। নিউইয়র্কে নতুন আইন গৃহীত হয়েছে, যার অধীনে বয়ঃপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও পুরোনো যৌন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। সর্বশেষ ম্যানহাটানের আদালতে জুরিবোর্ডের সামনে ট্রাম্প বলেন, তিনি ধর্ষণের অভিযোগকারী নারী ক্যারলকে চিনতে ভুল করেছিলেন। ওই ধর্ষণের মামলায় জবানবন্দি নেওয়ার সময় তাঁকে ক্যারলের একটি ছবি দেখানো হয়। সেটি দেখে ট্রাম্প বলেন, ছবিটি তাঁর সাবেক স্ত্রী মারলা ম্যাপলসের।

ক্যারল ছাড়া আরও দুই নারী এই মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন। ২০১৬ সালে ফাঁস হওয়া ‘এক্সেস হলিউড’ ভিডিও টেপরেকর্ডকে এই মামলায় প্রমাণযোগ্য নথি হিসেবে উপস্থিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই ভিডিও টেপে ট্রাম্প নিজেই বলেন, মেয়েদের দেখলে তাঁর মাথায় বায়ু চড়ে। ট্রাম্পের ভাষায়, যেহেতু তিনি একজন তারকা, ফলে যখন-তখন যেকোনো মেয়ের ওপর হামলে পড়তে, তাঁদের স্পর্শকাতর অঙ্গে হাত দিতে তাঁর কোনো সমস্যা হয় না।

এক মামলায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের আদালতে  যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
এক মামলায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের আদালতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পফাইল ছবি: এএফপি

‘ধর্ষক’ ট্রাম্প

চান বা না চান, এই মামলার কারণে ট্রাম্পের গায়ে এখন ‘ধর্ষক’ তকমাটি জুটে গেছে। তাঁর সমর্থকেরা বলছেন, আর্থিক ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য এসব নারী মিথ্যা মামলা করেছেন। কেউ কেউ এমন যুক্তিও দেখিয়েছেন, ট্রাম্প তো একজন প্লেবয়। অতএব এটি আর এমন কি নতুন বিষয়।

এই দুই খোঁড়া যুক্তি দিয়ে ট্রাম্প নিষ্কৃতি পাবেন বলে মনে হচ্ছে না। যেহেতু তিনি প্লেবয়, অতএব তাঁর ক্ষেত্রে ধর্ষণ বা যৌন হয়রানি জায়েজ—এমন যুক্তি একেবারে হাস্যকর। ২৬ নারী মিথ্যা বলছেন, আর ট্রাম্প একা সত্যি বলছেন, সেটিও কোনো বিশ্বাসযোগ্য কথা হতে পারে না। বিশেষত এসব কথা এখন সবাই মোটামুটি বিশ্বাস করেন, ট্রাম্প হামেশা মিথ্যা বলে থাকেন। ওয়াশিংটন পোস্টের হিসাব অনুসারে, তাঁর চার বছরের শাসনামলে ট্রাম্প মোট ১৬ হাজার ২৪১টি সরাসরি অসত্য বা বিভ্রান্তিকর কথা বলেছেন। (দেখুন: https://wapo.st/3LFJhjI)।

নির্বাচকেরা একজন প্রমাণিত মিথ্যাবাদীকে বিশ্বাস করবেন, নাকি ২৬ নারীর কথা বিশ্বাস করবেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুব কঠিন নয়। লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকার ভাষ্যকার লুসিয়া গ্রেভস মন্তব্য করেন, সারা জীবন  মানুষটি মেয়েদের যেমন খুশি ব্যবহার করেছেন, তাঁদের লাঞ্ছিত করেছেন। এখন তাঁকে সেই অপরাধের মাশুল গুনতে হবে। এই বিপদের কথা ট্রাম্প নিজেও জানেন।

নিউইয়র্ক টাইমস–এর সাংবাদিক ম্যাগি হ্যাবারম্যান লিখেছেন, কোনটি তাঁর জন্য সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প এক শব্দে বলেন, ‘মেয়েরা’।
নির্বাচনী প্রচারের পাশাপাশি ট্রাম্পের ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার বিচারকাজ চলবে। যতবার শুনানি হবে, ততবার বলা হবে—ট্রাম্প একজন ধর্ষক। রিপাবলিকান বা ডেমোক্র্যাট, তাঁরা যে দলেরই সমর্থক হোন না কেন, খুব আনন্দের সঙ্গে একজন ‘ধর্ষক’কে ভোট দেবেন, এ কথা ভাবার কোনো কারণ নেই।

গর্ভপাত বিতর্ক

এসবের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে গর্ভপাত নিয়ে বিতর্ক। অতি রক্ষণশীল রিপাবলিকানদের চাপে ও চলতি সুপ্রিম কোর্টের মদদে রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত অঙ্গরাজ্যে গর্ভপাতের অধিকারকে কেড়ে নেওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। অথচ জনমত জরিপ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৭০ শতাংশ মানুষ নারীর গর্ভপাতের অধিকারের প্রতি সমর্থন করেন।

বিষয়টি তাঁর সবচেয়ে বড় তুরুপের তাস, সে কথা মাথায় রেখে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর প্রতিটি ভাষণে এই যুক্তি দেখাচ্ছেন, মুক্তি ও নাগরিক অধিকারের বিরুদ্ধে ট্রাম্প ও তাঁর রিপাবলিকান সমর্থকেরা যে অভিযান শুরু করেছেন, তা ঠেকানোর একমাত্র উপায় আগামী নির্বাচনে তাঁকে ও অন্যান্য ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে নির্বাচিত করা।

আগামী বছর মার্কিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে
আগামী বছর মার্কিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবেফাইল ছবি: রয়টার্স

ইলেকটোরাল ম্যাপ

বাইডেনের পক্ষে ও ট্রাম্পের বিপক্ষে আরেকটি বিষয় কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে। আর তা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইলেকটোরাল ম্যাপ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট ভোটে যে–ই জিতুক না কেন, কমপক্ষে ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট না পেলে হোয়াইট হাউসে পা রাখা কারও পক্ষে সম্ভব হবে না। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের তুলনায় হিলারি ক্লিনটন প্রায় ৩০ লাখ ভোট বেশি পেয়েছিলেন, কিন্তু ওই ইলেকটোরাল কলেজের গ্যাঁড়াকলে তাঁর ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি।

ইলেকটোরাল মানচিত্র নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা হিসাব করে বলছেন, এখন পর্যন্ত রাজনীতির যে মাঠ, তাতে বাইডেনের কিছু বাড়তি সুবিধা আছে। এ দেশের নির্বাচনী মানচিত্র অনেক আগে থেকেই লাল ও নীল অর্থাৎ রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক—এই দুই ভাগে বিভক্ত। সে কারণে আগেভাগেই বলে দেওয়া সম্ভব, কোন অঙ্গরাজ্যে কে জয়ী হতে পারেন। যেমন নিউইয়র্ক বা ক্যালিফোর্নিয়ায় ডেমোক্রেটিক এবং ফ্লোরিডা ও টেক্সাসে রিপাবলিকান প্রার্থী জয়ী হবেন, এটা অনেকটা নিশ্চিত করে বলা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রে অঙ্গরাজ্য পর্যায়ে মোট ভোটের হিসাবে যে প্রার্থী এগিয়ে থাকেন, ইলেকটোরাল ভোটের সবই তাঁর বাক্সে পড়ে। ফলে ২০১৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটে পিছিয়ে থেকেও ইলেকটোরাল ভোটে জিতে হোয়াইট হাউসে পা রাখলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত কয়েক নির্বাচনের গতিপ্রকৃতি অনুসরণ করে এখনই বলা সম্ভব, কোন অঙ্গরাজ্যে কে জয়ী হতে পারেন। লড়াই যা হওয়ার তা হবে হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ হিসেবে পরিচিত অঙ্গরাজ্যে। এসব রাজ্য এখনো পুরোপুরি লাল বা নীল হয়ে ওঠেনি।

এ দেশের নির্বাচনী মানচিত্র অনেক আগে থেকেই লাল ও নীল অর্থাৎ রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক—এই দুই ভাগে বিভক্ত। সে কারণে আগেভাগেই বলে দেওয়া সম্ভব, কোন অঙ্গরাজ্যে কে জয়ী হতে পারেন।

২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট ৪টি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলাফল দেখে অনুমান করা হচ্ছে, মাত্র তিনটি অঙ্গরাজ্য—উইসকনসিন, জর্জিয়া ও অ্যারিজোনা ২০২৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করবে। এই তিন রাজ্যের মাত্র একটিতে বিজয়ী হলেই বাইডেনের পক্ষে ২৭০টির বেশি ইলেক্টোরাল ভোট ঝুলিতে ভরা সম্ভব। অন্যদিকে জিততে হলে ট্রাম্পকে লাল হিসেবে চিহ্নিত রাজ্যগুলো ছাড়াও এই তিনটি রাজ্যের প্রতিটিতে জয়ী হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস–এর হিসাব অনুসারে, ট্রাম্পের জন্য এই তিনটি রাজ্যে জয় তুলে নেওয়া প্রায় দুঃসাধ্য একটি কর্ম।

এই নির্বাচনে ট্রাম্প নিজেকে সাধারণ মার্কিন নাগরিকদের কণ্ঠস্বর হিসেবে দাবি করছেন। ক্যাপিটাল হিলের দাঙ্গায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাইডেন প্রশাসনের হাতে যাঁরা নিগৃহীত হয়েছেন, ‘আমি হচ্ছি তাঁদের প্রতিশোধ’। অন্য কথায়, এই নির্বাচনের কেন্দ্রীয় প্রশ্ন ট্রাম্প নিজে। অন্যদিকে বাইডেন নিজেকে দাবি করেন, তিনি হলেন মার্কিন নাগরিকদের অব্যাহত মুক্তি ও নাগরিক অধিকারের রক্ষাকবচ।
২০২৪ সালের নির্বাচনে এ দুজনের কাকে বেছে নেবেন আমেরিকার মানুষ?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.