গ্রীষ্মকাল মানেই রসালো ফলের সমাহার। এর মধ্যে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু অন্যতম। এই প্রতিটি ফলের স্বাদই অনন্য। তবে এসব ‘মিষ্টি’ফল নিয়ে ডায়াবেটিস রোগীদের মনে একাধিক প্রশ্ন রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস এমন এক রোগ যা হলে অনেক খাবারই খাওয়া যায় না। এমন অনেক খাবারই আছে এই রোগে আক্রান্তের শরীরে বিষ হিসাবে কাজ করে। এই কারণেই ডায়াবেটিস রোগীদের কিছু খাবার থেকে দূরে থাকতে বলা হয়।
গ্রীষ্মের অন্যতম জনপ্রিয় ফল কাঁঠাল। এই ফলের পুষ্টিগুণ ও এই ফলটি খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঠিক কিনা তা নিয়ে গণমাধ্যম ‘এই সময়ে’র সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতীয় পুষ্টিবিদ কোয়েল পাল চৌধুরী।
এই পুষ্টিবিদ বলেন, গরমের যে কোনও ফলই পুষ্টিগুণে ভরপুর। এই তালিকায় কাঁঠালের নাম উপরের দিকেই আসে। তার কথায়, কাঁঠালে উচ্চ পরিমাণে কার্বেহাইড্রেট রয়েছে। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ফাইবার আছে এই খাবারে। এ কারণে এই ফল খেলে শরীরের বিভিন্ন উপকার হয়। এমনকী কিছু রোগও থাকে দূরে। এ কারণে মাঝেমাঝে এই ফল খাওয়া উচিত। এটি শরীরের জন্য উপকারী হয়।
কোয়েল পাল চৌধুরীর মতে, কিছু শারীরিক সমস্যা কাটাতে দারুণ কাজ করে কাঁঠাল। যেমন-
১. এতে থাকা হাই পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে পারে
২. প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় পেটের সমস্যা কমায় ও হজমে সাহায্য করে
৩. এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তনালীর রিল্যাক্সেশনে বিশেষ ভূমিকা নেয়
৪. কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এই ভিটামিন ইমিউনিটি বাড়ায় এবং দ্রুত ক্ষত সারায়।
ডায়াবেটিস থাকলে কি কাঁঠাল খাওয়া যায়?
পুষ্টিবিদ পায়েল চৌধুরীর মতে, কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এই কার্বহাইড্রেট ভেঙে সরাসরি পরিণত হয় সুগারে। এর থেকে শরীরে দ্রুত সুগার লেভেল বেড়ে যায়। এ কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের কাঁঠাল খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। তবে একান্তই যদি ইচ্ছে হয়,, তাহলে এক-দুটি কাঁঠালের কোয়া মুখে দিতে পারেন। এতে তেমন অসুবিধা হবে না। তবে সেটা ঘন ঘন না খাওয়াই ভালো।
সুস্থ ব্যক্তিরা সহজেই খেতে পারেন
ডায়াবেটিস না থাকলে কাঁঠাল নিয়ে তেমন কোনো বিধিনিষেধ নেই। সুস্থ ব্যক্তিরা অনায়াসে এই ফল খেতে পারেন। তবে খুব বেশি খাওয়া ঠিক নয়। বেশি খেলে হঠাৎ করেই রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া এই ফলে থাকা অতিরিক্ত ক্যালোরি ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
ডায়াবেটিসে কাঁঠালের বীজ মানা নেই
পুষ্টিবিদ কোয়েল পাল চৌধুরী জানান, কাঁঠালের বীজ অত্যন্ত উপকারী খাদ্য। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। এই ফাইবার রক্তে থাকা কোলেস্টেরলের পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে। এমনকী পেটের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে এই বীজ। কাঁঠালের বীজ খেলে খাবার দ্রুতগতিতে হজম হয়। তাই কোনও ডায়াবেটিস রোগী চাইলে কাঁঠালের বীজের তরকারি রান্না করে কিংবা এমনিতেই এই বীজ খেতে পারেন। এতে কোনও সমস্যা নেই।