বিভিন্ন দেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ যাচাইয়ে নতুন করে প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্যোগ নিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ২০২১ সালে ‘ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট’ প্রকাশ বন্ধ ঘোষণার পর এ নিয়ে আর কোনো প্রতিবেদন তৈরি করেনি সংস্থাটি। এর পরিবর্তে আগামী বছর থেকে ‘বিজনেস রেডি রিপোর্ট’ প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। প্রথম প্রতিবেদনটিতে ৫৪টি দেশের ব্যবসার পরিবেশ মূল্যায়ন করা হবে। পর্যায়ক্রমে বিজনেস রেডি রিপোর্টে স্থান পাবে ১৮০টি দেশ।
গত সোমবার সংস্থাটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বিজনেস রেডি প্রজেক্টের আওতায় নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। এটি বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করবে। সোমবার এ সম্পর্কিত ম্যানুয়াল, গাইড ও পদ্ধতি প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ডুয়িং বিজনেস রিপাের্টের প্রকাশনা বন্ধের ঘোষণা দেয় বিশ্বব্যাংক। বিভিন্ন দেশের ব্যবসার সূচক সম্পর্কিত এই প্রতিবেদন তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের পর এ সিদ্ধান্ত জানায় সংস্থাটি। এর আগে ২০২০ সালের ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর পরবর্তী প্রতিবেদন প্রকাশ স্থগিত করা হয়।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের তদন্তে উঠে আসা নানা দিক উল্লেখ করা হয় সিএনএনের এক প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, ২০১৮ ও ২০২০ সালের ডুয়িং বিজনেস রিপোর্টে চীন ও সৌদি আরবের র্যাংকিং এগিয়ে নিতে প্রতিবেদন তৈরির সঙ্গে সংশ্নিষ্টদের ‘অনৈতিক চাপ’ দিয়েছিলেন বিশ্বব্যাংকের তৎকালীন শীর্ষ কর্মকর্তারা।
২০১৮ সালে চীন প্রথমে যে অবস্থানে ছিল, পরে তার থেকে আরও সাত ধাপ এগিয়ে যায়। এই অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে বিশ্বব্যাংকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম এবং সিইও ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ২০২০ সালের প্রতিবেদনে সৌদি আরবের র্যাংকিং এগিয়ে নেওয়ার পেছনে নাম আসে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন ও বেসরকারি খাতবিষয়ক সাবেক চিফ ইকোনমিস্ট সিমিয়ন জনকোভের। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের ডুয়িং বিজনেস রিপোর্টে অসংগতির প্রথম অভিযোগ পাওয়া যায় ২০১৭ সালে। ২০১৪ সালের প্রতিবেদনে চিলির অবস্থান ছিল ৩৪তম। ২০১৭ সালে তা হয় ৫৫তম। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন চিলির প্রেসিডেন্ট ও সরকারি কর্মকর্তারা।